রমজান মাসে ওমরাহ করার ফজিলত - রমজান মাসে দানের ফজিলত

রমজান মাস মানেই ফজিলতের মাস, বরকতময় মাস। এই মাসে ভালো কাজের নেকিকে ৭০ গুণ বৃদ্ধি করে দেওয়া হয়। এই জন্য আমরা এই মাসে বেশি বেশি ইবাদত করবো। এছাড়াও রমজান মাসে ওমরাহ করার ফজিলত কি আপনি কি তা জানেন। শুধু ওমরাহ নয়, রমজান মাসে দানের ফজিলত কি তা কি জানতে চান। 

রমজান মাসে ওমরাহ করার ফজিলত - রমজান মাসে দানের ফজিলত

এছাড়াও রমজান মাসে মারা যাওয়ার ফজিলত, রমজান মাসে রোজা রাখার ফজিলত, রমজান মাসে কোরআন তেলাওয়াতের ফজিলত এই সকল বিষয়ের ফজিলত সম্পর্কে জানতে এই পোস্টটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন এবং আমাদের সঙ্গে থাকুন।

পোস্ট সূচীপত্র

রমজান মাসে ওমরাহ করার ফজিলত

ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতের মধ্যে দুইটি ইবাদত হচ্ছে হজ ও ওমরাহ। এই দুটি ইবাদতের সওয়াব ও ফজিলত অপরিসীম। বিভিন্ন হাদিসে মাসলা-মাসায়েল হজ ও ওমরাহ ইবাদতের সওয়াব বিপুল পরিমাণ, সেই কথা উল্লেখ করেছেন। হজের সময় নির্ধারিত হলেও ওমরাহ বছরে যেকোনো সময় আদায় করা যায়।

একে তো রমজান মাস মানে বরকতের মাস। এই মাসে যেই এবাদতি করা হয় না কেন সেই ইবাদতের নেকি ৭০ গুন বাড়িয়ে দেন আল্লাহ নিজেই। সেহেতু আল্লাহ নিজেই এই এবাদত এর মান বা নেকি নিজেই বাড়িয়ে দিবেন। আবার আরেকটি কথা হয়তো আমরা সকলেই শুনেছি রমজান মাসে ওমরাহ করা হজের সমতুল্য।

আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘এক ওমরার পর আরেক ওমরাহ উভয়ের মধ্যবর্তী সময়ের (গুনাহর) জন্য কাফফারাস্বরূপ। আর জান্নাতই হলো কবুল হজের প্রতিদান। (বুখারি, হাদিস : ১৭৭৩) তাই সুযোগ-সম্মত থাকলে ওমরাহ করা উচিত।

এছাড়াও অধিক ওমরাহ করার মাধ্যমে আল্লাহতালা বান্দা রিজিকের বরকত দেন। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তোমরা ধারাবাহিক হজ ও ওমরাহ আদায় করতে থাকো। এ দুটি আমল দারিদ্র্য ও গুনাহ দূর করে দেয়। যেমন- ভাটার আগুনে লোহা ও সোনা-রুপার ময়লা-জং দূর হয়ে থাকে।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৮১০)

পবিত্র রমজান মাসে ওমরাহ পালন করলে হজের সমতুল্য নেকি পাওয়া যায়। এইজন্য যাদের সামর্থ্য ও সুযোগ রয়েছে, তারা রমজান মাসে পবিত্র ওমরাহ পালন করা উচিত। এতে রমজানের পবিত্রতা রক্ষা ও ইবাদত সুন্দরভাবে পালনের পাশাপাশি বিপুল নাকি অর্জন করা যায়।

আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক আনসারী নারীকে বলেন, আমাদের সঙ্গে হজ করতে তোমার বাধা কিসের? ওই নারী বলল, আমাদের একটি পানি বহনকারী উঠছিল কিন্তু তাতে অমুকের পিতা ও তার পুত্র (অর্থাৎ মহিলার স্বামী ও ছেলে) আরোহণ করে চলে গেছেন।

আর আমাদের জন্য রেখে গেছেন পানি বহনকারী আরেকটি উট, যার দ্বারা আমরা পানি বহন করে থাকি।’ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আচ্ছা, রমজান এলে তখন ওমরাহ করে নিয়ো। কেননা রমজান মাসের একটি ওমরাহ একটি হজের সমতুল্য।’ (বুখারি হাদিস : ১৭৮২)

আল্লাহ আমাদের সকলকে সুন্দর ভাবে পবিত্র মাহে রমজানের রোজা পালন করার তৌফিক দান করুন এবং সকলকে সুস্থ রাখুন। আমিন।

রমজান মাসে মারা যাওয়ার ফজিলত

বর্তমান সময়ে আমাদের দেশে একটি কথা প্রচলিত রয়েছে যে রমজান মাসে মারা গেলে কবরের আজাব মাফ হয়ে যায়। তাই অনেকেই পবিত্র মাসে মৃত্যুর আকাঙ্ক্ষা পোষণ করে থাকেন। এ কথাটি শুধুমাত্র লোকমুখে বেশ প্রসিদ্ধ। কিন্তু এ সম্পর্কিত সুস্পষ্ট কোন হাদিস প্রসিদ্ধ হাদিস গ্রন্থ সমূহে পাওয়া যায়নি।

যারা এ কথা বলে থাকে তারা হয়তো আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত একটি হাদিস শোনার কারণে বলে থাকেন। হাদীসটি হল- ‘আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যখন রমজান মাস আসে তখন জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেওয়া হয় আর জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেওয়া হয়।’ (সহিহ বুখারি: ৩২৭৭)

আমি মনে করি আপনারা হয়তো এই হাদিসটি শোনার পর থেকেই এই কথাটা বলেন। কিন্তু ভালো করে লক্ষ্য করলে দেখা যায় এই হাদিসে কবরের আজাব মাফ হওয়ার বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।

আবার কেউ কেউ হজরত আনাস (রা.) এর একটি বক্তব্যকে দলিল হিসেবে পেশ করে থাকেন, ‘আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রমজান মাসে মৃত ব্যক্তি থেকে কবরের আজাব উঠিয়ে নেওয়া হয়।’ কিন্তু এর সনদ নিতান্তই দুর্বল। এটি ইমাম রজব হাম্বলি তার ‘আহলুল কুবুর ওয়া আহওয়ালু আহলিহা ইলান নুশুর’ গ্রন্থে (পৃ. ১০৫) উল্লেখ করেছেন। কিন্তু এর কোনো সনদ কিংবা হাদিসগ্রন্থের নাম তিনি উল্লেখ করেননি।

মানুষ মাত্রই ভুল, তাই আমারও যে ভুল আছে বা হয়েছে এটা একে বারে সত্য। ভুলগুলো আমার পক্ষ থেকে আর শুদ্ধতা এক মাত্র আল্লাহর পক্ষ থেকে। তবে এই কাজে আমাকে আগ্রহীত করেছিলেন “হারিয়ে যাওয়া মুক্তো”।

ইমাম রজব হাম্বালী তার কিতাব আহলুল কুবুর ওয়া আহওয়ালু আহলিহা ইলান নুশুরের, “কবরবাসী থেকে কি মাঝে মাঝে আজাব উঠিয়ে নেওয়া হয়” এই শিরোনামে হাদিস এনেছে,

রমজান মাসে মারা যাওয়ার ফজিলত

অর্থঃ দুর্বল সনদে আনাস ইবনে মালেক থেকে বর্ণিত যে, রমজানে মৃতদের থেকে কবরের আজাব উঠিয়ে নেওয়া হয়। অনুরূপভাবে যে জুমার দিন বা জুমার রাতে মারা যাবে তার থেকেও কবরের ফেতনা উঠিয়ে নেওয়া হয়।

কেউ কেউ আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রা.)-এর হাদিসটি দলিল হিসেবে পেশ করে থাকেন, ‘রমজান সমাপ্তির সময়ে যার মৃত্যু সংঘটিত হয় সে জান্নাতে প্রবেশ করবে’। (হিলইয়াতুল আওলিয়া: ৫/২৩)

কিন্তু এটি দলিল হিসেবে সঠিক নয়। কারণ প্রথমত এর সনদ নিতান্তই দুর্বল। দ্বিতীয়ত এখানে জান্নাতে প্রবেশের কথা বলা হয়েছে— কবরের আজাব সংক্রান্ত কিছুই বলা হয়নি। অর্থাৎ এটি সহিহ বুখারির প্রথমোক্ত হাদিসটির মতোই।

মূল কথা, রমজান মাসে মৃত্যুবরণ করলে কবরের আজাব মাফ হয়ে যায়, এটি সরাসরি কুরআন-হাদিস দ্বারা প্রমাণিত কথা নয়। সুতরাং এমন কথা প্রচার না করাই উচিত।

একজন মানুষের কবরের আজাব হওয়া না হওয়া, জান্নাতে যাওয়া না যাওয়া, এসব নির্ভর করে তার ব্যক্তিগত আমলের ওপর। অতএব, কেউ যদি রমজান মাসে সঠিক পন্থায় রোজা পালন করে এবং ওই অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে, তা হলে আশা করা যায়, আল্লাহ তার কবরের আজাব ক্ষমা করে দেবেন এবং তাকে জান্নাতবাসী করবেন।

রমজান মাসে দানের ফজিলত

রমজান মাস মানে একটি বরকতময় মাস। এই মাসের সব নেকির কাজগুলো বেশি বেশি করার চেষ্টা করব। এই মাসে একটি নেকিকে ৭০ গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়। পবিত্র বরকতময় রমজান মাস মানুষকে দানশীলতা, বদান্যতা, উদারতা ও মহত্বের শিক্ষা দেয়।

কোনো প্রকার অপচয় না করে রোজার মাসে মানুষের সেবায় দান-সদকা করলে অভাবক্লিষ্ট মানুষের কল্যাণ হয় এবং মানবতা উপকৃত হয়। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে নবী! তাদের ধন-সম্পদ থেকে সদকা নিয়ে তাদেরকে পাক-পবিত্র করুন, (নেকির পথে) তাদের এগিয়ে দিন এবং তাদের জন্য রহমতের দোয়া করুন। (সুরা তওবা : ১০৩)।

একজন মুমিন ব্যক্তি অন্যের জন্য দুনিয়াতে যা দান করে মহান আল্লাহ তাআলা তা অত্যন্ত যত্নশীলতার সাথে লালন করে এবং তা ক্রমে বৃদ্ধি করেন। আখিরাতে এই দান বহুগুণ বৃদ্ধি অবস্থায় সেই মুমিন ব্যক্তি ফেরত পাবেন। এছাড়াও দান মানুষের মনের উদারতা বৃদ্ধি করে।

আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘যারা নিজেদের ধন-ঐশ্বর্য আল্লাহর পথে সদকা করে তাদের উপমা হলো যেন একটি শস্যবীজ, যা সাতটি শীষ উৎপাদন করে, প্রতিটি শীষে রয়েছে একশ’ শস্যদানা, আল্লাহ যাকে ইচ্ছা করেন তাকে আরো বহুগুণে বৃদ্ধি করে দেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ। (সূরা বাকারা-২৬১)

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘দানকারী আল্লাহর নিকটতম, বেহেশতের নিকটতম এবং মানুষের নিকটতম হয়ে থাকে। আর দূরে থাকে জাহান্নাম থেকে। অপরদিকে কৃপণ ব্যক্তি দূরে অবস্থান করে আল্লাহ থেকে, বেহেশত থেকে এবং মানুষের কাছ থেকে। আর কাছাকাছি থাকে জাহান্নামের। অবশ্যই একজন জ্ঞানহীন দাতা একজন কৃপণ এবাদতকারীর তুলনায় আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয়। সহিহ্ বোখারি : ১৮১৩

রমজান মাসে প্রতিটি ভালো কাজের নেকি ৭০ গুণ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে এ মাসে যত বেশি দান-সদকা করা যাবে, তা বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার প্রিয় উম্মতকে রমজান মাসে বেশি পরিমাণে দান করতে উৎসাহিত করতেন। রমজান মাসে একটি নফল আমল ফরজের মর্যাদায় সিক্ত। সে হিসেবে রমজান মাসে আমাদের প্রতিটি দান-সদকাই ফরজ হিসেবে আল্লাহতায়ালার কাছে গণ্য হবে।

হজরত আনাস রা: আরো বলেন, রাসূলল্লাহ সা:-কে জিজ্ঞাসা করা হলো, সবচেয়ে উত্তম সদকাহ কী? তিনি বললেন, ‘রমজান মাসের সদকা’। হজরত ইবনে আব্বাস রা: থেকে বর্ণিত- রাসূলুল্লাহ সা: পবিত্র রমজান মাসে বিপুল পরিমাণে দান করতেন। (সুনানে তিরমিজি-২৩৫১)

হজরত আনাস রা: বলেন, ‘নবী করিম সা:-এর চেয়ে বেশি দানশীল আমি আর কাউকে দেখিনি’। (সহিহ মুসলিম-১৮৪২)। দানশীলতা সম্পর্কে হাদিসে বর্ণিত আছে- ‘আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘হে আদম সন্তান, তুমি দান করতে থাকো, আমিও তোমাকে দান করব।’ (সহিহ বুখারি-১৬৩১)

পরিশেষে বলা যায় যে রমজান মাসে দেখে দেখে খুজে খুজে গরিব-দুঃখীকে বেশি বেশি করে দান করতে হবে। এতে করে আমাদের নেকির পাল্লা দ্বিগুণ হয়ে যাবে। এর জন্য আমরা এ রমজান থেকেই শুরু করব ইনশাল্লাহ গরীব দুঃখীদের কে দান করার। আল্লাহ সকলের দান কে কবুল করুন, আমীন।

রমজান মাসে রোজা রাখার ফজিলত

প্রতিটি মুসলিমের জন্য রমজানের রোজা কে ফরজ করে দিয়েছেন আল্লাহ নিজেই। এই জন্য রমজানের রোজার ফজিলত শুধুমাত্র তিনি দিবেন। রমজানের ফজিলত সম্পর্কে আলাদাভাবে বলার কিছু নেই। রমজানের এই ফরজ রোজার ফজিলত একমাত্র আল্লাহ তাআলাই দিবেন।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আদম সন্তানের প্রতিটি কাজই দশগুণ থেকে সাতশত গুণ বৃদ্ধি করা হয়। মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, কিন্তু রোজা ছাড়া। কেননা তা আমার জন্য, তাই আমি এর প্রতিদান দেবো। রোজা পালনকারীর মুখের (না খাওয়াজনিত) ঘ্রাণ আল্লাহর কাছে মিসকের ঘ্রাণের চেয়েও উত্তম।’ (বুখারি ১৯০৪, মুসলিম ১১৫১)

বুখারী শরীফের হাদিসে বর্ণিত রয়েছে, প্রত্যেক আমলেরই কাফফারা আছে। রোজা আমার জন্য, তাই আমি এর প্রতিদান দেবো।’ (বুখারি ৭৫৩৮, মুসনাদে আহমাদ ১০৫৫৪)

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন- َالصِّيَامُ جُنَّةٌ، وَإِذَا كَانَ يَوْمُ صَوْمِ أَحَدِكُمْ فَلاَ يَرْفُثْ وَلاَ يَصْخَبْ، فَإِنْ سَابَّهُ أَحَدٌ أَوْ قَاتَلَهُ، فَلْيَقُلْ إِنِّي امْرُؤٌ صَائِمٌ

রোজা ঢালস্বরূপ। তোমাদের কেউ যেন রোজা পালনের দিন অশ্লীলতায় লিপ্ত না হয় এবং ঝগড়া-বিবাদ না করে। কেউ যদি তাঁকে গালি দেয় অথবা তাঁর সঙ্গে ঝগড়া করে, তাহলে সে যেন বলে, আমি একজন রোজা পালনকারী।’ (বুখারি ১৯০৪, মুসলিম ১১৫১)

এজন্য আমরা সকলেই রমজানের ফরজ রোজা পালন করার চেষ্টা করব। আল্লাহ আমাদের সকলকে তৌফিক দান করুন, আমীন।

রমজান মাসে কোরআন তেলাওয়াতের ফজিলত

রমজান কোরআন নাজিলের মাস। রমজানের রোজা রেখে কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে ক্ষমা ও রহমত কামনা করার সুবর্ণ সুযোগ এবং নেকির পাল্লা দ্বিগুণ করার সুযোগ আল্লাহ আমাদেরকে দিয়েছেন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোরআন তেলাওয়াতের সময় আল্লাহর কাছে যেমন রহমত কামনা করতেন আবার তার আযাব থেকে নাজাত চাইতেন।

আল্লাহ তা'আলা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে যেভাবে কোরআন তেলোয়াত এর নির্দেশনা দিয়েছেন-

রমজান মাসে কোরআন তেলাওয়াতের ফজিলত

‘হে বস্ত্রাবৃত! রাত জাগরণ করুন, কিছু অংশ ছাড়া। অর্ধরাত কিংবা তার চেয়ে অল্প অথবা তার চেয়ে বেশি। আর কোরআন তেলাওয়াত করুন ধীরে ধীরে, সুস্পষ্ট এবং সুন্দরভাবে।’ (সুরা মুজাম্মিল : আয়াত ১-৪)

রমজান হচ্ছে অধিক পরিমাণে কোরআন তেলাওয়াতের মাস। কোরআন নাজিলের মাসে বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত ও অধ্যয়ন করা অন্য মাসের চেয়ে ৭০ গুণ বেশি সাওয়াব পাওয়ার উপায়। এটি শুধু পবিত্র রমজান মাসের বিশেষ বরকত।

কোরআন থেকে ভালো বিষয়গুলো তারাই অর্জন করতে পারে, যারা কোরআন নিয়ে গবেষণা করে; এর অর্থ বোঝার চেষ্টা করে। জবান কোরআনুল কারিম তেলাওয়াত করে, মন অনুবাদ করে এবং অন্তর তা থেকে উপদেশ গ্রহণ করে। কোরআনুল কারিম এর তেলাওয়াতকারীকে আল্লাহর রাজত্ব, শ্রেষ্ঠত্ব এবং সৃষ্টিজগতে আল্লাহর অসংখ্য নিদর্শনের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়।

মুসলমান আল্লাহকে ভয় ও মহব্বতের সঙ্গে অনুসরণ করা আরম্ভ করে। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তাঁর নিদর্শনাবলির মধ্যে একটি নিদর্শন হলো, তিনি মাটি থেকে তোমাদের সৃষ্টি করেছেন। এখন তোমরা মানুষ, পৃথিবীতে ছড়িয়ে আছ।’ (সুরা রুম : ২০)।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে রমজানের হক আদায় করে কোরআন-সুন্নাহর দিকনির্দেশনা মোতাবেক ইবাদত-বন্দেগি করার তাওফিক দান করুন। কোরআনের হেদায়েত দিয়ে নিজেদের আলোকিত করার তাওফিক দান করুন, আমিন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

SM TECHY এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url