চিনা বাদামের উপকারিতা - ভেজা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা

আড্ডা জমবে আর বাদাম হবে না তা কখনো হয় না। আমরা প্রতিনিয়ত নানা ধরনের বাদাম খেয়ে থাকি। কিন্তু চিনা বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা কি থাকি আমরা জানি। চিনা বাদামের বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে যা আমাদের শরীরকে মজবুত এবং সুস্থ রাখে। চিনা বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা কি? তা আমরা আপনাকে জানাবো। 

চিনা বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা

চিনা বাদাম যেমন একটি পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ উপাদান ঠিক তেমনি এর উপকারিতা অনেক। বাদাম কে যদি আমরা নিয়ম করে খাই তাহলে এর উপকারিতা আমরাঅবশ্যই পাবো। সেই সঙ্গে সকালে কাঁচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা আরো অনেক বেশি। আপনি যদি এই পোস্টটি সম্পন্ন মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে চিনা বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

পোস্ট সূচিপত্রঃ চিনা বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা

চিনা বাদামের উপকারিতা

আমরা যদি ইসলামিক জালসায়, কিংবা এদিকে সেদিকে ঘোরাঘুরি করার সময়, অথবা পার্কে বসার সময় আমাদের হাতে এক ভাঙ্গা চিনা বাদাম অবশ্যই উঠবে। কিন্তু আমরা কি নিয়মিত নিয়ম করে চিনা বাদাম খাই, সবারই উত্তর হবে না। কিন্তু আমরা জানি না অন্যান্য খাবারের চেয়ে চিনা বাদামে অনেক বেশি উপকারিতা রয়েছে।

চলুন তাহলে চিনা বাদামের কয়েকটি উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেই-

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করেঃ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য যে খাবারগুলো রক্তের সুগারের মাত্রা বৃদ্ধি করে না সেগুলো স্বাস্থ্যসম্মত। চীনা বাদাম ডায়াবেটিস রোগীর জন্য একটি স্বাস্থ্যসম্মত খাবার, কারণ এটি রক্তের সুগারের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে। চীনা বাদামের মধ্যে রয়েছে শর্করা, প্রোটিন, ফ্যাট এবং ফাইবার। গবেষণায় দেখা যায় যে একজন ডায়াবেটিস রোগী যদি নিয়মিত বাদাম খায় তাহলে তার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।

হার্টের রোগ প্রতিরোধ করেঃ বর্তমানে এ রোগ মানুষের অকাল মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে সবচেয়ে কমন সমস্যা হচ্ছে যে উচ্চ রক্তচাপ। অনেক গবেষণা থেকে দেখা গেছে যে, আপনি যদি নিয়মিত চিনা বাদাম খান তাহলে হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা। চিনা বাদামের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভালো মানের ফ্ল্যাট রয়েছে যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। যদিও বাদামের মধ্যে সোডিয়াম রয়েছে যা উচ্চ রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার একটি কারণ, কিন্তু এটি অতি সামান্য পরিমাণ। সে ক্ষেত্রে অধিক পরিমাণের পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম যা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে অধিক সাহায্য করে।

পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা কমায়ঃ পৃথ্বলিতে পাথর হওয়া বয়স্ক মানুষদের জন্য একটি কমন সমস্যা। বিশেষত মহিলাদের ক্ষেত্রে অধিক ঝুঁকি রয়েছে। পিত্তথলির পাথর হওয়ার সম্ভাবনা কমাতে চেনা বাদাম খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন। এক গবেষণা থেকে দেখা গেছে মাঝেমধ্যেই চিনা বাদাম খেয়ে থাকেন এ ধরনের পুরুষ ও মহিলা উভয়েরই ক্ষেত্রে পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম রয়েছে।

ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করেঃ চীনা বাদামে প্রচুর পরিমাণে ফ্ল্যাট বা চর্বি এবং ক্যালরি রয়েছে যার ফলে অনেকেই মনে করেন যে এটি ওজন বৃদ্ধি করে। এ ব্যাপারে নিশ্চিত করার জন্য একদল চিকিৎসক গবেষণা করে দেখেছেন যে, যেসব ব্যক্তি প্রতিদিন ১০০ গ্রাম চিনা বাদাম খেয়েছে তাদের শরীরে ওজন বাড়েনি বরং তারা আট সপ্তাহে তিন কেজি ওজন কমেছে। এখান থেকে বুঝা যায় যে চিনা বাদাম ওজন বাড়ায় না বরং ওজন কমায়। এবং ওজনকে নিয়ন্ত্রণ রাখতে সহায়তা করে।

ক্যান্সার প্রতিরোধ করেঃ গবেষণায় দেখা গেছে যে বয়স্কদের জন্য নিয়মিত বাদাম খাওয়ার ফলে ক্যান্সার হওয়ার ঝুকিয়ে কমে যায়, বিশেষভাবে পাকস্থলীতে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়। এছাড়াও আন্টি অক্সিডেন্ট ও ফটোকেমিক্যাল এর প্রভাবে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়।

যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ বর্তমান সময়ে আমাদের কিছু বদ অভ্যাসের জন্য আমরা অনেকেই যৌন সমস্যায় ভুগি। এই সমস্যা প্রতিকারে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে, এর পাশাপাশি আপনি সহায়ক খাবার হিসাবে বাদাম খেতে পারেন। কারণ চিনা বাদামের মধ্যে রয়েছে Arginine নামক একটি উপাদান, এটি আপনার লিঙ্গের মধ্যে রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি করে দিবে। এছাড়াও বাদামী বিদ্যমান ভিটামিন ই এবং মিনারেল সমূহ শুক্রানুর সংখ্যা ও গুণগত মান বৃদ্ধি করে। 

আরো পড়ুনঃ কাঁচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা 

চুল গজাতে সহায়তা করেঃ ভিটামিন ই ও উপকারী ফ্যাট সমৃদ্ধ চীনা বাদামের তেল নিয়মিত ব্যবহার ফলে মাথায় নতুন চুল গজায়। প্রতিদিন স্বাভাবিকভাবে মাথা থেকে অনেক চুল পড়ে যায় আর সেই সাথে নতুন করে যাদের চুল গজায় না তাদের মাথায় চুল পাতলা হয়ে যায়। আর তাই নতুন চুল গজানোর জন্য নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের পাশাপাশি চিনা বাদামের তেল ব্যবহার করুন।

ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করেঃ চিনা বাদামের মধ্যে ভিটামিন ই রয়েছে যায় এন্টি এজিং হিসেবে কাজ করে। অর্থাৎ তোকে বয়সের ছাপ দূর করে এবং সেই সাথে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।এছাড়া আপনি আপনার ত্বকের রুক্ষতা দূর করতে চেনা বাদামের তেল ব্যবহার করতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনাকে প্রথমে চেনা বাদামের তেল আপনার মুখে এবং পুরো শরীরে মেখে নিয়ে ২০ থেকে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করার পর ধুয়ে ফেলুন।

জয়েন্টের ব্যথা দূর করতেঃ বিশেষ করে বৃদ্ধ মানুষদের বাত এবং হাঁটুর ব্যথা হয়ে থাকে। প্রতিনিয়ত ওষুধ খেয়ে কিডনি ড্যামেজ না করে, আপনি চীনা বাদামের তেল ব্যবহার করতে পারেন। আপনার যেখানে যেখানে ব্যথা সেখানে আপনি এটি ভালোভাবে মালিশ করুন, যদি তেলটি একটু হালকা গরম হয় তাহলে অনেক উপকার পাওয়া যাবে।

এছাড়াও চিনা বাদামে আরো বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে। তবে তাদের মধ্যে সবথেকে বেশি এই উপকারিতা গুলো একটু বেশি দেখা যায়। সেজন্য অবশ্যই আপনি আপনার খাদ্য তালিকায় চিনা বাদাম রাখবেন।

চিনা বাদামের অপকারিতা

চীনা বাদাম যেমন অধিক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন এবং এর উপকারিতা অনেক ঠিক একই ভাবে এর কিছু অপকারিতাও রয়েছে। চিনা বাদামের উপকারিতা সম্পর্কে জানার পাশাপাশি আপনার অপকারিতা সম্পর্কেও জানা প্রয়োজন। আমরা উপরে চীনা বাদামের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এবার আমরা জানবো চীনা বাদামের কি কি অপকারিতা রয়েছে-

  • আপনি যদি একটু শুকনা হোন, তাহলে আপনার চীনা বাদাম না খাওয়াই ভালো হবে। কারণ চীনা বাদাম ওজন কমাতে সাহায্য করে। এবং হজম শক্তিকে কমিয়ে দেয়। আপনি যদি চিকন হয়ে থাকেন তাহলে চিনা বাদাম খাওয়ার ফলে আপনি আরো চিকন হয়ে যাবেন।
  • চিকিৎসকদের মতে এটি খালি পেটে খাওয়া উচিত নয়। যদি সকালবেলা একান্ত খেতে হয়, তাহলে কিছুক্ষণ জলে ভিজিয়ে রাখুন। এরপরে খেলে এটি ভালোমতো হজম হবে। আপনি যদি চিনাবাদাম ভিজিয়ে খান তাহলে এর ভিতরে উপস্থিত এন্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফ্ল্যাভোনয়েডের মতো উপাদান শরীরে ভালো কাজ করে।
  • যাদের অ্যালার্জি আছে তাদের অতিরিক্ত চীনা বাদাম খেলে গলা ব্যথা নাক দিয়ে জল পরা ত্বকের সমস্যা হজমের সমস্যা শ্বাসকষ্ট হতে পারে।
  • একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের মতে আপনার প্রতিদিন মাত্র ১৬ টি চিনাবাদাম অর্থাৎ ৪২ গ্রাম খাওয়া উচিত। এটি আপনার স্বাস্থ্যের উপর কোন বিরূপ প্রভাব ফেলবে না। কিন্তু এর মাত্রা পার করলে আপনার নানা রকম সমস্যা হবে।
  • অতিরিক্ত চীনা বাদাম খেলে শরীরে অতিরিক্ত ক্যালরি যোগ হতে পারে, তাই পরিমাণ মতো খাবেন।
  • গরমের সময় অতিরিক্ত চীনা বাদাম খেলে পেটে গ্যাস এবং বুক জ্বালা হতে পারে।
  • আপনার যদি অন্য কোন সমস্যা থাকে, এবং আপনি যদি অন্য কোন রোগের জন্য ওষুধ সেবন করে থাকেন তাহলে চিনা বাদাম না খাওয়াই ভালো। কারণ চিনা বাদামের ম্যাগনেসিয়াম ওষুধের কাজকর্ম দ্রুত করা থেকে আটকায়।

চিনা বাদামের উপকারিতা থাকার পাশাপাশি অপকারিতা ও রয়েছে এজন্য আপনি পরিমাণ মতো চীনা বাদাম খাবেন। কোন কিছুই কখনো মাত্রার অধিক ভালো না। আর যাদের এলার্জির সমস্যা রয়েছে তারা বিশেষ করে চীনা বাদাম একটু এড়িয়ে চলবেন। 

ভেজা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা

বাদাম শরীরের জন্য বেশ উপকারী এ বিষয়ে আমরা সকলেই জানি। ভেতর থেকে শক্তি যোগাতে এবং শরীরকে চাঙ্গা করতে বাদাম খুবই উপকারী। যারা নিয়মিত শরীর চর্চা করেন, তারা নিয়মিত বাদাম খান।তবে আপনি যদি মাত্রা অতিরিক্ত বাদাম খান তাহলে আপনার হজমের সমস্যা হতে পারে। আর এই হজমের সমস্যা দূর করতে, আপনি বাদাম ভিজিয়ে রেখে খেতে পারেন। 

আরো পড়ুনঃ  কাঁচা বাদাম খাওয়ার অপকারিতা 

ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টিবিদ্যা বিভাগের গবেষকদের করা একটি গবেষণা বলছে, ভেজানো বাদামের উপকারিতা একটু আলাদা। কাঠবাদাম ভিজিয়ে রাখলে 'লাইপেস' নামে একটি উপাদান নির্গত হয়। যা শরীরে হজমের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। কাঠবাদাম এ ফাইবার আর প্রোটিনের মাত্রা কম নয়। তাই কয়েকটি বাদাম খেলে অনেকক্ষন পেট ভর্তি থাকে। কাঠবাদাম খেলে কোলেস্টেরলের মাত্রা প্রয়োজন মত বাড়ে। এতে ফ্যাটের পরিমাণ অনেক।

বাদাম ভিজিয়ে রেখে খেলে বেশ কিছু উপকারিতা পাওয়া যায়। বাদাম ভিজিয়ে রেখে খাওয়ার উপকারিতা উপকারিতা গুলো নিজে বর্ণনা করা হলো-

  • কাঠ বাদামের মতো এমন কিছু বাদাম আছে যেগুলো বেশ শক্ত। পরিপাকের জন্য এগুলো সহজ হয় না। ভিজিয়ে রাখলে কাঠবাদাম গুলো অনেক নরম হয়ে যায়। সহজে ভাঙতেও পারা যায়। হজম করতেও কোন অসুবিধা হয় না।
  • বাদামে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফাইটিক এসিড শরীরে আয়রন, জিংক এর সঙ্গে বিক্রিয়া করে যে লবণ তৈরি করে তা খাদ্যনালীতে দ্রবীভূত হয় না। এই ফাইটিক এসিড শরীরে পেপসিন, টিপসিন উৎসেচক এর পরিমাণ কমিয়ে প্রোটিন পরিপাকেও বাধা দেয়। পানিতে ভিজিয়ে রাখলে বাদামের ফাইটিক এসিডের পরিমাণ কমে।
  • বাদামে থাকা ফেলোনিক যৌগ ট্যানিন সহজে হজম হয় না। ফলে বাদাম খেলে অনেকেই বদহজমের সমস্যায় ভুগে থাকেন। এই ট্যানিন শরীরের প্রোটিন পরিপাক জটিল করে তোলে। আগে থেকে ভিজিয়ে রাখলে বাদামের ট্রেনিং এর পরিমাণ কমে যায়।
  • সব বাদাম বেশিক্ষণ ভেজানোর দরকার পড়ে না। কাঠবাদাম খাওয়ার আগে অন্তত ১২ ঘন্টা ভেজানো উচিত। তবে আখরোট পাইন নাট বা হেজেল নাট ৮ ঘন্টা ভেজালে যথেষ্ট। কাজু বাদামের ক্ষেত্রে ৮ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখলে যথেষ্ট।

শুকনো বাদাম খাওয়ার থেকে আপনি যদি বাদাম ভিজিয়ে রেখে খান তাহলে এই উপকারগুলো আপনি বেশি পাবেন। আর বাদাম স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। আমরা অবশ্যই বাদাম খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলবো। এবং আমাদের খাবারের তালিকায় ভেজানো বাদাম অবশ্যই রাখবো।

সকালে কাঁচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা 

যারা নিয়মিত  সকালে কাঁচা বাদাম খান তাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান প্রবেশ করে। বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি যেমন ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, ওমেগা ৩, আয়রন, ভিটামিন-ই ইত্যাদি। কাঁচা বাদাম হাড়ের শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। , পাশাপাশি এটি মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়ায় এবং ক্যান্সারের আশঙ্কা দূর করে।

যে সকল মানুষ প্রতিনিয়ত শরীর চর্চা করেন তাদের ক্ষেত্রে কাঁচা বাদাম খুবই ভালো খাবার। বাদামের মধ্যে থাকা প্রোটিন আমাদের শরীরের মাংসের পরিমাণ বৃদ্ধি করে। শরীরচর্চা করার পর শরীরে অনেকটা প্রোটিনের প্রয়োজন হয় এবং এই প্রোটিন আমরা বাদাম থেকে পেতে পারি। তবে যাদের একটু হজমের সমস্যা আছে তাদের বেশি না খাওয়াই ভালো।

নির্দিষ্ট একটা বয়সের পর প্রায় অনেকের হাড়ের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। তখন শরীরে ক্যালসিয়ামের খুবই দরকার পরে। বাদামের মধ্যে থাকা ক্যালসিয়াম, হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে। দাঁতের ক্ষয় রোধ করতে বাদাম অনেক কার্যকারী হয়। এছাড়া কাঁচা বাদামের মধ্যে থাকা আইরন রক্তশূন্যতা দূর করে। 

আপনি যদি নিয়ম করে পরিমান মত সকালে বাদাম খান তাহলে আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে। কাঁচা বাদামের মধ্যে থাকা ভিটামিন-ই ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। বিশেষ করে যারা রক্তস্বল্পতায় ভুগেন, তারা কাঁচা বাদাম খাবেন এতে বেশ কার্যকারী ফল পাবেন। এছাড়াও এই বাদামে উপস্থিত ভিটামিন-ই চুলও ভালো রাখতে সাহায্য করে।

আপনার যদি  সকালে কাঁচা বাদাম চিবিয়ে খেতে ভালো না লাগে, তাহলে আপনি কাঁচা বাদাম পিষে দুধ করে খেতে পারেন। তা না হলে কাঁচা বাদাম পানিতে ভিজিয়ে রেখে তা চিবিয়ে খান। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত কেউ যদি এক বাটি করে বাদাম খাওয়া শুরু করেন, তাহলে তা শরীরকে চাঙা তো রাখেই, সেই সঙ্গে একাধিক রোগ দূরে রাখতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

নিয়মিত সকালে কাঁচা বাদাম খেলে সেটি আরো বেশ কিছু উপকারিতা দেয় তা হলো- 
  • ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়ঃ একটি গবেষণা থেকে জানা যায়, বাদাম যদি নিয়মিত খাওয়া যায়, তাহলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি প্রায় ২০ শতাংশ কমে আসে।
  • ক্যানসার নিয়ন্ত্রণ করেঃ বাদামে ফোলিক অ্যাসিড আর ফাইটিক অ্যাসিড রয়েছে। এই দুই অ্যাসিড কোলন ক্যানসারের মতো রোগ নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে।
  • ওজন নিয়ন্ত্রণ করেঃ বাদাম নিয়মিত খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। এমনই দাবি করা হয়েছে গবেষণায়। কারণ, বাদামে কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট আর প্রোটিন থাকে যথেষ্ট মাত্রায়। যাও ওজন কমাতে সাহায্য করে।
  • মেজাজ ভাল রাখেঃ আপনি যদি দিনে একবার অন্তত বাদাম খান তাহলে আপনাকে ক্যালরির জন্য অতিরিক্ত খাবার খেতে হবে না। বাদাম খাদ্য মেজাজ হিসাবে পরিচিত। তাই মনের বিষণ্নতা দূর করে মন রিফ্রেশ করে তোলে।
  • রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণঃ বাদামে পটাসিয়ামের পরিমাণ উচ্চ মাত্রায় থাকে এবং সোডিয়ামের পরিমাণ কম থাকে। যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। সোডিয়ামের মাত্রা বেশি হলে দেহে রক্ত বৃদ্ধি পায় তখন রক্তচাপ বেড়ে যায়। এক্ষেত্রে নিয়মিত বাদাম খাওয়া উপকারি। 

বাদামের উপকারিতা সম্পর্কে কোন সন্দেহ নেই। এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ভালো একটি উপাদান। আপনি যদি প্রতিদিন সকালে কাঁচা বাদাম খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলেন তাহলে আপনার অনেক উপকার হবে। আর ইতিমধ্যে আপনারা তো জেনে গেছেন সকালে কাঁচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

SM TECHY এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url