ক্যান্সার কিভাবে হয় - ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর ১০ লক্ষণ

বর্তমান সময়ে ক্যান্সার রোগের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে। আপনি কি জানেন ক্যান্সার কিভাবে হয়, ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত রোগীর লক্ষণ সম্পর্কে কি আপনি জানেন। আপনি যদি সঠিক সময়ে ক্যান্সারের লক্ষণ গুলো জেনে নিয়ে চিকিৎসা নেন তাহলে এই মরণব্যাধি রোগ থেকে নিস্তার পেতে পারেন। 

ক্যান্সার কিভাবে হয় - ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর ১০ লক্ষণ

আমাদের কিছু অনিয়মের ফলে আমরা ক্যান্সারের মতো মরণব্যাধি রোগে আক্রান্ত হই। কিন্তু আপনি কি জানেন কি খেলে ক্যান্সার ভালো হয় বা কোন ফল ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। আপনি যদি আমাদের এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে অবশ্যই জানতে পারবেন ক্যান্সার কিভাবে হয় ও ক্যান্সারের লক্ষণ গুলো কি। সুতরাং এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

ক্যান্সার কি

প্রাণীদেহের কোষ গুলো একটি নির্দিষ্ট সময় পরপর মারা যায়। এবং তখন নতুন কোষের সৃষ্টি হয় এবং এই পুরনো কোষের জায়গা গুলো পূরণ করে। সাধারণভাবে কোষগুলো নিয়ন্ত্রণ ভাবে এবং নিয়মিতভাবে বিভাজিত হতে থাকে। কিন্তু যখন এই কোর্সগুলো কোন কারণে অনন্ত্রিতভাবে বাড়তে থাকে তখনই ত্বকের নিচে মাংসের দলা অথবা চাকা দেখা যায় একে টিউমার বা ক্যান্সার বলে।

মানুষের শরীর অসংখ্য কোষ দ্বারা গঠিত, এই কোষগুলি ক্রমাগত বিভাজিত হতে থাকে। এটি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় হয়ে থাকে। কিন্তু অনেক সময় যখন শরীরে কোন নির্দিষ্ট অংশে এর কোষের ওপর শরীরে নিয়ন্ত্রণ নষ্ট হয়ে যায় এবং কোষগুলি অনিয়ন্ত্রিতভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকে, তখন তাকে ক্যান্সার বলে।

ক্যান্সার কিভাবে হয়

মানবদেহে কোষের জিন পরিবর্তন হতে শুরু করলে ক্যান্সার শুরু হয়। এমন নয় যে কোন বিশেষ কারণে জ্বীনের পরিবর্তন হচ্ছে, এটি নিজেও পরিবর্তন হতে পারে বা অন্য কারণেও হতে পারে। যেমন তামাক, অতি বেগুনুর রশি বা বিকিরণ ইত্যাদি নেসা জাতীয় দ্রব্য খেলেও হতে পারে।

এজন্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা গেছে যে ক্যান্সার শরীরের ইমিউন সিস্টেমের কোষগুলিকে ধ্বংস করে, কিন্তু কখনো কখনো ক্যান্সার কোষগুলি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সহ্য করতে সক্ষম হয় না এবং ব্যক্তি ক্যান্সারের মতো একটি দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়। শরীরের ক্যান্সারের কোষ বাড়াতে থাকায় টিউমার অর্থাৎ এক ধরনের পিণ্ড বের হয়ে থাকে। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করলে তা পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। 

কিছু কিছু খাবার রয়েছে যে খাবারগুলো খেলে ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। আমরা অনেকেই না জেনে সেই খাবারগুলো প্রতিনিয়ত খেতেই থাকি। কিন্তু আমরা বুঝতেই পারি না এটি আমাদের শরীরের জন্য কতটা ক্ষতিকর। চলুন জেনে নেই কোন খাবার খেলে ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়-

প্যাকেটজাত খাবারঃ কাজকর্মের চাপে আমরা তাড়াহুড়ায় ইনস্ট্যান্ট নুডুলস বানিয়ে খাই। সময় বাঁচানোর জন্য এরকম চটজলদি খাবার বর্তমান বাজারে অধিক পরিমাণে পাওয়া যায়। কিন্তু আপনি কি জানেন এসব ধরনের খাবারে যে রাসায়নিক পদার্থ থাকে, তা ক্যান্সার সৃষ্টি করতে সহায়তা করে।

অধিক তেল যুক্ত খাবারঃ অতিরিক্ত ভাজাভুজি খেলেও শরীরে ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা থাকে। বিশেষ করে আলু বা মাংস খেয়ে যখন বেশি তাপমাত্রায় ডুবো তেলে ভাজা হয়, তখন অ্যাক্রিলামাইড নামে একটি রাসায়নিক যৌগ তৈরি হয়। এই রাসায়নিক যৌগটিতে কার্সিনোজেনিক উপাদান রয়েছে। এমনকি এটি দেহের ডিএনএর-ও ক্ষতি করতে পারে।

প্রসেসড মিটঃ সঠিকভাবে রান্না করা মাংস মাছ এবং ডিম শরীরের জন্য ভীষণ উপকারী। , কিন্তু বিশেষ করে মাংস যখন প্রসেস করে রাখা হয়, তা একেবারে খাওয়া উচিত নয়। কারণ প্রসেস করা মাংসে কার্সিনোজেনিক পদার্থ থাকতে পারে। সুতরাং এই মাংস খেলে পেটে ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।

পরিশোধিত খাবারঃ আমরা প্রতিনিয়ত সাদা তেলে ভেজে ময়দার লুচি খাই। ময়দা ও সাদা তেল দুটোই পরিশোধিত হয় তা ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি করে। বিশেষ করে এই ধরনের খাবার খেলে স্তন ক্যান্সার ও ডিম্বাশয় ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। তাই যতটা সম্ভব এই ধরনের খাবার কম খাওয়া। 

ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচে

আমরা সকলেই জানি যে ক্যান্সার একটি মারাত্মক রোগ। এই রোগে আক্রান্ত হওয়া মানুষ খুব কম বাঁচে। আসলে সব ক্যান্সার মারাত্মক হয় না, তবে বেশিরভাগ ক্যান্সার মারাত্মক হয়। এজন্য কারো ক্যান্সার রোগ ধরা পড়লে আত্মীয়-স্বজন সবাই চিন্তিত হয়ে পড়েন। রোগীর ক্যান্সার ধরার পর রোগীর আত্মীয়-স্বজনরা ডাক্তারের কাছে জিজ্ঞাসা করেন যে রোগী আর কত দিন বাঁচবেন।

আসলে ক্যান্সারের রোগী কত দিন বাঁচবেন তা নির্ভর করে অনেক কিছুর উপর। তার মধ্যে সবথেকে বেশি নির্ভর করে উপর ওয়ালার ওপর, হায়াত মউত সবকিছুই তো উনার হাতে। ডাক্তার তো শুধু রোগের চিকিৎসা করে থাকেন। চিকিৎসা করে দেখা গেছে অনেক রোগী ক্যান্সার থেকে মুক্তি পেয়েছে আবার স্বাভাবিক জীবন।

ক্যান্সারের ধরন, ক্যান্সার হবার স্থান, প্যাথলজিক্যাল গ্রেড, ক্লিনিক্যাল স্টেজ, চিকিৎসা ধরন ইত্যাদির ওপর নির্ভর করে বলা যায় রোগীর পরিণতি কি হতে পারে। তবে কতদিন বাঁচবে এমন কথা কোন ডাক্তার বলেন না। তবে অনেক মানুষ বলে যে আমার খালাতো ভাইয়ের ক্যান্সার হয়েছিল, ডাক্তার বলে দিয়েছে আর মাত্র ৩০ দিন বাঁচবে, যা খাওয়ার তাই খাওয়ায়ে দিন। 

কিন্তু তারপরেও আমার খালাতো ভাই পাঁচ বছর বেঁচে গিয়েছে। এসব কিছু আসলে গল্পকথা, আর মানুষ গল্পকথা শুনতে একটু বেশি পছন্দ করে। একজন ডাক্তার কখনোই আপনাকে বলবে না যে একজন ক্যান্সারের রোগী কতদিন বাঁচবে বা বাঁচতে পারে। এগুলো গল্প কথা পড়ার মোড়ে বেশি শোনা যায়, এগুলো আসলে মানুষকে একটা বিভ্রান্তের মধ্যে ফেলে দেয়।

ক্যান্সার হলে রোগী কেন মারা যায়, ক্যান্সার হলে শরীরে একটি পর গাছের মতো। শরীরের একটি স্বাভাবিক কোষ কোন কারণে কোন ভাবে পরিবর্তন হয়ে ক্যান্সার কোষে রূপান্তর হয়। তারপর এগুলোর একটা থেকে দুইটা হয়ে দুইটা, চারটা, ষোলটা, ৬৪ টা একইভাবে অসংখ্যকোষ তৈরি হয়ে টিউমার আকার ধারণ করে।

প্যাথলজিক্যালি ক্যান্সার মূলত দু'রকম- কারসিনোমা ও সারকোমা। চিকিৎসা না করলে সারকোমা রোগীরা তাড়াতাড়ি মারা যায়। শরীরের বাইরের বা ভেতরের আবরনের কোষে ক্যান্সার হয়ে যদি আবরণেই সীমাবদ্ধ থাকে তবে তাকে কারসিনোমা ইন সিটো বলা হয়। যদি আবরনের সীমানা ভেদ করে নিচের স্তরে প্রবেশ করে তখন তাকে ইনভেসিভ কারসিনোমা বলে।

ইনভেসিভ কারসিনোমা লসিকা ও রক্তনালি দিয়ে শরীরের অন্যান্য অঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে। এই অবস্থাকে মেটাস্টাসিস বলা হয়। কার্সিনোমা ইন সিটো অবস্থায় ক্যান্সার ধরা পড়লে আবরণসহ ক্যান্সারের অংশটুকু ফেলে দিলে ক্যান্সার শরীর থেকে চলে যায়। অর্থাৎ কারসিনোমা রোগী মুক্তি পেয়ে যায় ক্যান্সার থেকে।

ক্যান্সার কোষ দেখে চিনতে পারেন প্যাথলজি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারগণ। শরীরের বিভিন্ন রকমের কোষ আছে যেগুলোকে মাইক্রোস্কোপ দিয়ে দেখে চেনা যায়। স্বাভাবিক কোষ ক্যান্সার কোষে রুপান্তর হলে অন্য রকম হয়ে যায় বা চেনা স্বাভাবিক কোষের মতো নয়। সাভাবিক কোষের কাছাকাছিও হতে পারে অথবা অচেনা চেহারারও হতে পারে।

যতোই অচেনার দিকে যাবে তার উপর ভিত্তি করে প্যাথলজিস্টগণ গ্রেড নির্ণয় করে থাকেন ১ থেকে ৪ পর্যন্ত। গ্রেড ১ হলো স্বাভাবিক কোষের কাছাকাছি এবং গ্রেড ৪ হলো অচেনা বা সবচেয়ে বেশি ক্যান্সার কোষ থাকা। গ্রেড যতো বেশি হবে রোগীর পরিনতি ততো খারাপ হবে। তত তারাতাড়ি রোগ ছড়িয়ে পড়বে।

কি খেলে ক্যান্সার ভালো হয়

একটি মরণব্যাধি রোগ, ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগী খুব কম পরিমাণে বাঁচে। আমাদের কিছু বদ অভ্যাসের জন্য আমাদের এই রোগ হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। তবে কিছু খাবার রয়েছে যে খাবারগুলো আমরা যদি প্রতিনিয়ত খেতে পারি তাহলে এই রোগ প্রতিরোধ করে। চলুন তাহলে জেনে নেই কোন কোন খাবারের রোগ প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে-

টমেটোঃ ক্যান্সার প্রতিরোধ করার জন্য টমেটো অত্যন্ত কার্যকারী। কারণ টমেটোর মধ্যে রয়েছে লাইকোপিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে বেশ ভূমিকা রাখে।

কমলাঃ কমলা লেবুও ক্যান্সার প্রতিরোধে বেশ ভূমিকা রাখে, কারণ কমলায় থাকে হাইড্রক্সিফ্ল্যাভনয়েড। এটি স্তন ও ফুসফুস ক্যান্সারের কোষ ধ্বংস করতে সহায়তা করে।

কলাঃ কলা একটি ঋতু নিরপেক্ষ ফল, যা আমরা সারা বছর পাই। মানব শরীরের জন্য কলা বেশ উপকারী। সেলেনিয়ামের সক্রিয় যৌগের এক শক্তিশালী উৎস হচ্ছে এই ফল। রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে মজবুত করার পাশাপাশি ক্যান্সারের কোষ বিনষ্ট করতে কলা ভূমিকা রাখে।

বেদানাঃ বেদানায় রয়েছে এলাজিক অ্যাসিড। এই এলাজিক অ্যাসিড শরীরে ক্যান্সারের জন্য দায়ী যৌগকে নিষ্ক্রিয় করে ও ক্যান্সার কোষ বৃদ্ধি বন্ধ করে। আপনি যদি সুস্থ থাকতে চান তাহলে নিজে বেদানা খান এবং আপনার ফ্যামিলির সকলকে খাবার জন্য উৎসাহী করুন। 

বাদামঃ বাদাম ভিটামিন ই এর সবথেকে ভালো উৎস। ভিটামিন ই সমৃদ্ধ চীনা বাদাম কোলন, ফুসফুস, যকৃত এবং অন্যান্য ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। সকালে কিংবা বিকালে আপনি বাদাম খেতে পারেন। এছাড়াও বাদামের আরো কি কি উপকারিতা রয়েছে কখন খেতে হয়, সে সম্পর্কে আমাদের এই ওয়েবসাইটে একটি আর্টিকেল লেখা রয়েছে, আপনি চাইলে সেটি পড়তে পারেন।

হলুদঃ হলুদের মধ্যে বিদ্যামান সবথেকে সক্রিয় একটি উপাদান 'কারকিউমিন'। এটি দেহের প্রদাহজনিত সমস্যা বিরোধী এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উভয় হিসাবে কাজ করে। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মানব দেহের টিস্যুর মধ্যে প্রবেশ করে ভেতর থেকে দেহকে ক্যান্সার প্রতিরোধী করে তোলে।

আপেলঃ কলার মতো আপেলও সারা বছর পাওয়া যায়। আকলের মধ্যে থাকা প্রোসায়ানিডিনস ক্যান্সার প্রতিরোধে বেশ কার্যকর। এজন্য প্রতিদিন একটি করে আপেল খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

কালো আঙ্গুরঃ কালো আঙ্গুরে থাকা রেসভেরাট্রল উপাদান ক্যান্সারের ঝুঁকি কমিয়ে সামগ্রিক ভাবে সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। আপনি যদি প্রতিদিন চার থেকে পাঁচটি কালো আঙ্গুর খাওয়ার অভ্যাস করেন তাহলে সেটি আপনার দেহের জন্য অনেক উপকারী হবে।

ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর ১০ লক্ষণ

ক্যান্সারের লক্ষণ গুলি সাধারণত ক্যান্সারের ধরন এবং ক্যান্সার কোথায় অবস্থিত তার ওপর নির্ভর করে।অনেক গবেষণা এবং চিকিৎসা করে দেখা গেছে যে ক্যান্সার রোগীর কিছু লক্ষণ অনুভব করা যায়।একজন ক্যান্সার রোগের মধ্যে সবথেকে বেশি দশটি লক্ষণ দেখা যায়। যে দশটি লক্ষণ দেখা যায় তা হল-

  • হঠাৎ ওজন কমে যাওয়াঃ কোন কারণ ছাড়া যদি শরীরের ওজন কমে যায় তাহলে শরীরের কোন রোগ বাসা বেধেছে। গবেষণায় দেখা গেছে অনেক ক্যান্সার রোগীর শরীরে ওজন কমে যায়। শরীরের ওজন কমে গেলে দেরি না করে ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন। বর্তমানে প্রযুক্তির দ্বারা ক্যান্সারের চিকিৎসা করা হয়। যদি সঠিক সময়ে চিকিৎসা নেওয়া হয় তাহলে বাঁচার সম্ভাবনা থাকে।
  • জ্বর, রাতে ঠান্ডা লাগাঃ কয়েকদিন পর পর অর্থাৎ ঘন ঘন জ্বর হওয়া ক্যান্সারের লক্ষণ। কারণ ক্যান্সার হলে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। এই কারণে শরীরে বিভিন্ন রকমের রোগ হয়। তার মধ্যে জ্বর একটু বেশি হয়। এজন্য দেরি না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
  • দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি অনুভব হবেঃ দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি অনুভব করা ক্যান্সারের একটি বিশেষ লক্ষণ। আপনি যদি দীর্ঘ সময় ধরে ক্লান্ত অনুভব করেন তাহলে এটা অনেক রোগের লক্ষণ হতে পারে। আবার এটা ক্যান্সারের লক্ষণও হতে পারে। ব্লাড ক্যান্সার হলে মূলত এ লক্ষণ বেশি দেখা যায়। যদি আপনার শরীরে ক্লান্তি অনুভব হয় দীর্ঘ সময় ধরে, তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।
  • অস্বাভাবিক মাংসপিণ্ড দেখা দিবেঃ আপনি যদি আপনার শরীরে কোন অংশে অস্বাভাবিক মাংসপিণ্ড দেখতে পান, বা জমাট দেখতে পান তাহলে বুঝে নিবেন এটি ক্যান্সারের লক্ষণ। এবং এটি দেখতে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আপনি চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। এ মাংসপিণ্ড দেখা দেওয়া ক্যান্সারের একটি লক্ষণ।
  • শরীলের দীর্ঘদিনের ব্যথাঃ আপনার শরীরে যদি দীর্ঘদিন ধরে ব্যাথা হয় তাহলে আপনি বুঝে নেবেন এটি একটি ক্যান্সারের লক্ষণ। কেননা কোন কারণ ছাড়া যদি শরীরে দীর্ঘদিন ধরে ব্যথা হয় এবং সেই ব্যথা যদি ওষুধ না খেয়ে কমে তাহলে ভাববেন আপনার শরীরে কোন রোগে আক্রমণ করেছে। এমনটা ভাব বুঝতে পারলে আপনি ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করবেন।
  • ত্বকের পরিবর্তন দেখা দেয়ঃ ত্বকের ক্যান্সার ছাড়াও আরো কিছু ক্যান্সার রয়েছে যাতে আক্রান্ত হলে ত্বকে পরিবর্তন দেখা দিতে পারে। এর লক্ষণ ও উপসর্গের মধ্যে রয়েছে, ত্বক কালো হয়ে যাওয়া, ত্বক ও চোখ হলুদ হয়ে যাওয়া বা জন্ডিস হওয়া, ত্বক লাল হয়ে যাওয়া অর্থাৎ চুলকানি, মাত্রা অতিরিক্ত চুলের বৃদ্ধি। আপনি যদি আপনার শরীরে এগুলো লক্ষ্য করেন তাহলে অবশ্যই ভালো ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করবেন।
  • রক্তপাতঃ ক্যান্সারের ক্ষেত্রে প্রাথমিক অবস্থায় কিংবা তার ছড়িয়ে পড়ার পরে অস্বাভাবিক রক্তপাত হতে পারে। কাশির সাথে রক্তপাত ফুসফুসের ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। আবার অন্যদিকে যদি মলের সাথে রক্তপাত হয় তাহলে এটি মসয় বা মলদ্বারের ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। এনডোমেট্রিয়াম বা জরায়ুর আবরণে সার্ভিক্যাল ক্যান্সারের কারণে যোনিপথে অস্বাভাবিক রক্তপাত হতে পারে। এছাড়া মূত্রের সাথে রক্ত পড়লে সেটি মূত্রাশয় বা কিডনি ক্যান্সারের কারণে হতে পারে। স্তনবৃন্ত বা স্তনের বোটা থেকে রক্ত-মিশ্রিত তরল বের হলে সেটি স্তন ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।
  • প্রায়ই মাথা এবং মেরুদণ্ড ব্যথা হওয়াঃ মাইগ্রেনের কারণে অনেকেই মাথা ব্যথায় ভোগে থাকেন। ঠান্ডা লেগেও অনেকের মাথাব্যথা হয়। কিন্তু একটানা অতিরিক্ত মাথা ব্যথা হওয়া ভালো লক্ষণ নয়। আপনার যদি অনিয়মিত মাথা ব্যাথা হতে থাকে তাহলে আপনি অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। কারণ অতিরিক্ত মাথা ব্যাথা ব্রেন ক্যান্সারের লক্ষণ। ঠিক একই ভাবে মেরুদন্ডে অনিয়মিত ব্যথা হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।
  • শরীরের চামড়ার পরিবর্তন হওয়াঃ চামড়ায় ছোট ছোট দানা হওয়া কিংবা শরীরের চামড়ার মাঝে মাঝে রঙের পরিবর্তন কোনো কারণ ছাড়াই জখমের মতো দাগ হওয়া সবই ক্যান্সারের লক্ষণ। এসব দাগ কিংবা পরিবর্তন যদি আপনি আপনার শরীরের লক্ষ্য করেন তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।
  • খাবার খাওয়ার সমস্যাঃ হঠাৎ করে খিদে কমে যাওয়া, খাবারের প্রতি অরুচি, খাবার খেলে পেট ব্যথা করা, বা খাবার যদি গিলতে সমস্যা এসব কিছুই ক্যান্সারের লক্ষণ। আপনি যদি এই লক্ষণ গুলো আপনার মধ্যে দেখতে পান। তাহলে কখনোই এগুলোকে এড়িয়ে যাবেন না। অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।


সবশেষে বলা যায় যে ক্যান্সার একটি মরণব্যাধি রোগ। এ রোগ থেকে খুব কম মানুষ বাঁচে। আপনি যদি এই রোগ থেকে বাঁচতে চান তাহলে অবশ্যই সতর্ক থাকবেন। আর আপনি যদি এই পোস্টটি পড়ে থাকেন তাহলে আপনি অবশ্যই জানতে পারবেন যে ক্যান্সার প্রতিরোধে কোন কোন ফল খেতে হয়।একজন ক্যান্সার রোগীর কি কি লক্ষণ দেখা যায় তা আপনি বিস্তারিত ভাবে জানতে পারবেন।



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

SM TECHY এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url