কাঁচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

বাদাম পছন্দ করে না, এমন লোক খুবই কম পাওয়া যাবে। আপনি কি কাচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানেন। আমাদের মাঝে হয়তো অনেকেই আছে যে আমরা বাদামের উপকারিতা সম্পর্কে জানি। অনেকেই প্রশ্ন করে রাতে বাদাম খাওয়ার উপকারিতা কি। বাদামে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি যেমন ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, ওমেগা৩, আয়রন, ভিটামিন-ই ইত্যাদি পাওয়া যায়। 

কাঁচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

কাঁচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা কি এবং রাতে বাদাম খাওয়ার উপকারিতা কি সব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। আপনি যদি এগুলো সব বিষয় সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আশা করি আপনি সবকিছু সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাবেন।

পোস্ট সূচিপত্রঃ  কাঁচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা 

খালি পেটে বাদাম খেলে কি হয়

আমরা বাদামের উপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই জানি, আবার জানি না। বাদাম একটি সুস্বাদু খাওয়ার হওয়ার পাশাপাশি এটি বেশ উপকারী শরীরের জন্য। আপনি কি জানেন যৌবন ধরে রাখতে বাদামের অবদান অনস্বীকার্য। বিশেষ করে সারারাত যদি সেই বাদাম জলে ভিজিয়ে রেখে খান, তাহলে তার অনেক উপকার পাবেন।

  • খালি পেটে বাদাম খেলে, মহাজন শক্তি বাড়িয়ে তোলে ভেজানো বাদাম। 
  • ভেজানো বাদামে ভিটামিন বি-১৭ থাকে যা ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। 
  • খালি পেটে বাদাম খেলে, বাদাম মেধ ঝরিয়ে শরীরের ফোলা ভাব কমায়। 
  • উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে ভেজানো বাদাম। তবে রোজ সকালে খালি পেটে খেতে হবে। 
  • গর্ভবতী মহিলাদের জন্য বাদাম অনেক উপকারী।
  • খালি পেটে বাদাম খেলে, শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখে। 

এছাড়াও আপনি সকালে খালি পেটে যেসব খাবার খাবেন, চলুন সেগুলো সম্পর্কে জানি-

ভেজানো কাঠবাদামঃ প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ১০/১২ টি বা এক মুঠো ভিজানো কাঠ বাদাম খেতে পারেন। এতে অনেক বিস্ময়কর উপকারিতা পাবেন যা আপনার শরীরকে সারাদিন সুস্থ ও সবল রাখবে। সকালে খালি পেটে কাঠ বাদাম খেলে সারাদিন সতেজ থাকতে পারবেন।

ভেজানো কাঁচা ছোলাঃ উচ্চমাত্রার প্রোটিন ও ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার হচ্ছে কাঁচা ছোলা। বিশেষজ্ঞ পুষ্টিবিদের মতে, কাঁচা ছোলা ভিজিয়ে খেলে শরীরের শক্তি যোগায়, বল যথেষ্ট বৃদ্ধি করে, রক্তচাপ কমাতে বা নিয়ন্ত্রণ করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে, রক্তের চর্বি কমায়, রুচি বাড়ায় এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও কাঁচা ছোলার অনেক উপকারিতা রয়েছে। ১ দিন পর পর ২০/২৫ টি ভালো কাঁচা ছোলা রাতে ভিজিয়ে রেখে সকালে খেতে পারেন।

ভেজানো কিসমিস এবং এর পানিঃ সকালে খালি পেটে খাওয়ার মধ্যে সর্ব উত্তম খাবার হচ্ছে ভেজানো ১০/১৫ টি কিসমিস ও এর পানি। অনেকেই হয়তো জানেন না কিসমিস একটি স্বাস্থ্যগুণ সম্পন্ন খাবার। কিসমিসের জল লিভার পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, কিস ভেজানো জল খেলে শরীরে জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়া শুরু হয়। যার ফলে রক্ত পরিশোধিত হতে শুরু করে।

খেজুরঃ খেজুরের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে কম বেশি সবারই কিছু ধারণা আছে। এটিতে প্রচুর দ্রবণীয় ফাইবার ও আঁশ থাকে যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। হজম প্রক্রিয়া সহজ করে, হাড় মজবুত করে, হৃদপিণ্ডের ক্ষমতা বাড়াতে ও সাহায্য করে। শরীরের সোডিয়াম, পটাশিয়ামের সমতা রক্ষা করে। নিয়মিত ২/৩ টা ভালো খেজুর খাওয়ার চেষ্টা করুন।

মধুঃ সকালে খালি পেটে এক গ্লাস কুসম গরম পানিতে এক চামচ মধু ও সাথে লেবুর রস মিশিয়ে খেলে ওজন কমে ও যকৃত পরিষ্কার থাকে। এবং ব্রেইনের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে ও সহায়তা করে। শীতকালে প্রতিদিন খেলে ভালো ফল পাওয়া যায়।

পানিঃ প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই প্রথমে ১/২ গ্লাস বিশুদ্ধ পানি পান করুন। খালি পেটে পানি খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। সকালে খালি পেটে পানি পান করলে হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় ও এর প্রক্রিয়া সহজ হয়। রক্তের দূষিত পদার্থ বের হয়ে যায়, অ্যাসিডিটি থাকে না এবং বুমির ভাব, গলার সমস্যা ও মাসিকের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।

কাঁচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা 

যারা নিয়মিত কাঁচা বাদাম খান তাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান প্রবেশ করে। বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি যেমন ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, ওমেগা ৩, আয়রন, ভিটামিন-ই ইত্যাদি। কাচা বাদাম হাড়ের শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। , পাশাপাশি এটি মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়ায় এবং ক্যান্সারের আশঙ্কা দূর করে।

যে সকল মানুষ প্রতিনিয়ত শরীর চর্চা করেন তাদের ক্ষেত্রে কাচা বাদাম খুবই ভালো খাবার। বাদামের মধ্যে থাকা প্রোটিন আমাদের শরীরের মাংসের পরিমাণ বৃদ্ধি করে। শরীরচর্চা করার পর শরীরে অনেকটা প্রোটিনের প্রয়োজন হয় এবং এই প্রোটিন আমরা বাদাম থেকে পেতে পারি। তবে যাদের একটু হজমের সমস্যা আছে তাদের বেশি না খাওয়াই ভালো।

নির্দিষ্ট একটা বয়সের পর প্রায় অনেকের হাড়ের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। তখন শরীরে ক্যালসিয়ামের খুবই দরকার পরে। বাদামের মধ্যে থাকা ক্যালসিয়াম, হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে। দাঁতের ক্ষয় রোধ করতে বাদাম অনেক কার্যকারী হয়। এছাড়া কাঁচা বাদামের মধ্যে থাকা আইরন রক্তশূন্যতা দূর করে। 
আপনি যদি নিয়ম করে পরিমান মত বাদাম খান তাহলে আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে। কাঁচা বাদামের মধ্যে থাকা ভিটামিন-ই ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। বিশেষ করে যারা রক্তস্বল্পতায় ভুগেন, তারা কাঁচা বাদাম খাবেন এতে বেশ কার্যকারী ফল পাবেন। এছাড়াও এই বাদামে উপস্থিত ভিটামিন-ই চুলও ভালো রাখতে সাহায্য করে।

আপনার যদি কাঁচা বাদাম চিবিয়ে খেতে ভালো না লাগে, তাহলে আপনি কাঁচা বাদাম পিষে দুধ করে খেতে পারেন। তা না হলে কাঁচা বাদাম পানিতে ভিজিয়ে রেখে তা চিবিয়ে খান। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত কেউ যদি এক বাটি করে বাদাম খাওয়া শুরু করেন, তাহলে তা শরীরকে চাঙা তো রাখেই, সেই সঙ্গে একাধিক রোগ দূরে রাখতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

নিয়মিত কাঁচা বাদাম খেলে সেটি আরো বেশ কিছু উপকারিতা দেয় তা হলো- 
  • ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়ঃ একটি গবেষণা থেকে জানা যায়, বাদাম যদি নিয়মিত খাওয়া যায়, তাহলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি প্রায় ২০ শতাংশ কমে আসে।
  • ক্যানসার নিয়ন্ত্রণ করেঃ বাদামে ফোলিক অ্যাসিড আর ফাইটিক অ্যাসিড রয়েছে। এই দুই অ্যাসিড কোলন ক্যানসারের মতো রোগ নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে।
  • ওজন নিয়ন্ত্রণ করেঃ বাদাম নিয়মিত খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। এমনই দাবি করা হয়েছে গবেষণায়। কারণ, বাদামে কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট আর প্রোটিন থাকে যথেষ্ট মাত্রায়। যাও ওজন কমাতে সাহায্য করে।
  • মেজাজ ভাল রাখেঃ আপনি যদি দিনে একবার অন্তত বাদাম খান তাহলে আপনাকে ক্যালরির জন্য অতিরিক্ত খাবার খেতে হবে না। বাদাম খাদ্য মেজাজ হিসাবে পরিচিত। তাই মনের বিষণ্নতা দূর করে মন রিফ্রেশ করে তোলে।
  • রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণঃ বাদামে পটাসিয়ামের পরিমাণ উচ্চ মাত্রায় থাকে এবং সোডিয়ামের পরিমাণ কম থাকে। যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। সোডিয়ামের মাত্রা বেশি হলে দেহে রক্ত বৃদ্ধি পায় তখন রক্তচাপ বেড়ে যায়। এক্ষেত্রে নিয়মিত বাদাম খাওয়া উপকারি।

কাঁচা বাদাম খাওয়ার অপকারিতা 

আমরা বাদামের উপকারিতা সম্পর্কে প্রায় অনেকেই জানি। কিন্তু অপকারিতা সম্পর্কে আমরা কয়জনই বা জানি। এখন অনেকের মনে প্রশ্ন থাকতে পারে বাদামের এতসব পুষ্টিগুণ রয়েছে, তাহলে বাদামের উপকারিতা কি। বাদামেরও বেশ কিছু অপকারিতার হয়েছে, সেগুলো জানা অত্যন্ত প্রয়োজন চলুন জেনে নেই বাদামের উপকারিতা-

  • গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাঃ আপনি রোজ প্রয়োজনের থেকে ২০০ গ্রাম বা তার বেশি খেয়ে ফেলেন। তাহলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারেন। কারণ এটি বাদামে একটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।
  • অ্যালার্জির সমস্যাঃ বাদামে প্রচুর পরিমাণে উপকারিতা বিদ্যমান রয়েছে তবু বাদাম খাওয়ার সময় সঠিক পদ্ধতিতে না ব্যবহার করলে কিছু সাইড এফেক্ট দেখা যায়। তার মধ্যে একটি অ্যালার্জির সমস্যা। কারণ বাদামে অ্যালার্জি হওয়ার প্রবণতা বেশি। তাই বাদাম খাওয়ার আগে সচেতন হন কোন বাদামে আপনার অ্যালার্জি রয়েছে।
  • ওজন বাড়াতে পারেঃ বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা নিবন্ধে বাদামের উপকারিতায় আমরা আগেই জেনেছি, এতে উচ্চ প্রোটিন ও ফ্যাট থাকে। তাই মাত্রাতিরিক্ত বাদাম খেলে আপনি কিন্তু মোটা হয়ে যেতে পারেন।
  • ওষুধের কার্যক্ষমতাঃ বাদাম ওষুধের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয় যার ফলে বিভিন্ন সময় অসুখ থেকে সেরে উঠতে সময় লাগে। 

রাতে বাদাম খাওয়ার উপকারিতা 

রাতে বাদাম খাওয়ার উপকারিতা অনেক যা বর্ণনা করে শেষ করা যায় না। আজকে আমরা জানবো রাতে বাদাম খাওয়ার উপকারিতা কি তার সম্পর্কে বিস্তারিত। 

বাদাম হলো খুবই জনপ্রিয় একটি খাবার। বাদাম খুবই সুস্বাদু এবং এ বাদাম সব ধরনের ডায়েটের জন্য বেশ উপভোগ করা যেতে পারে। আপনি যদি বাদাম থেকে সর্বাধিক উপকার পেতে চান তাহলে অবশ্যই রাতের বেলায় বাদাম খাবেন। বাদাম খাওয়া আপনার ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে এবং আপনার শরীরে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। 

কোন কারণবশত যদি আপনার রাতে ঘুমাতে সমস্যা হয় বা আপনি রাতে ঘুমাতে পারছেন না, আপনার ঘুমানোর সহায়তার জন্য আপনি একটি পুষ্টিকর খাবার খুজতেছেন, তাহলে আপনি এক মুঠো বাদাম খেতে পারেন। যা আপনার শরীরের জন্য অনেক উপকারী, সঙ্গে আপনার ঘুম ভালো হওয়ার সহায়তা করবে। 

অনেকে সাধারণত রাতের বেলায় এক গ্লাস উষ্ণ দুধ পান করে থাকেন। তারা মনে করে ক্যাফেইন থেকে দূরে থাকার উপায় হিসেবে দুধ তাদের ভালো ঘুমাতে সাহায্য করে। কিন্তু রাতের বেলায় খাবারের পরে বাদাম খাওয়া শরীরের জন্য আসলে অনেক ভালো কাজ করে, আর রাতে ঘুম পাওয়ার একটি স্বাস্থ্যকর উপায় হল বাদাম খাওয়া। 

আরো পড়ুনঃ কাঁচা হলুদের উপকারিতা

ডেভিল ব্যাখ্যা করেছেন যে, অনেক ধরনের বাদাম রয়েছে তবে তাদের মধ্যে কিছু পুষ্টিতে সমৃদ্ধ বেশ কয়েকটি ভিন্ন জাত রয়েছে যা উন্নত ঘুমের ফলাফলের জন্য বেশ কার্যকারী। বাদামে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ রয়েছে যা মানুষকে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়তে সাহায্য করে। আবার বাদাম খেলে বেশিক্ষণ ঘুমানো এবং অনিদ্রা তীব্রতা কমানোর সাথে যুক্ত থাকে।

বাদামের পুষ্টি একটি দ্বিগুণ সুবিধা প্রদান করে থাকে, বাদামের মধ্যে রয়েছে উচ্চ পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম এবং মেলাটোনিন। রাতে ভালো ঘুমানোর জন্য এই পুষ্টি উপাদান দুটি মূল। 

বাদামে প্রচুর ম্যাগনেসিয়াম পাওয়া যায়। ম্যাগনেসিয়াম মেলাটোনিন এবং ভিটামিন বি সহ ক্লিনকাল ট্রায়ালগুলিতে অনিদ্রার উন্নতি করতে সাহায্য করে এবং বিশেষ করে বয়স্ক ব্যক্তিদের ঘুমের জন্য অনেক সাহায্য করে। আপনি যদি বয়স্ক মানুষ হন এবং বাদাম খাওয়ার চিন্তা ভাবনা আপনার কাছে ভয়ানক মনে হয়, তাহলে অবশ্যই একটি বাদাম মাখন ব্যবহার করে দেখতে পারেন।

বাদাম একটি সুস্বাদু খাবার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এটির পুষ্টিগুণ অনেক। আপনি যদি বাদাম খান তাহলে প্রতিনিয়ত নানা রকম পুষ্টি উপাদান আপনার শরীরে উৎপন্ন হতে থাকবে। এজন্য প্রতিদিন এক মুঠ কাঁচা বাদাম খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। 

কাঁচা বাদাম ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা

বাদাম শরীরের জন্য অনেক উপকারী, এ বিষয়ে কোনো অনিশ্চয়তা নেই। ভেতর থেকে শক্তি যোগাড় তে এবং শরীর চাঙ্গা রাখতে বাদাম বেশ কার্যকারী। যারা সরিষার যা করেন তাদের নিয়মিত বাদাম খেতে বলেন চিকিৎসকরা। তবে বাদাম খেলে আবার অনেকেরই হজমের সমস্যা হয়। সেজন্য বাদাম ভিজিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদরা। 

  • বাদামের মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ফাইটিক অ্যাসিড শরীরে আয়রন, জিঙ্কের সঙ্গে বিক্রিয়ায় যে লবন তৈরি করে,তা খাদ্যনালীতে দ্রবীভূত হয় না। এই ফাইটিক অ্যাসিড শরীরে পেপসিন, ট্রিপসিন উৎসেচকের পরিমাণ কমিয়ে প্রোটিন পরিপাকেও বাধা দেয়। পানিতে ভিজিয়ে রাখলে বাদামের ফাইটিক অ্যাসিডের পরিমাণ কমে।
  • বাদামের মধ্যে থাকে ফেনোলিক যৌগ ট্যানিন যা সহজে হজম হয় না। ফলে বাদাম খেলে অনেকেই বদহজমের সমস্যায় ভুগে থাকেন। এই ট্যানিন শরীরে প্রোটিন পরিপাকও জটিল করে তোলে। বাদাম আগে ভিজিয়ে রাখলে বাদামে ট্যানিনের পরিমাণ কমে যায়। 
  • নানা ধরনের বাদাম রয়েছে যেগুলো বেশ শক্ত। এগুলো পরিপাকে সহজ হয় না। যেমন রয়েছে কাঠবাদাম, এই বাদাম ভিজিয়ে রাখলে অনেক নরম হয়ে যায়। সহজে ভাঙতে পারা যায়। হজমে কোনরকম অসুবিধা হয় না।
  • সব বাদাম বেশিক্ষণ ভেজানোর দরকার পড়ে না। কাঠবাদাম খাওয়ার আগে অন্তত ১২ ঘণ্টা ভেজানো উচিত। তবে আখরোট, পাইন নাট বা হেজেল নাট ৮ ঘণ্টা ভেজালেই যথেষ্ট। কাজুবাদামের ক্ষেত্রে ৬ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখলেই যথেষ্ট। 
  • আবার বাদাম শুকনো ফল হওয়ায় বেশিরভাগ সময়ে অনেকদিন ধরে রেখে দেওয়া হয়। ফলে বাদামে, বিশেষ করে বাদামের পোষায় অনেক দূষিত পদার্থ জমে যায়। ভিজিয়ে রাখলে সেই দূষিত পদার্থ দূর হয়ে যায়।  

সবশেষে বলা যায় যে কাঁচা বাদামের পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। এজন্য আমরা কাঁচা বাদাম খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলবো। আর একটু খালি পেটে খাওয়ার চেষ্টা করব। যদি আপনার হজমের সমস্যা হয় তাহলে আপনি ভিজিয়ে রেখে খেতে পারবেন। তবে আমরা অধিক পরিমাণে খাব না। সর্বোচ্চ এক মুঠো কাঁচা বাদাম প্রতিদিন সকালে খাবেন। এতে করে আপনার শরীর অনেক সুস্থ এবং সুন্দর হবে। 


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

SM TECHY এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url