ইংরেজি ভাষা কে আবিষ্কার করেন - কোন কোন দেশের মাতৃভাষা ইংরেজি

ইংরেজি ভাষাকে বলা হয় আন্তর্জাতিক ভাষা এবং এটি সরকারিভাবে স্বীকৃতি প্রাপ্ত একটি ভাষা। এখন মনে প্রশ্ন হল ইংরেজি ভাষা কে আবিষ্কার করেন বা কোন কোন দেশের মাতৃভাষা ইংরেজি। ইংরেজি ভাষাতে কথা বলব আর ইংরেজি ভাষার ইতিহাস সম্পর্কে জানবো না তা তো হয় না। ইংরেজি ভাষায় কে আবিষ্কার করেন বা ইংরেজি ভাষার জনক কে তা জানতে আমাদের সঙ্গেই থাকুন।

ইংরেজি ভাষা কে আবিষ্কার করেন - কোন কোন দেশের মাতৃভাষা ইংরেজি

এছাড়াও আরো জানতে পারবেন ইংরেজি ভাষা কোথা থেকে এসেছে, ইংরেজি কেন আন্তর্জাতিক ভাষা, ইংরেজি ভাষার উৎপত্তি কোন ভাষা থেকে এবং কোন কোন দেশের মাতৃভাষা ইংরেজি। এ সকল প্রশ্নের উত্তরে বিস্তারিতভাবে এই পোস্টের মধ্যে জানতে পারবেন। তাই সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

পোস্ট সূচিপত্র

ইংরেজি ভাষা কে আবিষ্কার করেন

আমরা তো সেই ছোটবেলা থেকে বাপ দাদাদের থেকে শুনে আসতেছি যে ইংরেজরা যখন বাংলার মানুষদেরকে শাসন করতো তখন থেকে ইংরেজ ভাষা প্রচলিত হয়। অর্থাৎ ব্রিটিশ ইংরেজরা ইংরেজি ভাষা বাংলার মানুষের মাঝে ছরিয়ে দেয়। সেই থেকে আমরা ইংরেজি ভাষার সাথে বেশি পরিচিত।

এখন আমাদের মনে প্রশ্ন জাগে এই ইংরেজি ভাষা কে আবিষ্কার করেন বা ইংরেজি ভাষার জনক কে। আসলে ইংরেজি ভাষা আবিষ্কার করেন কে বা ইংরেজি ভাষার জনক কে এমন কাউকে এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে ইংরেজির সাহিত্যের জনক রয়েছেন। ইংরেজী সাহিত্যের জনক হলো জিওফ্রে চসার (Geoffrey Chaucer)।

ইংরেজি ভাষা কোথা থেকে এসেছে

ইংরেজি ভাষার ইতিহাস বা ইংরেজি ভাষা কোথা থেকে এসেছে এই সম্পর্কে যদি বলতে চাই তাহলে সর্বপ্রথমে চলে যেতে হবে ইংরেজি ভাষার উৎপত্তি হয়েছিল কোথা থেকে। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নিয়েই ইংরেজি ভাষার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস।

জার্মানীয় গোত্র অ্যাংগল্‌স, স্যাক্সন ও জুটদের ভাষা থেকে ইংরেজি ভাষার উৎপত্তি হয়। ১০৬৬ সালে উত্তর ফ্রান্সের নরমদি অঞ্চলে বসবাসকারী নর্মান জাতি ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে ইংল্যান্ড আক্রমণ করে। নর্মানদের ইংল্যান্ড বিজয়ের পর প্রায় ৩০০ বছর ধরে নর্মান বংশোদ্ভূতরাই ইংল্যান্ড শাসন করেছে। এসময় রাজকীয় ও প্রশাসনিক কাজকর্ম কেবল নর্মানদের কথ্য এক ধরনের প্রাচীন ফরাসি ভাষায় সম্পূর্ণ হত।

ওই যুগে বিপুল পরিমাণ ফরাসি শব্দ প্রাচীন ইংরেজি ভাষায় আত্তীকৃত হয়ে যায়, ইংরেজি ভাষার বেশিরভাগ বিভক্তি লুপ্ত হয় এবং এর ফলস্বরূপ মধ্য ইংরেজি ভাষার আবির্ভাব ঘটে। প্রাচীন ও মধ্য ইংরেজি সবচেয়ে বিখ্যাত সাহিত্যকর্মের মধ্যে রয়েছে বেওউল্‌ফ এবং চসারের দ্য ক্যান্টারবেরি টেলস।

১৫০০ সালের দিকে বিরাট স্বরধর্মী স্বর সংঘটিত হয় এবং আধুনিক ইংরেজির উদ্ভব ঘটে। শেক্সপিয়ারের রচনা সহ আধুনিক ইংরেজি সাহিত্যর পুরোটাই এই আধুনিক ইংরেজিতে লেখা। এথনোলগ অনুসারে ইংরেজি ভাষার মাতৃভাষীর সংখ্যা প্রায় ৩৪ কোটি। মাতৃভাষীর সংখ্যা অনুযায়ী ইংরেজির স্থান ম্যান্ডারিন, হিন্দি ও স্পেনীয় এই ভাষা গুলোর পরে।

প্রথমে ইংল্যান্ড ওপরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, বৈজ্ঞানিক ও সাংস্কৃতিক প্রভাবের কারণে বিশ্বের অন্য যে কোন ভাষার চেয়ে ইংরেজি বেশি বিস্তার লাভ করেছে। ইংরেজি প্রায় ৫২ টি দেশের জাতীয় ও সরকারি ভাষা। বিশ্বের ইন্টারনেট ব্যবহারকারী জনসংখ্যা ৩৫ শতাংশ ইংরেজি ভাষী। আধুনিক যোগাযোগে ও বিভিন্ন পেশায় ইংরেজির ব্যাপক ব্যবহারের কারণে এটি বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি অধিক দ্বিতীয় ভাষা। সাংস্কৃতি ও প্রযুক্তির নতুন নতুন আন্তর্জাতিক পরিভাষার অধিকাংশ ইংরেজি থেকে এসেছে।

কোন কোন দেশের মাতৃভাষা ইংরেজি

বিভিন্ন দেশের মাতৃভাষা ভিন্ন ভিন্ন। কিন্তু পুরো পৃথিবীর আন্তর্জাতিক ভাষা হচ্ছে ইংরেজি ভাষা। ইংরেজি ভাষাকে সরকারিভাবে আন্তর্জাতিক ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। আমাদের বাংলাদেশের মাতৃভাষা যেমন বাংলা। তেমনি অনেক ইংরেজ দেশ রয়েছে যে দেশের মাতৃভাষা হচ্ছে ইংরেজি।

চলুন জেনে নেই কোন কোন দেশের মাতৃভাষা ইংরেজি- যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, আয়ারল্যান্ড, ও অনেক ক্যারিবীয় দেশের প্রথম ভাষা বা মাতৃভাষা হলো ইংরেজি। এছাড়াও ভারত, ফিলিপাইন, পাকিস্তান ও অনেক আফ্রিকান দেশে ইংরেজি সরকারি ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।

ইংরেজি কেন আন্তর্জাতিক ভাষা

ইংরেজরা বিশ্বের ৯৪ টি দেশকে নিজেদের আয়ত্বে এনে উপনিবেশ তৈরী করেছিল। এসব দেশে তাদের আধিপত্ব চলতে থাকে। কাজেই তাদের ইচ্ছায় বিশ্বের অনেক দেশে ইংরেজি ছড়িয়ে পরে। এছাড়া তারা ব্যাবসায় কাজে অনেক দেশে গিয়েছে এবং সেখানে নিজেদের ভাষা ছড়িয়ে দিয়েছে। এভাবে বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই অল্প হলেও ইংরেজির প্রচলন হয় তখন থেকে। সম্ভবত এজন্যই ভাষাভাষী জনসংখ্যার দিগ দিয়ে তৃতীয় হলেও ইংরাজিকেই আন্তর্জাতিক ভাষা করা হয়।

তাছাড়াও বিশ্বের অধিকাংশ দেশে ইংরেজি প্রচলিত আছে। এছাড়াও ইংরেজি একটি সহজ ভাষা যার মাত্র ২৬ টি বর্ণ আছে এমনকি উচ্চারণেও নেই তেম ঝামেলা। তাই আন্তর্জাতিক করা হয়েছে যাতে সকলে এক ভাষায় সকলের সাথে ভাব আদান প্রদান করতে পারে।

ইংরেজি ভাষার উৎপত্তি কোন ভাষা থেকে

ইন্দো-ইউরোপীয়ান ভাষাপরিবারের অন্তর্গত জার্মানিক ভাষাগোষ্ঠীর একটি ভাষা বিশেষ।এ্যাংল্‌স, স্যাক্সন ও জুটদের ভাষার সমন্বয়ে এই ভাষার উৎপত্তি ঘটেছিল বর্তমান ইংল্যান্ডে।ধারণা করাহয়, ৪৫০খ্রিষ্টাব্দের দিকে কেল্টীয় ভাষা ভাষীর ব্রিটিশ দ্বীপ পুঞ্জের দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলে বসবাস করতো।এই সময় জার্মান ভাষা গোষ্ঠীর এ্যাংল্‌ সওস্যাক্সনরা এদের পরাজিত করে এই দ্বীপ পুঞ্জ বসতি স্থাপন করে।

এদের ভাষার সংমিশ্রণে ইংরেজি ভাষার আদিরূপ তৈরি হয়েছিল।এই অঞ্চলের এই ভাষা কালক্রমে মূল জার্মান ভাষা থেকে পৃথক হয়ে যায়।খ্রিষ্টীয় ৮ম ও ৯ম শতকে নরওয়েজিয়া অঞ্চল থেকে ভাইকিংরা এইঅঞ্চলের উপর আধিপত্য বিস্তার করে।ফলে আদি ইংরেজি ভাষায় ভাইকিংদের প্রাচীন নর্স ভাষার শব্দের অনুপ্রবেশ ঘটে।ফলে এই ভাষাটি অন্যান্য ভাষা থেকে আরও বেশি স্বতন্ত্র ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার দিকে এগিয়ে যায়।

১০৬৬ খ্রিষ্টাব্দে উত্তর ফ্রান্সের নরমঁদি অঞ্চলে বসবাসকারী নর্মান জাতি, ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে ইংল্যান্ড দখল করে নেয়।এর পরে প্রায় ৩০০বছর ধরে নর্মান বংশোদ্ভূত রাজপুরুষরা ব্রিটিশদ্বীপ পুঞ্জ শাসন করে।এই সময় রাজকীয় ও প্রশাসনিক কাজকর্ম নর্মানদের প্রাচীন ফরাসি ভাষায় সম্পন্ন হত।এইসময়ে বিপুল পরিমাণ ফরাসি শব্দ প্রাচীন ইংরেজি ভাষায় প্রবেশ করে।এই নব্য মিশ্র ভাষা প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় ইংরেজি ভাষার সৃষ্টি করে।

এই সময়ের ইংরেজির সবচেয়ে বিখ্যাত সাহিত্য কর্মের মধ্যে আছে বেওউল্‌ফ এবং চসারের দ্য ক্যান্টারবেরি টেলস।১৫০০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে আধুনিক ইংরেজি ভাষার উদ্ভব ঘটে।এই সময়ের বিখ্যাত কবি শেক্‌সপিয়ারের রচনাসহ বহু সাহিত্য রচিত হয়েছিল। প্রথম ইংরেজী গ্রামার লেখা হয় উইলিয়াম বুলোকার (১৫৩০-১৬০৯ খ্রিষ্টাব্দ) দ্বারা।

বর্তমানে ইংরেজি মাতৃভাষা বা রাষ্ট্রীয় ভাষা হিসেবে প্রচলিত রয়েছে, যুক্তরাজ্য, মার্কিনযুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, আয়ারল্যান্ড নিউজিল্যান্ড ও বেশকিছু ক্যারিবীয় দেশে।এছাড়া ব্রিটিশশাসিত উপনিবেশ গুলোতে এই ভাষা দ্বিতীয় সরকারি ভাষা হিসেবে প্রচলিতআছে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

SM TECHY এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url