কিডনি ড্যামেজের লক্ষণ - কিডনি কত পয়েন্ট

দেহের একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় অংশ কিডনি। এজন্য এই অঙ্গ সংক্রান্ত শারীরিক জটিলতাকে নীরব ঘাতক বলা হয়। কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার উপায় কি আপনি জানেন। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে মানুষ মারাত্মক স্বাস্থ্য জটিলতা গুলোর মধ্যে হার্ট এটাকের পরে অবস্থান করছে কিডনি ড্যামেজ ক্যান্সার। কিডনি ড্যামেজের লক্ষণ, কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার উপায় জানতে, আপনাকে এই পোস্ট মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।

কিডনি ড্যামেজের লক্ষণ - কিডনি কত পয়েন্ট
কিডনি ড্যামেজের লক্ষণ, কিডনি কত পয়েন্ট, এগুলো জানা অত্যন্ত জরুরি। কিডনির সমস্যার সমাধান কিভাবে করা যায়, কার করতে কি কি খেতে হয় এগুলো জানা আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরি। আমরা আজকে এই সকল বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। আপনি যদি এ বিষয়গুলোর সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জন করতে চান তাহলে আমাদের এই পোস্ট মনোযোগ সহকারে পড়েন।

সূচিপত্রঃ কিডনি ড্যামেজের লক্ষণ - কিডনি কত পয়েন্ট

ভূমিকা

আমাদের শরীরে যত টক্সিন তথা দূষিত পদার্থ রয়েছে তা বের করে দেওয়া মানে ছাঁকনির প্রক্রিয়াতে তাকে ইউরিনের সঙ্গে বের করে শরীরকে সুস্থ রাখাই কিডনির প্রধান কাজ। আমাদের শরীরে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হলো কিডনি। কিন্তু আমাদের কিছু অনিয়মের ফলে, কিডনি ক্রমাগত নষ্ট হতে থাকে। 

কিডনি বা লিভারের মত অঙ্গগুলি দ্রুত নষ্ট হয় না, কিন্তু দীর্ঘদিন অনিয়মের ফলে এটি আস্তে আস্তে নষ্ট হতে থাকে। কিডনি কিভাবে নষ্ট হয় এবং সেটা কিভাবে সুস্থ রাখা যায় তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।

কিডনি কত পয়েন্ট

বৃক্ক বা কিডনি মেরুদন্ডী প্রাণীদেহের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ যা দেহের রেচনতন্ত্রের প্রধান অংশ। এই কিডনির প্রধান কাজ হল রক্তকে ছেঁকে বর্জ্য পদার্থ যেমন ইউরিয়া পৃথকীকরণ ও মূত্র উৎপাদন করা। মানবদেহের সব রক্ত দিনে প্রায় ৪0 বার বৃক্কের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়। এছাড়াও দেহে পানি এবং তড়িৎ বিশ্লেষ্য পদার্থ বা ইলেকট্রোলাইট যেমন সোডিয়াম পটাশিয়াম ইত্যাদির ভারসাম্য বজায় রাখতে কিডনি সাহায্য করে।

  • পুরুষের শরীরে ক্রিয়েটিনিনের স্বাভাবিক ক্রিয়েটিনিন ০.৭ থেকে ১.৪ হয়।
  • নারীর শরীরে ক্রিয়েটিনিং এর স্বাভাবিক রেঞ্জ ০.৬ থেকে ১.২ এমজি ডি এল।
  • প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে রক্তে ক্রিয়েটিনিন ৫.০ মিলিগ্রামের হয়।
  • একটি কিডনি যাদের নেই তাদের ক্ষেত্রে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা ত্রুটির প্রতি ডেসিলিটার রক্তে ১.৮ মিলিগ্রাম পর্যন্ত স্বাভাবিক।
  • কিশোরদের ক্ষেত্রে প্রতিটি ছেলেটার রক্তে রিটেনের মাত্রা ০.৫ থেকে ১.০ মিলিগ্রাম হয়।
  • শিশুদের ক্ষেত্রে রক্তে ক্রিটেনিনের মাত্রা ০.৩ থেকে 0.৭ মিলিগ্রাম ডিএল হয়।

এর চেয়ে বেশি হলে কিডনি ড্যামেজ হয়েছে বুঝা যায়। আর কিডনির মাত্রা যদি এর মধ্যেই থাকে তখন বুঝতে হবে কিডনি সুস্থ এবং ভালো রয়েছে। যখন এই মাত্রাতে.৬ থেকে ১0 এম জিডি এল হয়ে যায় তখন বুঝতে হবে কিডনির ক্ষমতা অনেক অংশে হ্রাস পেয়েছে। এই স্বাভাবিক রেঞ্জ রক্তে ক্রিয়েটিনিং টেস্ট করে বোঝা যায়। এই টেস্টের নাম ক্রিয়েটেনিং টেস্ট এটি এই মাত্রায় থাকলে বুঝতে হবে কিডনির সুস্থ রয়েছে।

কিডনি ড্যামেজের লক্ষণ

প্রথম প্রথম কিডনি রোগের তেমন কোন লক্ষণ প্রকাশ পায় না। আস্তে আস্তে কিডনির কার্যক্রম ক্ষমতা কমতে থাকলে লক্ষণগুলো প্রকাশ পেতে শুরু করে। কিডনি রোগের লক্ষণ ও প্রতি রোধের উপায় গুলো জানা থাকলে সুস্থ জীবন যাপন করা সম্ভব। তাহলে আসুন, আমরা সুস্থ জীবন যাপনের জন্য কিডনি ড্যামেজের লক্ষণ বিস্তারিত ভাবে জেনে নেই-

প্রস্রাবে রক্তঃ একটি স্বাস্থ্যকর কিডনি সাধারণত শরীরে প্রস্রাবের সাথে রক্ত বের হয় না। কিডনি অস্বাভাবিক বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেলে তখন প্রস্রাবের সাথে রক্ত বের হয়। অর্থাৎ বলা যায় যে যখন কিডনির ফিল্টার গুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয় তখন রক্তের কোষগুলি প্রস্রাবের মাধ্যমে মধ্যে লিক হয়ে যায়।এরকম হলে আপনার বুঝতে হবে যে কিডনিতে পাথর অথবা প্রস্রাবের রক্ত টিউমার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

প্রস্রাবে সমস্যাঃ তুলনামূলকভাবে কম প্রস্রাব হওয়া কিডনি রোগের অন্যতম লক্ষণ। এছাড়াও রাতে ঘন ঘন প্রস্রাব করাও কিডনি জনিত সমস্যার লক্ষণ। এ ধরনের সমস্যা সাধারণত কিডনি ফিল্টার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে হয়। 

প্রস্রাবের সময় ব্যথাঃ প্রস্রাবের সময় যদি ব্যথা হয় তাহলে বুঝবেন এটি কিডনি সমস্যার আর একটি লক্ষণ। প্রস্রাবে ব্যথা, জ্বলন সংবেদন এগুলি মূত্রথলির সংক্রমণের লক্ষণ। এটি কিডনিতে ছড়িয়ে পড়ার পর জ্বর এবং পিঠে ব্যথা হয়।

ক্লান্তি এবং দুর্বলতাঃ লক্ষণগুলির মাঝে প্রধান একটি লক্ষণ হচ্ছে ক্লান্তী ও দুর্বলতা। পর্যাপ্ত বিশ্রামের পরেও অতিরিক্ত ক্লান্ত এবং দুর্বলবোধ করা কিডনির ক্ষতি প্রাথমিক সূচনা হতে পারে।যখন কিডনির সার্বভৌমত্ব ভাবে কাজ করে না, তখন শরীরে টক্সিন এবং বর্জ্য জমা হয়, যার ফলে ক্লান্তি এবং শক্তির মাত্রা কমে যায়।

বমি বমি ভাব ও বমিঃ কিডনির ক্ষতি শরীরের ইলেকট্রোলাইট এবং বর্জ্য পণ্যের ভারসাম্যকে ব্যাহত করতে পারে, যার বমি বমি ভাব এবং বমি হয়। ক্রমাগত এই সমস্যা বৃদ্ধি পেতেই থাকে।

চুলকানিঃ কিডনির ক্ষতির কারণে রক্তে অতিরিক্ত বর্জ্য পদার্থ জমা হলে ক্রমাগত চুলকানি এবং ত্বকে ফুসকুড়ি সৃষ্টি হয়। ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়।

শ্বাসকষ্টঃ আপনি প্রায়শই জ কেটে ব্যর্থতার সময় আপনার শ্বাস নিতে সমস্যা অনুভব করেন। এটি রক্তস্বল্পতা বা আপনার ফুসফুসের তরল জমা হওয়ার কারণে। ঠান্ডা লাগা বা অস্বাভাবিক ঠান্ডা অনুভব করা কিডনির ব্যর্থতার কারণগুলির সাথে সম্পর্কিত।

উচ্চ রক্তচাপঃ উচ্চ রক্তচাপ কিডনি ড্যামেজের কারণ এবং পরিণতি উভয় হতে পারে। ক্ষতিগ্রস্ত কিডনি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য সংগ্রাম করতে পারে, যা উচ্চ রক্তচাপের দিকে পরিচালিত করে। যা ফলস্বরূপ কিডনিকে আরো ক্ষতি করে।

ফোলাঃ কিডনি ড্যামেজের একটি হলমার্ক লক্ষণ হল ফুলে যাওয়া, এটি এডিমা নামেও পরিচিত।সাধারণত পা, গোড়ালি, হাত এগুলোকে প্রভাবিত করে। অতিরিক্ত তরল নির্মল করতে কিডনির অক্ষমতার কারণে এডিমা দেখা দেয়, যা শরীরে টিস্যুতে তরল ধারণ করে।

খাবারে অরুচিঃ বিভিন্ন কারণে খাবারে অরুচি হতে পারে। তবে খাবারে বমি ভাব এবং বমি এটি এড়িয়ে যাওয়া যাবে না। এ ধরনের সমস্যা শরীরের টনিক্স তৈরি করার কারণে হয়।

কিডনি সমস্যার সমাধান

সাধারণত কিডনিতে যদি মারাত্মক ক্ষতির সৃষ্টি হয়, তাহলে পূর্ব অবস্থায় ফেরানো সম্ভব হয় না।প্রাথমিক পর্যায়ে কিডনি রোগ নির্ণয় করে, আপনার কিডনির অবস্থা বুঝে চিকিৎসা শুরু করা অত্যন্ত জরুরী। কারণ কিডনির সমস্যা থাকলে আপনার হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে, তাই খুব শীঘ্রই এই অবস্থার চিকিৎসা করা দরকার।

আসুন জেনে নেই কিডনির সমস্যার সমাধান কিভাবে করা যায়-

ভিটামিন সিঃ কিডনির সমস্যার সমাধান করার জন্য ভিটামিন সি যুক্ত খাবার খাওয়া অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। শরীরে অক্সিডেটিভ ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে অ্যান্টি্ক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ উপাদান বেশ কার্যকারী। আপনি যদি কিডনির সমস্যা থেকে বাঁচতে চান তাহলে ভিটামিন সি যুক্ত খাবার খান।

হাইড্রেট থাকাঃ যতটা সম্ভব ব্যাকটেরিয়া দূর করতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে। কিডনির রোগ বা মারাত্মক সমস্যা দূর করতে কিডনির মধ্যে থাকা ব্যাকটেরিয়াকে বাইরে বের করতে পানি পান করার অভ্যাস অত্যন্ত জরুরি। সারাদিনে অন্তত ২ থেকে ৩ লিটার পানি পান করা উচিত।

কফি ও অ্যালকোহলঃ শরীরের যাবতীয় টক্সিন দূর করার কাজের সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করে কিডনি। স্বাভাবিকভাবে অতিরিক্ত মদ্যপান ও কফি খাওয়ার ফলে শরীর থেকে অতিরিক্ত টক্সিন দূর করতে কিডনির ওপর দারুন প্রভাব পড়ে। অতিরিক্ত কাজের চাপ থাকায় কিডনির কোষগুলোর কর্মক্ষমতা অনেকটা কমে যায়, যার ফলে কিডনির মারাত্মক সমস্যা দেখা দিতে পারে। 

ক্রানবেরির জুসঃ ঘরোয়া উপায়ে কিডনির সমস্যা সমাধান করতে ক্রানবেরির জুস খাওয়া যেতে পারে। ইউরিনারি ট্রাক্ট ইনফেকশন প্রতিরোধের জন্য এই জুস অত্যন্ত উপকারী। এর মধ্যে পাওয়া যায় প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে লড়াই করতে এবং কিডনির কোষগুলিকে অ্যাক্টিভ করে তুলে।

প্রোবায়োটিকঃ কিডনি ফেলিওর রোধ করতে ঘরোয়া উপায়ে প্রোবায়োটিক যুক্ত খাবার খাওয়া দারুণ কার্যকরী। শরীরের মধ্যে ভাল ব্য়াকটেরিয়া প্রবেশ করানো, কিডনির ফিল্টার পদ্ধতিকে আরও সহজ ও দ্রুত করতে এই প্রোবায়োটিক অনেক ভূমিকা পালন করে।

প্রস্রাবঃ কখনোই প্রস্রাব চেপে রাখবেন না। এতে সংক্রমণের (ইনফেকশন) আশঙ্কা থাকে।

ডায়াবেটিসঃ আপনার বয়স ৪০ বছরের বেশি হয়ে গেলে নিয়মিত বছরে অন্তত একবার ডায়াবেটিস ও ব্লাড প্রেশার পরীক্ষা করান। যাদের ডায়াবেটিস বা ব্লাড প্রেশার থাকলে তা নিয়ম মেনে নিয়ন্ত্রণে রাখুন।

ওষুধঃ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনও ওষুধ, বিশেষ করে ব্যথানাশক (পেনকিলার) ওষুধ বা কোনও অ্যান্টিবায়োটিক খাবেন না।

কিডনি পরিষ্কার করে এই ৯ খাবার

কিডনি আমাদের শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। এই অঙ্গটি শরীরের যাবতীয় খারাপ পদার্থ শরীরের বাইরে বের করে দেয়। এরপরও আমরা এই বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের প্রতি তেমন গুরুত্ব দেয় না। সেই কারণে কিডনি রোগীর সংখ্যা এখন বাড়ছে। এমনকী কিডনিতে জমছে টক্সিন।

এক্ষেত্রে কিছু খাবার অবশ্যই কিডনি ভালো রাখতে পারে, আসুন জেনে নেই কোন কোন খাবার কিডনি পরিষ্কার করে-

আপেলঃ প্রচলিত রয়েছে "প্রতিদিন একটা আপেল খান আর ডাক্তারকে দূরে রাখুন" কথাটা কিডনির ক্ষেত্রেও সত্য। আপেল উচ্চ আঁশযুক্ত খাবার, এতে অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি আছে যা বাজে কোলেস্টেরল দূর করে হৃদরোগ প্রতিরোধ করে থাকে। এছাড়া এটি ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়। আপেল কাঁচা বা রান্না করে অথবা প্রতিদিন এক গ্লাস আপেলের জুস খাওয়ার অভ্যাস করুন।

ক্যানবেরি জুসঃ চেরির মতো ক্যানবেরিতেও রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন-সি ও ম্যাগনেসিয়াম। এই দুটি উপাদান কিডনির ক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। নিয়মিত ক্যানবেরি জুস খেলে মূত্রথলির সংক্রমণ কমে যায়। সেই সঙ্গে এটি কিডনিও পরিষ্কার করে। এছাড়া কিডনিতে পাথর জমার ঝুঁকিও কমে যায়।

সবুজ শাকসবজিঃ নিয়মিত সবুজ শাকসবজি খেতে হবে। বেশিরভাগ শাকসবজিতে ভিটামিন-সি, কে, ফাইবার ও ফলিক এসিড থাকে। এগুলো রক্তচাপ কমায়, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে এবং কিডনি জটিলতা কমায়।

হলুদঃ এলার্জি থেকে ত্বককে রক্ষা করা, ত্বককে পরিষ্কার রাখার পাশাপাশি কিডনির রক্ষাও করে হলুদ। নিয়মিত হলুদ খেলে ক্যানসারের ঝুঁকি কমে। সেই সঙ্গে কিডনিও পরিষ্কার হয়। এতে থাকা কারকুমিনে অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি উপাদান কিডনি রোগ ও পাথর জমা হওয়া রোধ করে।

রসুনঃ রসুন ইনফ্লামেটরি এবং কোলেস্টেরল কমাতে অনেক বেশি কার্যকর। এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান আছে, যা দেহের প্রদাহ দূর করে থাকে। তবে রান্না করে খেলে এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায় না। ভালো হয় সকালে খালি পেটে কাঁচা রসুন খাওয়া। এটি হার্ট ভালো রাখার পাশাপাশি কিডনিকেও ভালো রাখে। 

আদাঃ কিডনিকে আরও কার্যকরী করতে আদা খাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ কিডনিকে ভাল রাখতে আদা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আদা কিডনিতে রক্তের চলাচল বাড়িয়ে কিডনিকে সচল ও সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এর ফলে কিডনির কর্মক্ষমতা আরও বেড়ে যায়। যদি নিয়মিত কাঁচা আদা, আদার গুড়া কিংবা জুস করে খাওয়া যায় তাহলে তা কিডনি পরিষ্কারে ভূমিকা রাখে।

অলিভঅয়েলঃ গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিনের রান্নায় অন্যান্য তেলের চেয়ে অলিভঅয়েল ব্যবহার করা বেশি স্বাস্থ্যকর। এতে অলিক এসিড, অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি ফ্যাটি এসিড আছে, যা কিডনি সুস্থ রাখার পাশাপাশি ক্যানসার প্রতিরোধ করে থাকে।

লেবুর শরবতঃ প্রতিদিন লেবু মেশানো পানি খেলেও কিডনি পরিষ্কার হয়। লেবুতে যে এসিড উপাদান আছে তা কিডনিতে জমা হওয়া পাথর ভাঙতে বেশ কার্যকর। লেবুতে যে সাইট্রাস উপাদান আছে তা কিডনিতে থাকা ক্রিস্টালদের পরস্পরের জোড়া লাগতে বাধা দেয়।

ড্যান্ডেলিয়নঃ এটি হলো এক ধরনের বন্য হলুদ ফুলের গাছ। এর মূল এবং পাতা শুকিয়ে চা বানিয়ে খেতে হয়। এটি প্রস্রাবের পরিমাণ বাড়ায় এবং দেহ থেকে অতিরিক্ত পানি বের করে দেয়। এ ছাড়া পেটের স্ফীতি কমায়। এটি প্রাকৃতিকভাবে কিডনিকে পরিষ্কার করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার উপায়

  • কিডনি ভালো আছে কিনা সেটা বোঝার সবচেয়ে সেরা উপায় হলো জিএফআর অথবা সিসিআর টেস্ট করা। এইখানে জিএফআর বলতে বোঝায় গ্লোমেরুলার ফিলট্রেশন রেট অন্যদিকে সিসিআর বলতে বোঝায় ক্রিয়েটিনিন ক্লিয়ারেন্স রেট। আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন যদি জিএফআর ৯০ এর উপর হয়ে থাকে তাহলে। যদি জিএফআর ১৫-এর নিচে নেমে যায় তাহলে ধরে নিবেন শেষ পর্যায়ে।
  • সিরাম ক্রিয়েটিনিন এবং রক্তে ইউরিয়া ও পরীক্ষা করা হয় কিডনির লক্ষণ বোঝার জন্য। কোন ক্ষেত্রে দেখা যায় কোন রকম লক্ষণ ছাড়াই কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায়। যখন শেষ পর্যায়ে চলে যায় তখন আস্তে আস্তে কিডনির লক্ষণ বোঝা যায়।
  • কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার উপায় বা কিডনির সমস্যায় লক্ষণ গুলি হলো; খাদ্যে অরুচি, বমি বমি ভাব, পায়ে পানি আসা, মুখ ফুলে যাওয়া, সারা শরীরে পানি আসা বা ফুলে যাওয়া, শারীরিক শক্তি কমে যাওয়া ইত্যাদি।
  • ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের উচিত বছরে কমপক্ষে দুইবার ACR ও GFR এই দুইটি সিম্পল টেস্ট করানো, ন্যাশনাল কিডনি ফাউন্ডেশন থেকে জানানো হয়েছে এই দুইটি টেস্ট করলে বোঝা যাবে কিডনি ভালো আছে কিনা।

কিডনির সমস্যা হলে কোথায় কোথায় ব্যথা হয়

  • বিশেষজ্ঞদের মতে কোন রকম ব্যথা বেদনা ছাড়াই কিডনি খারাপ হয়ে যেতে পারে। কিডনির সমস্যা উপসর্গ দেখা দিতে পারে। যাদের পরিবারে কিডনির অসুস্থ আছেন বিশেষ করে তাদের ক্ষেত্রে বেশি সর্তকতা অবলম্বন করা খুবই দরকার।
  • সাধারণত কোমর ব্যথায় সাধারণ জ্বর হয় না তবে টিউমারের টিভি ইত্যাদি এছাড়া।
  • শরীরের দুর্বলতা রক্তশূন্যতা বমি বমি ভাব ইত্যাদি এসবের কারণে কোমরের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • বিশ্রাম ও ব্যথানাশক ঔষধ সেবন করলে আপনার জন্য ভালো হবে কিন্তু বন্ধ করলে ব্যথা আবার ফিরে আসবে।

আশা করি আপনি আমাদের এই পোস্টটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়েছেন। আপনি যদি আমাদের এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়েন, তাহলে আপনি কিডনির সম্পর্কে যাবতীয় সবকিছু জানতে পারবেন। এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ার পরে অবশ্যই আপনার গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্যটি আমাদের সঙ্গে শেয়ার করবেন, ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

SM TECHY এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url