ঘাড় ব্যথা কিসের লক্ষণ - ঘাড় ব্যথা থেকে মুক্তির উপায়

ঘাড় ও কাঁধের ব্যথা খুবই সাধারণ ঘটনা। ঘাড় ব্যথা কিসের লক্ষণ - ঘাড় ব্যথা থেকে মুক্তির উপায়, সে সম্পর্কে কি আপনার জানা আছে। বর্তমান সময়ে ঘাড় ব্যথার রোগী অনেক বেড়ে গেছে। শিশু থেকে বৃদ্ধ প্রায় সব বয়সী মানুষেরই ঘাড়ে এই যন্ত্রণাদায়ক ব্যথা হয়। সাত দিনের বেশি ঘাড় ব্যথা থাকলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।



ঘাড় ব্যথা কিসের লক্ষণ - ঘাড় ব্যথা থেকে মুক্তির উপায়, ঘাড় ব্যথা হলে করণীয় এগুলোই আজকের আলোচনার বিষয়। আপনি যদি এই যন্ত্রনাদায়ক ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে চান, তাহলে আমাদের এই পোস্ট টি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। ঘাড়ে ব্যথা কেন হয়, ঘাড়ে ব্যথা হলে কি করতে হয়, কি ওষুধ খাওয়া দরকার পড়ে এবং ঘরোয়া উপায়ে কিভাবে এটি থেকে মুক্তি পাওয়া যায় সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

ঘাড় ব্যথার কারণ

  • বয়স হলে ঘাড়ের টিস্যু ক্ষয় হয়ে যায়। দীর্ঘদিন ধরে ডেস্টপ এর সামনে বসে যারা কাজ করেন, তাদের এই সমস্যা বেশি হয়। যাদের সার্ভাইক্যাল স্পন্ডেলাইটিস রয়েছে, তাদের এই সমস্যা বেশি হতে পারে।
  • কোন দুর্ঘটনায় ঘড়ে আঘাত পেলে সেই ব্যথা বহুদিন স্থায়ী হয়। পেশীতে টান লাগলে মাঝেমধ্যেই তখন ব্যথা জেগে ওঠে।
  • বসার ভঙ্গিতে ত্রুটি থাকলে ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে। বাঁকাভাবে শুয়ে থাকলে ঘাড়ে চাপ পড়ে সেখান থেকেও ঘাড় ব্যথা হতে পারে। এ ধরনের সমস্যা হলে অন্যদিকে ঘাড় ঘোরানো অসম্ভব হয়ে যায়।
  • অনেক সময় বিছানায় শুয়েই বই পড়া, টিভি দেখা বা উপড় হয়ে শুয়ে ল্যাপটপে কাজ করা থেকেও ঘাড়ের ব্যথা হতে পারে।
  • কোন কারনে স্পাইনাল কোডের কোন টিস্যু ফুলে গেলে স্লিপ ডিস্ক হতে পারে সেখান থেকেও ঘাড়ের ব্যথা হয়।
  • মানসিক অবসাদ ও দুশ্চিন্তা থেকেও ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে।
  • পেশিতে টান পড়ার কারণে ও ঘাড়ে ব্যথা হয়। স্নায়ু সংকোচন অর্থাৎ ঘাড়ের ভেটিব্রায় হার্নিয়েটেড কি ডিক্স বা হাড়ের উৎস মেরুদন্ডের কড থেকে বেরিয়ে আসা স্নায়ুর ওপর চাপ পড়ার কারণেও ব্যথা হয়। 

ঘাড় ব্যথার প্রতিকার

সাধারণভাবে যে ঘাড় ব্যথা হয়, চাইলেই আমরা কিছু নিয়ম মেনে তা দূর করতে পারি। চলুন জেনে নেই কিভাবে তা দূর করা যায়-

  • শারীরিক ভঙ্গি স্বাস্থ্যকর করুন। বসে থাকার সময় আপনার মেরুদন্ড যেন সোজা ভাবে থাকে এবং কান আপনার কাঁধের ওপরে থাকে।
  • দীর্ঘ সময় একটানা বসে কাজ না করে এক ঘন্টা পর পর দশ মিনিট বিরতি নিন।
  • ফোনে কথা বলার সময় কান ও কাঁদে এর মধ্যে কোনটি ঠেকিয়ে কথা বলবেন না। প্রয়োজনে হেডফোন ব্যবহার করুন।
  • ধূমপান করলে ঘাড়ে ব্যথা হয়। এজন্য ধূমপান করা থেকে বিরত থাকুন।
  • সাইকেল চালানো কিংবা সাঁতার কাটার মতো পরিশ্রমের কাজ অনেক বেশি সময় ধরে করলে ঘাড়ে ব্যথা হয়। এজন্য এগুলো করার মাঝে মাঝে বিরতি নিবেন।
  • মাঝারি শক্ত সমান বিছানায় এক বালিশে চিত হয়ে ঘুমাতে হবে। ঘুমানোর সময় ঘাড়ের নিচে বালিশ দিতে হবে।
  • আপনি যে জায়গায় কাজ করেন সেই জায়গার চেয়ার টেবিল আপনার কম্পিউটার সুন্দর মত সাজিয়ে নিতে হবে। যেন আপনার চোখের সামনে আরামদায়ক ভাবে থাকে।
  • আপনি যদি এগুলো একটুও মেনে চলেন, তাহলে এই মারাত্মক যন্ত্রণাদায়ক রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারেন। 

ঘাড় ব্যথা থেকে মুক্তির উপায় 

  • প্রথমে কয়েক মিনিট বরফ লাগান, এরপর একটি হিটিং প্যাড বা গরম তোয়ালে দিয়ে ছেক দিয়ে ঘাড় ব্যথা কমাতে পারেন।
  • প্রতিদিন ঘাড়ের ব্যায়াম করুন। ধীরে ধীরে আপনার মাথা ডানে বামে এবং উপরে নিচে ঘোরান এভাবে ঘাড় ব্যথা দূর করতে পারেন। 
  • ঘরের মৃদু মাসাজ হতে পারেন। এতে করে ঘাড় ব্যথা দূর হতে পারে।
  • আপনার ঘাড় ব্যথা বাড়িয়ে দেয় এমন কাজ বেশি করা যাবে না। যেমন খেলাধুলা উত্তোলন ভর উত্তোলন এগুলো খুব বেশি করা যাবে না।
  • ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী প্যারাসিটামলের মতো ব্যথা উপশমকারী ওষুধ গ্রহণ করতে পারেন।
  • ওঠা, বসা চলাফেরা এবং প্রাত্যাহিক কার্যকলাপে শারীরিক সঠিক ভঙ্গিতে রাখার অভ্যাস করুন। 
  • একইভাবে অনেকক্ষণ বসে থাকা বা দাঁড়িয়ে থাকা যাবে না, এতে করে ঘাড়ের ব্যথা বেড়ে যায়।
  • ঘুমানোর সময় সঠিকভাবে বালিশ ব্যবহার করুন, যেন ঘাড় সঠিকভাবে থাকে।
  • ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ঘাড়ের কলার ব্যবহার করবেন না। কারণ এটি যদি আপনি সঠিকভাবে ব্যবহার না করেন, তাহলে এটি আপনার ঘাড়ের ব্যথাকে আরও তীব্রভাবে বাড়িয়ে দিবে। 


বেশিরভাগ সময় ঘাড়ের ব্যথা তিন দিনের মধ্যে সেরে যায়। কিন্তু কখনো যদি তিন দিনের মধ্যে না কমে, সাত দিনের বেশি হয়ে যায় তাহলে অবশ্যই অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

SM TECHY এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url