চোখের পাপড়ি ঘন করার উপায় - ভ্রু ঘন করার ঘরোয়া উপায়

আমাদের চোখের এবং মুখের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে চোখের পাপড়ি এবং চোখের ভ্রু। ভ্রু শুধু চোখের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে না, এটি চোখে ঘাম থেকে রক্ষাও করে। আমাদের অনেকে চোখের পাপড়ি উঠে যায় বা ঝরে পড়ে যায়। এজন্য আমাদের জানা উচিত চোখের পাপড়ি ঘন করার উপায় বা ভ্রু ঘন করার ঘরোয়া উপায়। এই বিষয়গুলোই আজকে আপনি জানতে পারবেন।

চোখের পাপড়ি ঘন করার উপায় - ভ্রু ঘন করার ঘরোয়া উপায়

এছাড়াও আরো জানতে পারবেন চোখের ভ্রু ও পড়ে যাওয়ার কারণ। সেই সাথে আরো জানতে পারবেন চোখের পাপড়ি পড়ে যাওয়ার কারণ। এছাড়াও আমরা সকলে তো জানতে আগ্রহী হই যে কিভাবে আমাদের চোখের আইলেশ বড় করা যায়। এই সকল বিষয়গুলো সম্পর্কে আজকে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাই সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

পোস্ট সূচিপত্র

আইলেশ বড় করার উপায়

চোখকে অ্যাটাকটিভ বা আকর্ষণীয় করে তুলতে আমরা কে বা না চাই। চোখের আইলিশ যত বড় হয় চোখকে দেখতে ততটাই আকর্ষণীয় লাগে। কালো হরিণ চোখ শুধু কবিতা বা প্রেমিকের উপমায় নয়, আপনারও হতে পারে। চোখের আইলেশ যত বড় হয় চোখ ততটাই অ্যাটাকটিভ দেখায়।

চোখের লম্বা ঘন আইলেশ চোখের সৌন্দর্য বাড়িয়ে তোলে। তাই প্রতিটা মেয়েই চায় তার চোখের আইলেশ লম্বা বা বড় হোক। আজকাল চোখের পাপড়ি বড় করার জন্য বাজার থেকে কৃত্রিম উপায়ে কিনা আইলেশ ব্যবহার করা হয়। অনেক মেয়েরা এটি ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু সে নিজেই জানে না এটি তার চোখের জন্য কতটা ক্ষতিকর হতে পারে।

এছাড়াও অনেক মেয়েদের চোখের আইলেশ একদম পাতলা ও কম হয়। তারা চায় তাদের চোখের আইলেশ বড় করতে। কিন্তু কিভাবে করবে সে উপায় জানা থাকে না। আজকে আমি আপনাদেরকে জানাবো প্রাকৃতিক উপায় কিভাবে চোখের আইলেশ বড় করতে হয়। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নিই চোখের আইলেশ বড় করার উপায়-

  • পেট্রোলিয়াম জেলিঃ প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে পেট্রোলিয়াম জেলি চোখের পাতায় লাগিয়ে ঘুমিয়ে পড়বেন এবং সকালে ঘুম থেকে উঠে কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ পরিষ্কার করবেন। এমনভাবে ১৫ থেকে ২০ দিন করলেই আপনি ভালো একটি রেজাল্ট পাবেন।
  • অলিভ অয়েলঃ প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে পরিষ্কার মাশকারার ব্রাশ দিয়ে অলিভ অয়েল তেল আপনার চোখের পাতায় লাগিয়ে ঘুমিয়ে পড়বেন। সকালে উঠে হালকা গরম পানি দিয়ে ভালোভাবে চোখের পাতায় এবং মুখ ধুয়ে ফেলবেন। এই উপায়েও আপনি ১৫ থেকে ২০ দিন করলে ভালো একটি রেজাল্ট পাবেন।
  • আমন্ড বা ক্যাস্টর অয়েলঃ আপনি যদি অলিভ অয়েল তেল ব্যবহার করতে না পারেন তাহলে আপনি এই তেল ব্যবহার করতে পারেন। এটিও অলিভ অয়েল তেলের মত কাজ করবে। এই তেলও ঠিক একই উপায়ে আপনার চোখের পাতায় ব্যবহার করবেন। এক মাসের মধ্যে ভালো একটি রেজাল্ট পাবেন।
  • ডিম দিয়েঃ প্রথমে আপনি যেটি করবেন সেটি হলে একটি ডিম থেকে শুধু ডিমের সাদা অংশ বের করে নিবেন এরপর ডিমের সাদা অংশের সাথে এক চামচ গ্লিসারিন মিশিয়ে ভালো মতো মিক্সচার করে নিবেন। এরপরে চোখ বন্ধ করে কটন বাদ দিয়ে ভালোমতো চোখের পাতায় লাগিয়ে নিবেন। ১৫ থেকে ২০ মিনিট রাখার পরে ধুয়ে ফেলবেন। সপ্তাহে অন্তত দুইবার এটি ব্যবহার করলে অনেক ভালো ফলাফল পাবেন।

আপনি যদি এই উপায়গুলো ব্যবহার করে আপনার চোখের আইলেশের যত্ন নেন তাহলে খুব তাড়াতাড়ি আপনার চোখের আইলেশ বড় হয়ে যাবে। সেই সাথে আপনার চোখকে দেখতে আরো অ্যাটাকটিভ লাগবে। আর এই উপায়গুলো অবলম্বন করলে আপনার আইলেশ প্রাকৃতিক উপায়ে নতুনভাবে গজাবে এবং বড় হবে।

ভ্রু ঘন করার ঘরোয়া উপায়

মুখ ও চোখের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে এক জোড়া ঘন ও কালো ভ্রু। ভ্রু যে শুধু চোখের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে এমনটি নয় এটি চোখে ঘাম পড়া থেকেও রক্ষা করে। ভ্রু যদি অতিরিক্ত মোটা হয় তাহলে সেটিকে কৃত্রিম উপায়ে নানা রকম আকৃতি দেওয়া যায়। কিন্তু যাদের ভ্রু পাতলা তারা কি করবে, তারা তো আর অন্যদের মতো স্টাইল করতে পারেনা।

বরং যাদের ভ্রু পাতলা তারা চায় তাদের ভ্রু সুন্দরও ঘন করতে। কিন্তু কিভাবে করবে বা কি করলে ঘন হয় সে উপায় আমরা জানি না। আপনি এত দূর পর্যন্ত পড়তেছেন তার মানে আপনি জানতে চান যে ভ্রু কিভাবে ঘন করতে হয়। হ্যাঁ আজকে আমি আপনাদেরকে জানাবো কিভাবে ভ্রু ঘন করা যায় ঘরোয়া উপায়ে-

  • পেঁয়াজের রসঃ পেঁয়াজের রসে রয়েছে নানান খনিজ উপাদান। এক চামচ পেঁয়াজের রসের সাথে এক চামচ মধু মিশিয়ে ভ্রু তে লাগিয়ে সারারাত রাখতে হবে। এরপর সকালে উঠে ভালোভাবে করে ধুয়ে ফেলতে হবে। এই পদ্ধতিতে আপনি দ্রুতই ঘন কালো মোটা ভ্রু পাবেন।
  • রোজমেরি তেলঃ রোজমেরি এসেনশল তেল চুলের বৃদ্ধিতে ভালো কাজ করে। বাহ্যিক ব্যবহারে এই তেল ফলিকল উজ্জীবিত করে চুল গজাতে সাহায্য করে। ভ্রু ঘন করতে ঘরোয়া পদ্ধতি হিসেবে রোজমেরি ও নারিকেল তেল একসাথে মিশিয়ে ব্যবহার করা যায়। দুই তেলের মিশ্রণ সারারাত রেখে পরদিন সকালে ধুয়ে ফেলতে হবে।
  • অলিভ অয়েলঃ এই তেল চুলের বৃদ্ধিতে বেশ ভূমিকা পালন করে এটি গবেষণায় প্রমাণিত। এই তেল ভ্রুতে লাগিয়ে ঘুমিয়ে পড়বেন। আপনি যদি এটি ১৫ থেকে ২০ দিন ব্যবহার করেন তাহলে এর উপকারিতা আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন।
  • অ্যালোভেরাঃ চুলের বৃদ্ধিতে আরেকটি উপকারী উপাদান হলো এলোভেরা এটি চুল বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে এবং চুল মজবুতও করে। একটি তাজা অ্যালো ভেরার পাতা কেটে তার জেল আলাদা করে নিতে হবে। আর সাথে সামান্য পরিমাণ নারিকেল তেল মিশিয়ে ভ্রুর ওপর ব্যবহার করতে হবে। শুষে নেওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলতে হবে। নিয়মিত ব্যবহার করলে ঘন ভ্রু পাওয়া যায়।
  • ল্যাভেন্ডার তেলঃ ঘরোয়া উপায় হিসেবে ল্যাভেন্ডার তেল ব্যবহার করে ভ্রু ঘন ও গাঢ় করতে চাইলে কয়েক ফোঁটা তেল নিয়ে ভ্রুর ওপর আলতোভাবে মালিশ করে সারারাত রেখে দিতে হবে। পরদিন সকালে ধুয়ে ফেলতে হবে। এভাবে নিয়মিত ব্যবহার করতে হবে। এক মাসের মধ্যে একটি ভাল ফলাফল পাবেন।
  • কফি পাউডারঃ ২ চা চামচ কফি পাউডারের সঙ্গে ২ টেবিল চামচ পানি মিশিয়ে নিন। ১ কাপ পানি ফুটিয়ে কফির মিশ্রণটি ঢেলে দিন। ঠান্ডা হলে ভ্রুতে লাগিয়ে রাখুন ৩০ মিনিট। একদিন পর পর ব্যবহার করুন কফির মিশ্রণ।
  • ডিমের সাদা অংশঃ ডিমে থাকা প্রোটিন ভ্রুর বৃদ্ধি বাড়াতে সাহায্য করে। ডিমের সাদা অংশ ফেটিয়ে ভ্রুতে লাগিয়ে রাখুন। ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
  • ভ্যাসলিনঃ ২ টেবিল চামচ ভ্যাসলিনের সঙ্গে ১ টেবিল চামচ ক্যাস্টর অয়েল ও ১ টেবিল চামচ নারকেল তেল মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি ভ্রুতে লাগিয়ে রাখুন সারারাত। চাইলে এটি চোখের পাপড়িতেও লাগাতে পারেন। পরদিন হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
  • লেবুর রসঃ এক টুকরো লেবু ভ্রুতে ঘষে নিন। ২০ মিনিট মতো রেখে হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগেই লেবুর রস ব্যবহার করা ভালো। কারণ সকালে রোদ লাগার সম্ভাবনা থাকে। আর রোদে ভ্রুর স্বাভাবিক রং নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

উপরের এই উপায় গুলো যদি আপনি অনুসরণ করেন এবং নিয়মিত এগুলো ব্যবহার করেন তাহলে অবশ্যই আপনার ভ্রু ঘন হবে। আর এগুলো করার জন্য আপনাকে পার্লারে যেতে হবে না বা কোন ডাক্তারখানায় যেতে হবে না। এগুলো আপনি ঘরে বসেই করতে পারবেন। তাহলে দেরি কিসের আজ থেকেই শুরু করে দিন।

চোখের ভ্রু পড়ে যাওয়ার কারণ

চোখের ভ্রু যেমন চোখ চোখে ঘাম থেকে রক্ষা করে তেমনি এটি মুখের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। ভ্রু না থাকলে মানুষকে কেমন একটা উদভট দেখায়। আপনার এই ভ্রু যদি কোন কারনে উঠে একদম পাতলা হয়ে যায় তাহলে অবশ্যই আপনার মনে কষ্ট হবে। আমাদের অনেকেরই ভ্রু উঠে যায়। কিন্তু আমরা জানতে পারি না এটা কিভাবে উঠে।

ফার্মইজি ডটইন’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আয়ুর্বেদ চিকিৎসক অনুজা বোধার বলেন, “অনেকের ভ্রু প্রাকৃতিকভাবেই পাতলা, কেউ-বা খুব বেশি প্লাকড করেন অথবা অনেকের ক্ষেত্রে ভ্রুয়ের চুল পড়ে যাওয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে যা ‘ম্যাডারসিস’ নামে পরিচিত।” এই রোগ ভ্রু ও চোখের পাপড়ি পড়ে যাওয়াকে নির্দেশ করে।

চোখের ভ্রু পড়ে যাওয়া থেকে আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে। কেননা এটি আমাদের মুখের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে, সেই সঙ্গে চোখকে ঘাম থেকে রক্ষা করে। চোখের ভ্রু যাতে না পরে সেই দিকে আমাদের বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে। চলুন তাহলে জেনে নেই চোখের ভ্রু পড়ে যাওয়ার কারণ গুলো কি-

  • শারীরিক সমস্যাঃ হাইপার থাইরয়েডিজম, হাইপার প্যারাথাইরয়েডিজম, হাইপো থাইরয়েডিয়াম, হাইপোথাইরয়েডিজম ইত্যাদি।
  • পুষ্টির সমস্যাঃ জিংক ও লৌহের ঘাটতি, হাইপোপ্রোটেনিমিয়া বা রক্তে প্রোটিন কমে যাওয়া এবং বায়োটিন বা ভিটামিন বি ৭’য়ের ঘাটতি।
  • অ্যালোপেশিয়াঃ অ্যালোপেশিয়া হলে মাথার কিছু কিছু জায়গায় যেমন চুল ঝরে ফাঁকা হয়ে যায়, তেমনই ভ্রুতেও হতে পারে এই রোগ। এ ছাড়া মাথায় খুশকি হলেও সেখান থেকে ভ্রু ঝরে যেতে পারে।
  • ঘন ঘন ভুরু ফিলাপঃ ভ্রু তুলে নিজেকে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখেন অনেকেই। কিন্তু ভ্রু তোলার কয়েক দিন পর থেকেই আশপাশে আবার ছোট ছোট লোম বের হয়। তখন দেখতে যাতে খারাপ না লাগে, তার জন্য ঘন ঘন ভুরু তোলেন অনেকে। সেক্ষেত্রে ভ্রু অনেক পাতলা হয়ে যায়।
  • সংক্রামক রোগঃ কুষ্ঠ, সিফিলিস, হার্পিসস সংক্রমণ, এইচআইভি, চুলের ফলিকলের সংক্রমণ ইত্যাদি।
  • থাইরয়েডের অভাবঃ অনেকেই জানেন না যে, শারীরিক কিছু সমস্যার কারণেও ভ্রুর লোম ঝরে পড়ে। বিশেষ করে থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হলে ভ্রুর লোম ঝরে পড়ে।
  • এক্সিমা এবং পোরিওসিসঃ প্রদাহজনিত এই দুই রোগের কারণে চুলকানি, র‌্যাশ হতে পারে। লাল ছোপ সারা মুখে ছড়িয়ে পড়ে। শুধু তাই নয়, এই দুই রোগের কারণেও ভ্রুর রোম ঝরে যেতে পারে।
  • চর্মরোগঃ ডার্মাটাইটিস (অটোপিক, সেবোরিয়েক, কন্টাক্ট ও নিউরো টাইপস) সিরোসিস, চুল ও অঙ্গের সংযোগ স্থানের সংক্রমণ।

চোখের পাপড়ি ঘন করার উপায়

চোখের সৌন্দর্যকে বাড়িয়ে তুলে চোখের পাপড়ি। আমাদের অনেকের চোখের পাপড়ি উঠে যায় বা পড়ে যায়। দিনে দুই তিনটি চোখের পাপড়ি পরা স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু যদি এর চেয়ে বেশি পড়ে তাহলে সেটি অস্বাভাবিক হয়ে দাঁড়ায়। আবার অনেকে রয়েছে একসঙ্গে অনেকগুলো পাপড়ি পড়ে যায় এবং চোখ খালি খালি দেখায়।

চোখের সৌন্দর্য পুরোটাই যেহেতু চোখের পাপড়ির উপর নির্ভর করে। সেজন্য আমরা অনেকেই চাই চোখের পাপড়ি ঘন করতে বা বৃদ্ধি করতে। চোখের ঘন পাপড়ি আমাদের চোখের সৌন্দর্যকে বৃদ্ধি করে তোলে। চলুন তাহলে জেনে নেই চোখের পাপড়ি ঘন করার উপায় গুলো কি বা চোখের পাপড়ি ঘন করবেন যেভাবে-

  • অলিভ অয়েলঃ অলিভ অয়েল এর মধ্যে অলিউরোপেইন নামক একটি ফেনোলিক যৌগ থাকে, যা চুল গজাতে এবং ঘন করতে সাহায্য করে। এক টুকরো তুলা নিয়ে অলিভ অয়েল তেলের মধ্যে একটু চুবিয়ে, তারপরে সেই তেল চোখের ওপরের পাপড়িতে এবং নিচের পাপড়িতে ভালোভাবে লাগাবেন। ১০ থেকে ১৫ মিনিট পরে হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন।
  • ভ্যাসলিনঃ ত্বক মসৃণ রাখার জন্য ভেসলিন তো আমরা অনেকেই ব্যবহার করি। আপনি কি জানেন ভ্যাসলিন চোখের পাতাকে মসৃণ করে এবং পাপড়ি ঝরা থেকে বিরত করতে সহায়তা করে। প্রতিদিন ঘুমাতে যাওয়ার আগে একটু করে ভেসলিন চোখে আরো উপরে এবং নিচের পাপড়িতে সাবধানে লাগিয়ে রাখুন।
  • ক্যাস্টর অয়েলঃ এটি একটি উপকারী তেল এই তেলে রয়েছে ৯০% রিসিনোলিয়েক অ্যাসিড। আর এই এসিড পাপড়ি ঝরে পড়া দূর করতে সহায়তা করে। এই তেলও আপনি অলিভ অয়েল তেলের মত খুব সাবধানে চোখের দুই পাপড়িতে ভালোভাবে লাগিয়ে নিবেন। চোখের ভিতরে যেন তেল না ঢুকে সেদিকে অবশ্যই লক্ষ্য রাখবেন। রাতে ঘুমানোর আগে মেখে সকালে উঠে ধুয়ে ফেলবেন।
  • ম্যাসাজঃ তেল অথবা ভ্যাসলিন দিয়ে প্রতিদিন বা একদিন পরপর চোখের পাতায় ও পাপড়িতে আলতো করে ম্যাসেজ করুন। এতে আপনার চোখের পাপড়ি দ্রুত ঘন ও লম্বা হবে।
  • নারিকেল তেলঃ চোখের পাপড়ি প্রাকৃতিক উপায়ে ঘন করতে চাইলে ব্যবহার করুন নারিকেল তেল। চোখে সব ধরনের তেল ব্যবহার করা যায় না। তবে নারিকেল তেল এক্ষেত্রে নিরাপদ। এটি চোখের পাপড়ি ঝরে যাওয়ার সমস্যাও কমায়।
  • ভিটামিন ই অয়েলঃ ভিটামিন ই অয়েল ব্যবহারে চোখের পাপড়ি ঘন হয়। এই তেল অনেকেই ব্যবহার করে থাকেন। চোখের পাপড়ির পাশাপাশি মাথার চুল বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে এটি। এই তেলও খুব সাবধানে তুলাতে করে নিয়ে চোখের পাপড়িতে আলতোভাবে লাগাতে হবে। তারপরে ১০ থেকে ১৫ মিনিট পরে ধুয়ে ফেলবেন, না হলে শুকিয়ে গেলে রেখে দিতেও পারেন।
  • গ্রিন টিঃ গ্রিন টি একটি আশ্চর্য জিনিস। প্রতিদিন এক কাপ গ্রিন টি খেলে, এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের প্রভাবে আপনার চোখের পাঁপড়ি হয়ে উঠবে ঘন-কালো। খাওয়ার পর কাপের নিচে পড়ে থাকা ভেজানো চা-পাতা তুলার উপর করে বা টি ব্যাগটি চোখের উপর দিয়ে রাখুন ৫-১০ মিনিট।

চোখের পাপড়ি পড়ে যাওয়ার কারণ

আমাদের অনেকে চোখের পাপড়ি অকারণে ঝরে পড়ে যায়। অসুস্থতা ছাড়াও প্রসাধনী ও নকল ‘আই ল্যাশ’ ব্যবহারের ফলেও এই সমস্যা বেশি হয়। চোখের পাপড়ি পড়ে গেলে চোখ দেখতে একদম অদ্ভুত লাগে। এজন্য চোখের পাপড়ি যাতে না পড়ে সেই দিকে আমাদের অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে।

নিউ ইয়র্কের কসমেটিক ডার্মাটোলজিস্ট এবং দ্য প্রো এইজিং প্লেবুকয়ের রচয়িতা পল জ্যারড ফ্র্যাঙ্ক বলেন, চোখের পাপড়ি কমে যাওয়া অসংখ্য কারণ থাকতে পারে। প্রচণ্ড মানসিক চাপ, ভুলভাল প্রসাধনী ব্যবহার, কৃত্রিম চোখের পাপড়ি ব্যবহারের ভুল ইত্যাদি।

চোখের পাপড়ি পড়ে যাওয়ার বিশেষ যে কারণগুলো লক্ষ্য করা যায় সে কারণগুলো আজকে আমরা বিস্তারিতভাবে জানবো। অনেকের অসুখ ছাড়াও চোখের পাপড়ি পড়ে যায়, কেন পড়ে যায় সেই বিষয়টি জানার জন্য আমাদের সঙ্গেই থাকুন। চলুন তাহলে জেনে নেই চোখের পাপড়ি পড়ে যাওয়ার কারণে গুলো কি বা কি কারণে পড়ে যায়-

  • অ্যালার্জিঃ চোখের পাপড়ি পড়ে যাওয়ার বা ঝরে যাওয়ার একটি প্রধান কারণ হলো অ্যালার্জি। আর মেয়েদের ক্ষেত্রে এই বিষয়টা বেশি হয় কেননা তারা নানা ধরনের মেকআপ ইউজ করে। এখন যাদের একটু অ্যালার্জি রয়েছে, তারা যদি অ্যালার্জি যুক্ত মেকআপ করে তাহলে চোখের পাপড়ি ঝরে যাবে এটাই স্বাভাবিক। এজন্য মেকআপ করার ক্ষেত্রে বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে।
  • কৃত্রিম চোখের পাপড়িঃ আমরা কৃত্রিমভাবে বাজার থেকে যে চোখের পাপড়ি কিনে চোখে লাগাই সেটি আমাদের জন্য মোটেই ঠিক না। এজন্য এটি বর্জন করতে হবে। বারবার এই চোখের পাপড়ি লাগানো এবং উঠানো করার ফলে আমাদের চোখের আসল পাপড়িগুলো দিন দিন ঝরে পড়ে যায়।
  • অতিরিক্ত ঘর্ষণঃ চোখের চারপাশ সবসময় পরিষ্কার রাখা জরুরি। তবে সংবেদনশীল এই অংশ পরিষ্কার করতে হবে খুব যত্ন সহকারে। চোখের পাপড়ি বিশেষজ্ঞ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ‘এনভিয়াস ল্যাশেস’য়ের প্রতিষ্ঠাতা ক্লেমেন্টিনা রিচার্ডসন বলেন, “যারা চোখে ‘মাস্ক’ লাগিয়ে ঘুমান তাদের চোখের পাপড়িতে অনেক বেশি ঘষা লাগে। সারারাত ঘুমানোর সময় চাপ পড়ে থাকার কারণে চোখের পাপড়ি তার স্বাভাবিক আকৃতি হারায়, দূর্বল হয়ে যায়। তাই খুব আঁটসাঁট করে মাস্ক পরা উচিত হবে না।”
  • ব্যাকটেরিয়ায় সংক্রমণঃ মেয়াদ পার হওয়া মেকআপ চোখের পাপড়ির জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এজন্য চোখে যে মেকআপ গুলো করা হয় সেই মেকআপ গুলো মেয়াদ আছে কিনা সেই বিষয়ে মেয়েদেরকে বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে। কেননা মেয়াদ উত্তীর্ণ মেকআপ আপনার চোখে এবং আপনার চোখের পাপড়ির ওপরে খারাপ প্রভাব ফেলে। যার ফলে চোখের পাপড়ি গুলো ঝরে পড়ে যায়।
  • ক্যান্সারঃ চোখের পাতায় স্কিন ক্যানসার হলেও পাপড়ি ঝরে পড়তে পারে, কারণ ক্যানসার লোমগ্রন্থিকে আক্রান্ত করে। চোখের পাতায় স্কিন ক্যানসারের উল্লেখযোগ্য লক্ষণ হলো- চোখের পাতায় লাল বা কালো বা বাদামি বিচরণশীল বৃদ্ধি, চোখের পাতায় শুকাচ্ছে না এমন ক্ষত, চোখের পাতার ত্বকে অস্বাভাবিক পরিবর্তন, চোখের পাতায় ঘনঘন সংক্রমণ এবং চোখের পাতায় ফোলা বা পুরুত্ব বেড়ে যাওয়া।এসব লক্ষণ থাকলে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
  • ট্রাইকোটিলোম্যানিয়াঃ ট্রাইকোটিলোম্যানিয়া হলো এমন একটি অবস্থা যেখানে কোনো ব্যক্তি ইমোশনাল স্ট্রেসের কারণে নিজের চোখের পাপড়ি টেনে তুলে ফেলে। এটি জেনেটিকও হতে পারে। চোখের পাপড়ি টেনে তুলে ফেলার প্রবণতা থাকলে থেরাপিস্টের শরণাপন্ন হোন।

আশা করি এই পুরো পোস্ট জুড়ে আপনি আমাদের সঙ্গে ছিলেন এবং আপনি কিভাবে চোখের পাপড়ি এবং ভ্রু যত্ন নিতে হয় সে বিষয়ে বিস্তারিত জেনে গেছেন। আশা করি আজ থেকে আপনি সতর্ক হবেন এবং অন্যকে সতর্ক হওয়ার জন্য বলবেন। আরো সুন্দর সুন্দর লাইফ স্টাইল এবং স্বাস্থ্য টিপস পেতে আমাদের সঙ্গেই থাকবেন, ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

SM TECHY এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url