প্রতিদিন মাছ খেলে কি হয় - রুই মাছের উপকারিতা ও অপকারিতা

 

মাছ বাঙ্গালীদের প্রিয় খাবার। । মাছ খাবার মানুষ হিসেবে বাঙ্গালীদের বেশ সুনাম রয়েছে। যা ফলে বাংলায় একটি প্রবাদ বাক্য প্রচলিত রয়েছে মাছে ভাতে বাঙালি। সামুদ্রিক মাছে রয়েছে ওমেগা-৩ নামক ফ্যাটি এসিড। যা হৃদ যন্ত্রের জন্য উপকারী এ ফ্যাটি এসিড হৃদরোগ প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। 

প্রতিদিন মাছ খেলে কি হয় - রুই মাছের উপকারিতা ও অপকারিতা

এছাড়াও আরও মাসের মধ্যে রয়েছে নানা রকম উপকারিতা। এ সব ধরনের মাছের মধ্যে কি কি উপকারিতা রয়েছে এবং প্রতিদিন মাছ খাওয়া উচিত কিনা সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। আপনি যদি মাছের উপকারিতা সম্পর্কে সঠিক ধারণা লাভ করতে চান, তাহলে আমাদের এই পোস্টটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন। 

পোস্ট সূচীপত্রঃ প্রতিদিন মাছ খেলে কি হয় - রুই মাছের উপকারিতা ও অপকারিতা 

    সামুদ্রিক মাছ খাওয়ার উপকারিতা 

    সামুদ্রিক মাছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন-এ এবং ভিটামিন-ডি পাওয়া যায়, যা অনেক জটিল রোগ নিরাময় করতে পারে। সামুদ্রিক মাছের স্বাস্থ্যকর দিক হলো এটি খুব কম ক্যালরিযুক্ত খাবার। মাছের প্রজাতি ভিন্ন হিসেবে মাছের স্বাদ ভিন্ন হয়। কিন্তু পুষ্টিগুণ একই থাকে। আসুন জেনে নেই সামুদ্রিক মাছে কি কি উপকারিতা পাওয়া যায়- 

    ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণঃ ডায়াবেটিস রোগীরা খাদ্য তালিকায় সামুদ্রিক মাছ রাখতে পারেন। এতে করে তাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে। সামুদ্রিক মাছে আয়োডিন, সেলেনিয়াম, জিংক এবং পটাশিয়াম সহ অন্যান্য পুষ্টিকর উপাদান পাওয়া যায়। আর থাইরয়েড গ্রন্থির জন্য আয়োডিন অধিক কার্যকারী। 

    হৃদরোগ দূর করতে সহায়তা করেঃ সামুদ্রিক মাছে রয়েছে ওমেগা ৩ নামক এক ধরনের ফ্যাটি অ্যাসিড। যা হৃদযন্ত্রের জন্য অনেক কার্যকারী। এ ফ্যাটি এসিড হৃদরোগ প্রতিরোধ করে।  

    মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ নিউরোলজিস্টদের মতে শরীরে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের মাত্রা বাড়তে থাকলে, ব্রেনের বিশেষ কিছু অংশের ক্ষমতা এতটাই বৃদ্ধি পায় যে ডিমেনশিয়া বা অ্যালঝাইমারের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়। 

    রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ সামুদ্রিক মাছ মানুষের দেহের প্রয়োজনীয় পুষ্টি চাহিদা মিটিয়ে নানা রোগ থেকে রক্ষা করে। সামুদ্রিক মাছের জিংক ও আয়োডিন রয়েছে। জিংক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং আয়োডিন গলগন্ড রোগ প্রতিরোধ করে। 

    আরো পড়ুনঃ রাতে আপেল খেলে কি হয় 

    দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করেঃ সামগ্রিক মাসে অধিক পরিমাণে ওমেগা তিন ফ্যাটি অ্যাসিড এবং আয়োডিন থাকে। ওমেগা৩ ফ্যাটি এসিড, রেটিনার ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং দৃষ্টি শক্তিকে বাড়িয়ে দেয়। 

    কোলেস্টর এর মাত্রা ঠিক রাখেঃ অধিকাংশ সামুদ্রিক মা আছে ভিটামিন এ ও ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। যা মানুষের দেহের কোলেস্টরের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে। এজন্য হৃদরোগে আক্রান্ত ও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য সামুদ্রিক মাছ বেশ উপকারী। 

    ব্যথা দূর করেঃ আমাদের শরীরে নানা রকম ব্যাথা হয়, কারো হাঁটুর ব্যথা, কারো পিঠের ব্যথা, কারো পায়ের ব্যথা এ ব্যথাগুলো দূর করতে বা নিয়ন্ত্রণ করতে সামুদ্রিক মাছ বেশ কার্যকারী। 

    চুল ও ত্বকের যত্ন যত্নেঃ প্রোটিনের উৎস হিসেবে বিভিন্ন ধরনের সামুদ্রিক মাছ বেশ কার্যকারী। চুল-গঠনের মূল উপাদান হলো প্রোটিন। চুলের গঠন সুন্দর এবং চুল পড়া প্রতিরোধে সামুদ্রিক মাছ বেশ কার্যকারী। এছাড়াও সামুদ্রিক মাছের থাকা ওমেগা৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ত্বকের জন্য অনেক উপকারী। 

    ডিপ্রেশন দূর করতেঃ ডিপ্রেশন খুব সাধারন একটি মানসিক রোগ। ডিপ্রেশনের রোগীদের মন মেজাজ খারাপ থাকে, কখন কি করে নিজেই জানেনা। যারা নিয়মিত সামুদ্রিক মাছ খায় তাদের শরীর সুস্থ থাকে এবং বিশদগ্রস্ত অনুভব করে না, মন মরা দূর হয়ে যায়। 

    সামুদ্রিক মাছের তালিকা 

    বাংলাদেশের অনন্য দু’টি উপকূলীয় ও সামুদ্রিক ইকোসিস্টেম হচ্ছে সুন্দরবন ও সেন্টমার্টিন দ্বীপ। এই সুন্দরবন ম্যানগ্রোভ অঞ্চলে ও নিকটবর্তী সমুদ্র এলাকায় ২৭১ প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়। যাদের আবাসস্থল সমুদ্রিক লোনা পানি। অন্য দিকে, সেন্টমার্টিন দ্বীপে ২০৪ প্রজাতি মাছ শনাক্ত করা হয়েছে। আসুন আমরা সামুদ্রিক মাছ গুলোর নাম জেনে নি- 

    • করাতি হাঙ্গর 
    • হাতুড়ি হাঙ্গর 
    • মুইচ্ছা হাঙ্গর
    • থুট্টা হাঙ্গর 
    • রূপচাঁন্দা
    • ফলিচাঁন্দা
    • ট্যাক চাঁন্দা
    • হাউস পাতা
    • কালো পোয়া
    •  প্রজাপতি
    •  সাদা পোয়া
    •  সোনালী বাটা
    •  রাঙ্গা কই
    •  কুরাল
    • পটকা 
    • ফাঁসা 
    • পেখম ময়ূরী 

    ছোট মাছের উপকারিতা 

    বড় মাছের তুলনায় ছোট মাছে রয়েছে অনেক গুণ পুষ্টি ও শক্তি। আমাদের দেশে ছোট মাছ বা গুড়ো মাছের কদর বেশ রয়েছে। এদেশে নানা ধরনের ছোট মাছ পাওয়া যায়। পুঁটি, ট্যাংরা, মলা, ঢেলা, কাচকি ফলি ইত্যাদি মাছ বেশ জনপ্রিয়। এইসব মাছ মানব স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী। গবেষণায় দেখা যায় ডিম ছাড়ার আগ মুহূর্তে মাসে অসম্পৃক্ত বা উপকারী চর্বির পরিমাণ বেড়ে যায়। এছাড়াও ছোট মাছে আসে প্রচুর ক্যালসিয়াম। চলুন জেনে নেই ছোট মাছের কয়েকটি উপকারিতা- 

    পুঁটিঃ হাড় ও দাঁতের গঠনে সাহায্য করে এই মাছ। প্রতি ১০০ গ্রাম পুঁটি মাসে আছে ১০৬ ক্যালোরি শক্তি। এর ২.৪ গ্রাম চর্বি, ১৮.১ গ্রাম প্রোটিন এবং ১১০ গ্রাম মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। 

    মলাঃ রাত করা রাতকানা রোগ ভিটামিন এর স্বল্পতা জনিত চোখের সমস্যা রোধে মলা মাছ খুবই কার্যকর। এতে অধিক পরিমাণে ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। ১১০ গ্রাম মলা মাছের প্রায় ৮৫৩ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম আছে। আরো আছে ৫.৭ মিলিগ্রাম আয়রন, ভিটামিন-এ ২০০০ ইউনিট এবং ৩.২ মিলিগ্রাম জিংক। 

    কাচকি মাছঃ এই মাছ কোটার কোন ঝামেলা নেই, ধুয়ে বেছে রান্না করে খেয়ে নেওয়া যায়। প্রতি ১০০ গ্রাম কাচকি মাছে ১২.৭ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়, আরো ৩.৬ গ্রাম চর্বি, ৪৭৬ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ২.৮ মিলিগ্রাম আয়রন পাওয়া যায়। 

    ফলিঃ এই মাছ কাটাযুক্ত, এই মাছের প্রতি ১০০ গ্রামে প্রোটিন ২০.৩ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ১০৩ মিলিগ্রাম, আয়রন ১.৭ মিলিগ্রাম ও ফসফরাস ৪৫০ মিলিগ্রাম পাওয়া যায়। 

    ট্যাংরাঃ প্রতি ১০০ গ্রাম ট্যাংরা মাছে ১৪৪ ক্যালোরি শক্তি পাওয়া যায়।  এর মধ্যে রয়েছে প্রোটিন ১৯.২ গ্রাম চর্বি ৬.৫ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ২৭০ মিলিগ্রাম এবং আয়রন ২ মিলিগ্রাম। রক্তশূন্যতার রোগীদের ট্যাংরা মাছ খাওয়া উচিত। 

    ছোট মাসে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ থাকে। যা রাতকানা, অন্ধ হয়ে যাওয়া ছাড়াও দৈনন্দিন অনেক শারীরিক সমস্যা দূর করতে সক্ষম। শিশুদের রাতকানা রোগ ঠেকাতে ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ মলা, ঢেলা ও গুড়া মাছ খাওয়ানো দরকার। দৃষ্টি শক্তির জন্য গুড়া মাছ দরকার। যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ গুঁড়া মাছ তাদের ব্লাডপ্রেসার কমাতে সাহায্য করবে। 

    ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খনিজ লবণ সমৃদ্ধ গুঁড়া মাছ উপকারী। হৃদরোগী স্ট্রোকের রোগীর ও গর্ভবতী মা ও দুগ্ধদানকারী মায়ের জন্য বুড়া মাছ অত্যন্ত উপকারী। এটি রোগ নির্ণয় করতে অত্যন্ত কার্যকরী। 

    প্রতিদিন মাছ খেলে কি হয় 

    সারা বিশ্বজুড়ে সব থেকে বেশি যে খাবারটা খাওয়া হয় তা হল মাছ। মাছ খেতে আমরা প্রায় প্রত্যেকেই ভালোবাসি। মাছ ছাড়া যেন বাঙালির এক মুহূর্ত চলে না। আবার আমরা অনেকেই আছি যে মাছ খেলে কি উপকার হয়, কি ধরনের ক্ষতি হয় এগুলো চিন্তাভাবনা করে মাছ খাই না। বড়রা বলেন মাছ খেলে নাকি শরীরে অনেক উপকার হয়। চলুন তাহলে জেনে নেই মাছ খেলে সত্যিই আমাদের শরীরে কি কি উপকার বা পরিবর্তন হয়- 

    • নিয়মিত কিংবা সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন মাস অবশ্যই খাওয়া উচিত। হাঁপানি এবং প্রস্টেট ক্যান্সারের হাত থেকে রক্ষা করে মাছ। এছাড়াও অনেক রোগের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করে। 
    • নিয়মিত মাছ খেলে হার্ট অ্যাটাক ও ব্রেন স্টকের ঝুঁকি কিছুটা কমে। যারা সপ্তাহে মাত্র একদিন মাছ খান তাদের হার্টের অসুখের হার অন্যদের থেকে ১৫% কম হয়। 
    • বাধ্যক্য জনিত কারণে চোখের ম্যাকিউলার ডিজেনারেশন কমিয়ে রাখতে সাহায্য করে, ফিশ ডায়েট।ইনস্টিটিউট অফ হেলদি এজিংয়ে ৬৫ থেকে ৯৪ বছর বয়সী ব্যক্তির ওপর পরীক্ষা চালিয়েছে। সেই পরীক্ষায় সে দেখেছে যারা নিয়ম করে সপ্তাহে দুই দিন মাছ খাই তাদের অ্যালঝাইমার্স ডিজিজের ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে কমে যায়। 
    • মাছে খুব কম পরিমাণে ফ্যাট থাকে। মাছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন এবং ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। 
    • শিশুরা যদি ছোট বয়স থেকে মাছ খায় তাহলে তাদের মধ্যে হাঁপানি হওয়ার আশঙ্কা কমে যাবে। 
    • প্রত্যেকদিন সম্ভব না হলে অন্তত সপ্তাহে একদিন মাছ খেলে হৃদরোগ এবং স্টোকের সম্ভাবনা কমে যায়। রক্ত জমাট বাধা রোধ করে, উক্ত রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে মাছ। 
    • মাছে থাকা ওমেগা৩ ফ্যাটি এসিড ক্যান্সারের সম্ভাবনা কমিয়ে দেয় ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ। বিশেষ করে ওরাল ক্যাভিটি, কোলন ক্যানসার, স্তন ক্যানসার, ওভারি ক্যানসার এবং প্রস্টেট ক্যানসারের সম্ভাবনা খুবই কমিয়ে দেয়। 
    • যারা নিয়মিত মাছ খায় তাদের মধ্যে একাকীত্ব মানসিক কষ্টের পরিমাণ অনেক কমে যায়। 
    • মাছ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে। ব্লাড সুগারের মাত্রা বোজায় রাখতে সহায়তা করে। 
    • তৈলাক্ত মাসে থাকে ডিএইচএ অর্থাৎ ডোকোসাহেক্সানোয়িক অ্যাসিড যা এক ধরনের ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। এটি মস্তিষ্কের সেরিব্রাল কর্টেক্স তৈরিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেয়। 

    শুটকি মাছের উপকারিতা ও অপকারিতা 

    বাঙালির এক অতি পরিচিত খাবার হল শুটকি মাছ। মাছকে রোদে শুকিয়ে শুটকি বানিয়ে একে সংরক্ষণ করা হয়। আলাদা একটি নিজস্ব গন্ধ ও স্বাদ। ভিন্ন স্বাদের দারুন এই খাবার অনেকে খেতে চায় না, আবার অনেকে ভাবেন এটি খেলেও উপকারিতা নেই, অনেকে এটিকে ঘৃণা করেন। আসলে যারা জানেন না তারাই বলেন এর কোন পুষ্টিগুণ বা উপকারিতা নেই। চলুন জেনে নিই শুটকি মাছের উপকারিতা- 

    • যারা অনেক বেশি পরিশ্রম করেন তারা এই মাছ খেতে পারেন। এটি দেহের ক্যালরি চাহিদা পূরণ করে ও দেহে কে কাজ করার শক্তি জোগাতে সহায়তা করে। 
    • দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এটি বেশ উপকারী একটি খাদ্য। নিয়মিত এটি খেলে যক্ষা সর্দি কাশি জ্বর ইত্যাদি রোগ সহজে হয় না। পাশাপাশি এটি অন্যান্য রোগের বিরুদ্ধেও বেশ কার্যকারী। এতে রয়েছে আয়োডিন আয়রন যা রক্ত বাড়ানোর পাশাপাশি দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে তোলে। 
    • গর্ভবতী মায়েদের দেহের জন্য গর্ভাবস্থায় আয়রন সোডিয়াম ইত্যাদি উপাদান বেশি প্রয়োজন। আর শুটকি মাছে এ সকল উপাদান পাওয়া যায়। এজন্য গর্ভবতী অবস্থায় মায়েরা এটা খেতে পারেন। 
    • দেহের কোলেস্টরের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখতে শুটকি বেশ কার্যকর। এটি দেহের উপকারী কোলেস্টেরল বাড়াতে সাহায্য করে। এটি বেস উচ্চমানের আমিষ, প্রোটিন যুক্ত খাবার হওয়ায় হার্টের উপকারী। 
    • অনেকের হরমোন জাতীয় সমস্যা থাকে। হরমোন জাতীয় সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে খেতে পারেন শুটকি মাছ। এটি দেহে হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা করে এবং হরমোন জাতীয় বিভিন্ন সমস্যা দূর করে। 
    • শুটকি মাছে প্রচুর পরিমাণে কোলেস্টেরল রয়েছে। যেসব ব্যাক্তি পাতলা লিখলিকে তাদের শরীর মোটা করতে শুটকি মাছ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
    • এই মাছ বাড়ন্ত শিশু, ব্যায়াম-বিদ, খেলোয়াড়, নৃত্যশিল্পী, সাঁতারু এ ধরনের ব্যক্তিদের জন্য যথেষ্ট উপকারী। কারণ এতে যে পরিমাণে ক্যালরি রয়েছে তা কাইক পরিশ্রমের ব্যক্তিদের সাহায্য করে। 
    • অপকারিতা- শুটকি মাছে রয়েছে অনেক উপকারী উপাদান এটি অপকারী হলেও এর পুষ্টিগুণ অনেক।তবে যে শুধু উপকারী তা কিন্তু না, এর অপকারিতা রয়েছে। 
    • বাতের ব্যথা থাকলে শুঁটকি না খাওয়া ভালো। এতে ব্যথা বেড়ে যেতে পারে। 
    • উচ্চ প্রোটিনের কারণে উচ্চ রক্তচাপ যাদের আছে তাদেরও এটি এড়িয়ে চলা উচিৎ। পাশাপাশি যাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা ও হৃদরোগের ঝুঁকি আছে তারাও এটি না খাওয়াই ভালো কিংবা খেলেও অল্প পরিমাণে খাওয়া ভালো। 
    • পিত্তথলি বা গলব্লাডারে পাথর হলে, কিডনির সমস্যা থাকলে বা অন্য কোনো জটিলতা থাকলে এই খাবার খাওয়া উচিৎ নয়। এতে বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিতে পারে। 
    • শুঁটকি সংরক্ষণ করে প্রক্রিয়াজাত করার সময় অনেক লবণ ব্যবহার করা হয়। আর লবণ উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ায়। 
    • উচ্চমাত্রায় কোলেস্টেরল থাকার কারণে এটি বেশি খেলে দেহে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। ফলে দেহের নানা ধরনের ক্ষতি হতে পারে। 

    রুই মাছের উপকারিতা ও অপকারিতা 

    বাঙালির খাবার তালিকায় "রুই মাছ" থাকবে না এটা কখনো হয়না। রুই মাছ অত্যন্ত সুস্বাদু। রুই মাছ খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। অনেকে আছে যারা রুই মাছের উপকারিতা সম্পর্কে জানেন।আবার অনেকেই আছেন যে রুই মাছের উপকারিতা সম্পর্কে জানেন না। এজন্যই মাছ খাওয়া পছন্দ করেন না। চলুন আজকে জেনে নেই রুই মাছে কি কি উপকারিতা  পাওয়া যায়- 

    ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেঃ ওমেগা৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মির হাত থেকে আমাদের ত্বককে রক্ষা করে । সেইসঙ্গে একজিমা এবং সোরিয়াসিসের মতো রোগের চিকিৎসাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে । এই মাছে থাকা প্রোটিন কোলাজেনের কর্মক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে । যার ফলে  ত্বক উজ্জ্বল এবং প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে । 

    ত্বক সুস্থ থাকেঃ এই মাছ নিয়মিত খেলে ত্বকের নানা রকম সংক্রমণ বা প্রদাহের সমস্যাও কমতে পারে। এই মাছে থাকা ওমেগা৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ত্বককে নানা সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করতে পারে।

    রুই মাছ পুষ্টিকরঃ এটিতে চর্বিও কম, এটি এমন লোকেদের জন্য একটি স্বাস্থ্যকর বিকল্প তৈরি করে যারা তাদের ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে বা হৃদরোগের ঝুঁকি কমানোর চেষ্টা করছেন। 

    রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা দূর করেঃ ওমেগা৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রক্তের অণুচক্রিকাকে জমাট বাঁধতে দেয় না, ফলে রক্তনালিতে জমাট বাঁধার কারণে স্ট্রোক হতে পারে না । বেশ কয়েকটি গবেষণাপত্রেও স্ট্রোক প্রতিরোধে রুই মাছের ভূমিকার কথা উল্লেখ রয়েছে । ভালো মানের প্রোটিনের অন্যতম উৎস রুই মাছ । 

    আরো পড়ুনঃ গর্ভবতী মায়ের আপেল খেলে কি হয়

    হার্ট সুস্থ থাকেঃ রুই মাছে উপস্থিত ওমেগা৩ ফ্যাটি অ্যাসিড হলো হার্টের জন্য বেশ উপকারী । এই মাছ খাওয়ার ফলে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমবে । সেইসঙ্গে হঠাৎ হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনাও হ্রাস পাবে। 

    হাড়ের ব্যথা কমায়ঃ যারা হাড়ের ব্যথায় ভোগেন, তারা নিয়মিত এই মাছ খেলে সমস্যা কমে যাবে অনেকটাই। প্রাকৃতিক এই উপাদানটির মধ্যে এমন কিছু শক্তি রয়েছে, যা এই ধরনের হাড়ের রোগের প্রকোপও কমাতে দারুণ উপকারে আসে। 

    দৃষ্টিশক্তি ঠিক রাখেঃ দৃষ্টিশক্তি কমে যায়, চোখ শুকিয়ে যায়। চোখের এ ধরনের সমস্যা কমাতে পারে রুই মাছ। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড চোখের বহু সমস্যাকে প্রতিহত করে। 

    অপকারিতা- 

    খাবার বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা গবেষনাতে দেখেছেন যদি প্রতি নিয়ত অর্থাৎ ঘন ঘন ফিশফ্রাই খাওয়া হয় তাহলে মানুষের হার্ট বা হৃদযন্ত্র খারাপ হওয়ার সম্ভবনা থাকে । আর অনেক বেশি পরিমানে ফিশফ্রাই খাওয়া হলে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা বেড়ে যায় প্রায় ৪৪% এর মতো ৷ 

    মাছের চর্বিতে থাকে মানব শরিরের জন্য উপকারি ওমেগা৩ ফ্যাটি অ্যাসিড । মাছ যখন ফ্রাই করা হয় ওমেগা৩ ফ্যাটি অ্যাসিড পরিমান মাছে থাকেনা বললেই চলে, ফ্রাই বা ভাজি করার ফলে কিন্তু সেটা আর ও অনেক কমে যেতে থাকে ।

    উচ্চ তাপে তেল ভেঙে ক্ষতিকর রাসায়নিক ক্রিয়া তৈরি করা হয়ে থাকে, আর মাছ ভাজি বা ফ্রাই করার ফলে ক্ষতিকর ক্যালোরির পরিমানও বেড়ে যায় । যা হার্টের জন্য খুবই ক্ষতিকর ।


    এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

    পূর্বের পোস্ট দেখুন
    এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
    মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

    SM TECHY এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

    comment url