টেলিফোন বা মোবাইল ফোনে সালামের পরিবর্তে হ্যালো বলা হয়, এটা কি ঠিক

নিউজ ফিডে দেখা যাচ্ছে যে, ৪০ জন ‘আমিন’ বললে নাকি দুআ কবুল হয় -এটা কতটুক সত্য, টেলিফোন বা মোবাইল ফোনে সালামের পরিবর্তে হ্যালো বলা হয়, এটা কি ঠিক, কারো প্রোফাইল দেখে তাকে দ্বীনদার ভাবা কতটা শরীয়ত সম্মত, ফেসবুক ব্যবহারকারীদের একটি কমন ভুল বিষয়ে সতর্কীকরণ আজকের বিষয়গুলো সম্পর্কে আলোচনা করব। 

টেলিফোন বা মোবাইল ফোনে সালামের পরিবর্তে হ্যালো বলা হয়, এটা কি ঠিক

বর্তমান সময়ে আমরা সকলেই ফোন ব্যবহার করি। সেই সঙ্গে ইন্টারনেট ব্যবহার করি। আমরা ফোনে কথা বলার সময় নানা রকম ভাবে কথা বলি। তবে এইভাবে কথা বলা কি ইসলামের দৃষ্টিতে সঠিক। সে সম্বন্ধে জানাবো আপনাদেরকে। সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন এবং অজানা ভুল থেকে সতর্ক হয়ে যান।

পোস্ট সূচিপত্রঃ টেলিফোন বা মোবাইল ফোনে সালামের পরিবর্তে হ্যালো বলা হয়, এটা কি ঠিক

  • নিউজ ফিডে দেখা যাচ্ছে যে, ৪০ জন ‘আমিন’ বললে নাকি দুআ কবুল হয় -এটা কতটুক সত্য
  • টেলিফোন বা মোবাইল ফোনে সালামের পরিবর্তে হ্যালো বলা হয়, এটা কি ঠিক
  • কারো প্রোফাইল দেখে তাকে দ্বীনদার ভাবা কতটা শরীয়ত সম্মত
  • ফেসবুক ব্যবহারকারীদের একটি কমন ভুল বিষয়ে সতর্কীকরণ

নিউজ ফিডে দেখা যাচ্ছে যে, ৪০ জন ‘আমিন’ বললে নাকি দুআ কবুল হয় -এটা কতটুক সত্য

বাস্তবেই এমন স্ট্যাটাসে ফেসবুক ভরপুর। ফেসবুকে উক্ত হাদিস তুলে ধরে কেউ বিয়ের জন্য, কেউ মনের মানুষকে পাওয়ার জন্য, কেউ পরীক্ষায় পাসের জন্য, এভাবে একেকজন একেক উদ্দেশ্যে দুআ চাচ্ছে। আর জনগণ কমেন্ট অপশন ‘আমিন’ এর জোয়ারে ভাসিয়ে দিচ্ছে!

অথচ এটা একটা ভ্রান্ত কথা। এমন কোনও হাদিস নেই যে, চল্লিশ জন ব্যক্তি কোনও দুআয় ‘আমিন’ বললে তা কবুল হয়ে যাবে। তাহলে তো আমাদের দেশের বড় বড় ওয়াজ মাহফিল, মিলাদ মাহফিল, দুআ মাহফিল এবং মসজিদে নামাজের পরে সম্মিলিত দুআয় যত মানুষ শরিক হয় তাদের কোন দুআই বাদ যেত না; সবই কবুল হয়ে যেতো।

আমরা বলি না যে, ফেসবুকের মাধ্যমে দুআ চাওয়া নাজায়েজ। কিন্তু ৪০জন ব্যক্তি আমিন বললে দুআ কবুল হওয়ার কোনও হাদিস নেই। এই সব বানোয়াট হাদিসকে কেন্দ্র করেই আমাদের দেশের তাবলিগ জামাতের বিশ্ব ইজতিমায় লক্ষ লক্ষ মানুষ নামাজ না পড়লেও ‘আখেরি মুনাজাতে’ শরিক হওয়ার জন্য তোলপাড় লাগিয়ে দেয়!

এই সব বানোয়াট হাদিস দ্বারাই অনেকেই সম্মিলিত দুআ সাব্যস্ত করার চেষ্টা করে। আল্লাহ আমাদেরকে দীনের সঠিক জ্ঞান দান করুন এবং ক্ষমা করুন। আমিন।

টেলিফোন বা মোবাইল ফোনে সালামের পরিবর্তে হ্যালো বলা হয়। এটা কি ঠিক

‘হ্যালো’ (Hallo) শব্দটি ইংরেজী Interjection বা সম্বোধন ও বিস্ময় সূচক অব্যয়, যা ‘আহবান’ অথবা সম্বোধনের উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়। চালু পরিভাষা হিসাবে এটি বলায় কোন দোষ নেই। কারণ এটি কোন শিরকী কালাম নয়। তবে আহুত ব্যক্তি মুসলমান হলে তাকে ‘সালাম’ দিয়েই সম্বোধন করতে হবে।

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘কেউ সালামের পূর্বে কথা আরম্ভ করলে তার উত্তর দিয়ো না’ (সিলসিলা ছহীহাহ হা/৮১৬)। অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘যে ব্যক্তি সালাম দিয়ে কথা শুরু করে না, তোমরা তাকে কথা বলার অনুমতি দিয়ো না’ (বায়হাক্বী শু‘আবুল ঈমান, মিশকাত হা/৪৬৭৬; সিলসিলা ছহীহাহ হা/৮১৭)। উল্লেখ্য যে, ‘হ্যালো’ না বলে ‘হ্যালূ’ (Halloo) বললে তার অর্থ হবে ‘কুকুরের প্রতি চিৎকার দেওয়া’।"

কারো প্রোফাইল দেখে তাকে দ্বীনদার ভাবা কতটা শরীয়ত সম্মত

বর্তমানে কারো আইডি দেখে তাকে দ্বীনদার ভাবা একবারে বোকামি। প্রোফাইল দেখে তাকে আলেমা / আল্লাহ্ ভীরু মনে হলেও। একান্তে (মেসেঞ্জার )কথায় বোঝা যায় তার মধ্যে মুমিনের যে কোনো ছিটেফোঁটা বৈশিষ্ট্য ও নেই মানুষের সাথে আচরণ টা ও সে যেন জানে না। কি হবে এতো বড়ো বড়ো পোস্ট করে যদি নিজেই না শিক্ষা নিতে পারি। 

এমন পোস্ট কোন কাজেই আসবে না তোমার বোন। জাহান্নমে একদল লোক থাকবে যারা অন্যদের উপদেশ দিত কিন্তু নিজের বালাই তারা ছিল উদাসীন। (হে রহমান আমাদের এই দল থেকে হেফাজত করুন ) জ্ঞানী কখনো অহংকারী হয় না।

ইসলাম শিখে যদি তুমি অহংকারী, উগ্র হও তাহলে জেনে নিও তুমি সঠিক ইসলাম শিখতে পারোনি ।উগ্র, অহংকারী, বদআচরণ মুমিনের বৈশিষ্ট্য নয়। হে অন্তরের পরিবর্তন কারী আমার অন্তরকে দ্বীনের উপর দৃঢ় রাখুন ।

ফেসবুক ব্যবহারকারীদের একটি কমন ভুল বিষয়ে সতর্কীকরণ

(মা শা আল্লাহ্ বলার ভুল পদ্ধতি বনাম সহীহ পদ্ধতি) ফেসবুকে জুরে আমরা দেখতে পাই যদি কেউ ছবি দেয় পোস্ট করে বা কোন আলেম একটা লেখা পোস্ট করেছেন বা তার কোন নেয়ামতের বর্ণনা দিয়েছেন বা তার কোন ছবিকে আপডেট করেছেন আমরা তখন কি বলি? মাশাআল্লাহ!

আরবের একজন সুযোগ্য আলেমে দ্বীন তিনি আমাদেরকে সুন্দর একটি তালীম দিয়েছেন ।উনি বলছেন যে এ পদ্ধতি গলদ । এরপর উনি ব্যাখ্যা করে বলছেন যে নেয়ামত দুই প্রকার -

  • একটা হল আপনার নিজের সাথে জড়িত নেয়ামত ।
  • আরেক প্রকার নেয়ামত হল অন্য ভাইয়ের সাথে জড়িত।

নিজের নেয়ামতের ক্ষেত্রে বলুন - 'মাশাআল্লাহ' বা আরেকটু বাড়িয়ে বলবেন 'মাশাআল্লাহ' / 'মাশাআল্লাহু লা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ' দলিল সূরা কাহাফে আছে। অন্যের নেয়ামতের ক্ষেত্রে বলুন - 'বারাকাল্লাহু ফিক'/'বারাকাল্লাহু আলাইক' বরকতের দোয়া করতে হবে।

এটাই দলিল সম্মত কারণ মুসনাতে আহমাদ , ইবনে মাজাহ এসেছে । আবারও বলছি নিজের সাথে সংশ্লিষ্ট নেয়ামতের বিষয়ে বলবেন - আলহামদুলিল্লাহ / মাশাআল্লাহু লা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ বা অন্তত বলবেন মাশাআল্লাহ। অন্যের সাথে সংশ্লিষ্ট নেয়ামতের বিষয়ে আপনি বলবেন -বারাকাল্লাহু ফিক / বারাকাল্লাহু আলাইক এরকম কিছু বরকতের দোয়া ।

উপরে সকল বিষয়গুলো যদি আপনার সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে আপনি অবশ্যই এতক্ষণে জেনে গেছেন কোনগুলো শরীয়ত সম্মত এবং কোনগুলো শরীয়ত সম্মত নয়। আশা করি সকল বিষয়ে জানার পরে আপনি এগুলো মেনে চলার চেষ্টা করবেন।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

SM TECHY এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url