পেঁপে খাওয়ার উপকারিতা - পেপের ক্ষতিকর দিক

পেঁপে খাওয়ার উপকারিতা, কাঁচা পেঁপে খাওয়ার উপকারিতা, পেপের ক্ষতিকর দিক, খালি পেটে কাঁচা পেঁপে খেলে কি হয়, গর্ভাবস্থায় কাঁচা পেঁপে খেলে কি হয়, পেঁপে সিদ্ধ উপকারিতা এ বিষয়গুলো সম্পর্কে আজকে এ পড়তে বিস্তারিত আলোচনা করব। এগুলো সম্পর্কে জানতে যদি আপনি আগ্রহী হন তাহলে আজকের এই পোস্টটি আপনার জন্য। 

পেঁপে খাওয়ার উপকারিতা - পেপের ক্ষতিকর দিক

পেঁপে খাওয়ার উপকারিতা, পেপের ক্ষতিকর দিক এ বিষয়গুলো সম্পর্কে হয়তো আমরা অনেকেই জানি আবার অনেকেই জানিনা। আপনি একজন বাঙালি হিসেবে আপনার এই বিষয়গুলো সম্পর্কে জানা অবশ্যই আপনার প্রয়োজন। এ বিষয়গুলো সম্পর্কে সবকিছু জানতে আজকের এই পোস্টটি সম্পন্ন মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

পোস্ট সূচিপত্রঃ পেঁপে খাওয়ার উপকারিতা - পেপের ক্ষতিকর দিক 

পেঁপে খাওয়ার উপকারিতা

পেঁপে, একটি অতি পরিচিত নাম বাঙালিদের কাছে। আপনি একজন বাঙালি হয়ে পেপে খাননা বা পেঁপে চিনেন না, যদি এই কথা বলেন তাহলে সেটা হবে একটি হাস্যকর কথা। পেঁপে কাঁচা অবস্থায় সবজি হিসেবে খাওয়া হলেও পাকলে এটি একটি ফল হয়ে যায়। এটি খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনি পুষ্টিকর। তবে পেঁপের উপকারিতা সম্পর্কে বেশিরভাগ মানুষই জানেন না।

যদিও পেঁপে আগে শুধু মৌসুম কালে পাওয়া যেত, কিন্তু এটি ঋতু নিরপেক্ষ হওয়ার কারণে এখন এটি সারা বছরই পাওয়া যায়। অনেকেই রয়েছেন যারা তাদের খাদ্য তালিকা পাকা পেঁপে যুক্ত করে রেখেছেন। তারা আসলে পেটের উপকারিতা সম্পর্কে জানে বলেই, পেঁপে কে খাদ্য তালিকায় যুক্ত করে রেখেছেন।

চিকিৎসক হোক কিংবা পুষ্টিবিদ সকলেই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় পাকা পেঁপে রাখার পরামর্শ দেন।কারণ আপনি যদি পাকা পেঁপে দিয়ে আপনি দিনের শুরুটা শুরু করেন তাহলে পুরোটা দিন আপনি অনায়াসে কাজ করতে পারবেন। চলুন তাহলে আর দেরি না করে জেনে নেই পেঁপে খাওয়ার উপকারিতা-

হজম শক্তি বৃদ্ধি করেঃ পেঁপেতে পাপাইন নামের এক ধরনের এনজাইম রয়েছে যা হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। খালি পেটে পেঁপে খেলে হজম শক্তিকে আরো ভালো করে এবং সারাদিন আপনি যে ভুলভাল খাবার খাচ্ছেন তা হজম করতে সহায়তা করে।

হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়ঃ হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে প্রয়োজন ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার। পেঁপের মধ্যে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার, পটাশিয়াম এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে। আপনি যদি খালি পেটে পেঁপে খাওয়া অভ্যাস করেন তাহলে আপনার হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে, কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে, এবং স্টকের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করবে।

দৃষ্টিশক্তি ঠিক রাখেঃ চোখ ভালো রাখতে যেসব খাবার কাজ করে সেসব খাবারের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে পেঁপে। গবেষণা থেকে জানা যায় যে পেঁপে খেলে দৃষ্টিশক্তি দৃঢ় হয় বা বৃদ্ধি পায়। পেঁপের মধ্যে থাকা ভিটামিন দৃষ্টিশক্তি ঠিক রাখতে সহায়তা করে। এজন্য দৃষ্টি শক্তি ঠিক রাখতে আপনি পেঁপে খেতে পারেন।

ওজন কমাতে সহায়তা করেঃ পেঁপেতে ক্যালোরি কম কিন্তু ফাইবার বেশি, এটি ওজন কমাতে বেশ সহায়তা করে। আপনি যদি খালি পেটে পেঁপে খান তাহলে আপনার পেট অনেকক্ষণ ভরা থাকবে এবং আপনার খিদে পাবে না। আপনি যদি ডায়েট করতে চান তাহলে পেতে আপনার জন্য একটি উপযুক্ত ফল।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করেঃ পেপেতে শর্করার পরিমাণ কম থাকলেও পেপে ফাইবার সমৃদ্ধ। যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে দারুন কার্যকর। আপনি যদি সকালে খালি পেটে পেঁপে খান তাহলে আপনার পুরো দিন রক্তচাপের মাত্রা ঠিক থাকবে। আপনি যদি ডায়াবেটিস কিংবা হাই সুগার এর রোগী হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার খাদ্য তালিকার অন্যান্য ফলের জায়গায় আপনি পেঁপে রাখতে পারেন।

চুল সুন্দর করেঃ চুলের জন্য পেঁপে খুবই উপকারী। যে কারণেই পেঁপে মেশানো শ্যাম্পু বেশি ইউজ করা হয়। এছাড়াও আপনি যদি টক দইয়ের সঙ্গে পেঁপে মিশিয়ে চুলে মাখেন, তাহলে আপনার চুলের গোড়া শক্ত হবে। এছাড়াও মাথায় উকুন হলে পেঁপে ভালো কাজ করে।

ত্বক সুন্দর করেঃ পেঁপেতে রয়েছে ভিটামিন এ, যা সুন্দর এবং স্বাস্থ্যকর ত্বকের জন্য বেশ উপকারী। তাই খালি পেটে পেঁপে খেলে তা আরো ভালো রাখবে, এবং সেই সঙ্গে অকালে বার্ধক্য দেখা দেবে না। তবে পেঁপের পাশাপাশি পুষ্টিকর খাবারও ফল যোগ করতে পারেন।

সংক্ষিপ্তভাবে পেঁপের এই সাতটি উপকারিতা বর্ণনা করা হলো। এছাড়াও পেঁপের আরো বিভিন্ন উপকারিতা রয়েছে। পেঁপে যেমন সুস্বাদু এর পুষ্টিগুনো তেমনি। সুতরাং সকলেই পেঁপে খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলবেন। এতে করে আপনার কি কি উপকার হবে তা তো আপনি উপরে জেনে গেছেন।

কাঁচা পেঁপে খাওয়ার উপকারিতা

পেঁপে মূলত একটি ফল। কিন্তু কাঁচা অবস্থায় এটিকে আমরা সবজি হিসেবে বিভিন্ন ভাবে খেয়ে থাকি।যেমন কাঁচা পেঁপের ভাজি করে খাই, আবার বিভিন্ন সবজির সঙ্গে তরকারি হিসেবে যোগ করে রেঁধে খায়। এছাড়াও আমরা অনেকে কাঁচা পেঁপে মেখে খাই।

পেঁপে সুস্বাদু খাবার হওয়ার পাশাপাশি কাঁচা পেঁপে রয়েছে বেশ স্বাস্থ্য উপকারিতা। এজন্য বিশেষজ্ঞরা একে সুপার ফুড হিসেবেও আখ্যায়িত করে থাকেন। শরীরকে সুস্থ রাখতে এবং শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে পেঁপে সহায়তা করে। সেই সাথে গ্যাসটিক এবং বদ হজমের সমস্যা দূর করে।

চলুন জেনে নিয়ে কাঁচা পেঁপে খাওয়ার উপকারিতা-

পেটের জন্য উপকারীঃ পেঁপে পেটের জন্য অনেকটা ওষুধের মত কাজ করে। এটি পেটের বদহজম দূর করে এবং পেটকে পরিষ্কার রাখে। আর পেঁপের মধ্যে থাকা ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য, পাইলস, ডায়রিয়া ও গ্যাসের সমস্যা দূর করতে বেশ সহায়তা করে।

পুষ্টির উৎসঃ সম্প্রীতি এক গবেষণা থেকে জানা যায়, কাঁচা পেপেতে গাজর ও টমেটোর চেয়েও অনেক বেশি ক্যারটিনয়েডস পাওয়া যায়। তাই এটি আমাদের শরীরের ক্যারটিনয়েড ও ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করে পুষ্টির উৎস হিসেবে কাজ করে।

এনজাইমের উৎসঃ কাঁচা পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে এনজাইম থাকে। পেঁপেতে কেমোপেইন, প্যাপিন, পাইপাইন ও সাইমোপ্যাপিনের মতো উপাদান থাকে। এগুলো কার্বোহাইড্রেট ও প্রোটিন চর্বি দূর করতে সাহায্য করে। এজন্য কাঁচা পেঁপে অবশ্যই পরিমাণমতো খাবেন।

ত্বকের জন্য বেশ উপকারীঃ কাঁচা পেঁপে ত্বকের মৃত কোষ দূর করতে বেশ কার্যকারী। আর পেঁপে তে থাকা ফাইভার শরীর ভেতর থেকে পরিষ্কার করে। এজন্য পেঁপে খেলে ব্রণ ও ত্বকের নানা সমস্যা দূর করতে অনেক ভালো কাজ করে।

এ ছাড়া কাঁচা পেঁপে হাঁপানি, অস্টিও আর্থারাইটিস, গাউট, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের রোগের উপকারে এবং হার্টকে ভালো রাখতে অনেক কার্যকরী।

পেপের ক্ষতিকর দিক

পেঁপের উপকারিতা সম্পর্কে তো আপনারা ইতিমধ্যে জেনে গেছেন। তবে কোন কিছুই কিন্তু অতিরিক্ত ভালো না। ঠিক তেমনিভাবে পেঁপের কিছু ক্ষতিকারক দিক রয়েছে। চলুন তাহলে পেঁপের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেই-

চিকিৎসকদের পরামর্শ মতে, এক বছরের কম বয়সী শিশুদেরকে পেপে খাওয়ানো উচিত নয়। কেননা পেঁপেতে অনেক ফাইবার থাকে, যা ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে সমস্যার কারণ হতে পারে। কারণ শিশুরা কম পানি পান করে। এতে তাদের কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যায় ভুগতে হতে পারে। তাই কাঁচা অথবা রান্না কোন অবস্থাতেই শিশুকে পেঁপে খাওয়ানো উচিত নয়।

গর্ভবতী অবস্থায় নারীদের ক্ষেত্রে পেঁপে ক্ষতিকারক হতে পারে। চিকিৎসকরা গর্ভ অবস্থায় নারীদেরকে পেঁপে খেতে বারণ করেন। পেঁপের বীজ, শিকড় এবং পাতা গর্ভের শিশুর জন্য ক্ষতিকর। কাঁচা পেঁপেতে থাকা প্যাপেইন দেহের ঝিল্লি ক্ষতিগ্রস্ত করে। এ ছাড়াও পেঁপে ল্যাটেক্সসমৃদ্ধ, যা জরায়ুর সংকোচন, রক্তপাত এবং এমনকি গর্ভপাত ঘটাতে পারে।

যাদের শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য পেঁপে ক্ষতিকারক। পেপেতে উপস্থিত একটি এনজাইম কে অ্যালার্জেন বলে। এর অতিরিক্ত গ্রহণের ফলে শ্বাসকষ্টজনিত অসুস্থতা যেমন হাঁপানির মতো সমস্যা বাড়তে পারে।

এলার্জির সমস্যা, এলার্জিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ও পেঁপে থেকে এলার্জি হতে পারে। এটি ঘটে কারণ পেঁপেতে কাইটিনেস নামক এনজাইম থাকে। এনজাইম ল্যাটেক্স এবং এ জাতীয় খাবারের মধ্যে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ঘটাতে পারে। যার ফলে হাঁচি, শ্বাসকষ্ট, কাশি এবং চোখ পানি আসে।

পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে পেঁপেতে। তবে ভিটামিন সি অধিক পরিমাণে গ্রহণ করলে কিডনিতে পাথর হওয়ার মতো সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। ভিটামিন সি অত্যধিক গ্রহণের ফলে ক্যালসিয়াম অক্সালেট কিডনিতে পাথর সৃষ্টি হতে পারে। এমনকি এটি পাথরের আকার বাড়িয়ে তুলতে পারে। আর এতে করে প্রসাবে সমস্যা সৃষ্টি হয়।

হজমের সমস্যা বাড়ায় পেঁপে। কোষ্ঠকাঠিন্যে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সাধারণত পেঁপে খেতে বলা হয়। তবে অতিরিক্ত খেলে এতে উপস্থিতি পেটে জ্বালা-পোড়া ভাব এবং ব্যথা হতে পারে। এতে উপস্থিত প্রচুর পরিমাণে ফাইবার হজম সিস্টেমে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। গবেষণায় জানা গেছে, পেঁপে অতিরিক্ত খেলে ফোলাভাব, পেট ফাঁপা এবং বমিভাব হতে পারে।

খালি পেটে কাঁচা পেঁপে খেলে কি হয়

আমরা সকলেই ফল খেতে অনেক পছন্দ করি। আর আমরা শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে বা থাকার জন্য ফল খাই। অনেকে রয়েছে আমরা ফলের তালিকায় পেঁপে রাখি, আবার অনেকেই রয়েছে পেঁপে খায় না। তবে পেঁপে পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ একটি ফল। বিভিন্ন ভিটামিন এবং খনিজের প্রাকৃতিক উৎস থাকে পাকা পেঁপেতে।

পেঁপের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন এ, সি, ই, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম ও ফাইবার। আর এই ফলে ক্যালোরির পরিমাণও খুব কম। খেতে মিষ্টি হলেও ডাইবেটিস রোগীরা এই ফল খেতে পারেন। পেটের সমস্যায় থাকলে এই ফল বেশ উপকারী।

প্রথমত কোষ্ঠকাঠিন্যে সমস্যায় পাকা পেঁপে ভাল কাজ করে। পেঁপে ফাইবার সমৃদ্ধ, যা কোষ্ঠকাঠিন্য সারায় এবং স্বাভাবিক মলত্যাগে সাহায্য করে। সকালে খালি পেটে পাকা পেঁপে খেলে পাকস্থলি সুস্থ থাকবে এবং পেটের বিভিন্ন সমস্যাও দূর হবে। অ্যাসিডিটি ও বদহজমের সমস্যা কমাতেও সহায়তা করে এ ফল।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিদিন সকালে খালি পেটে পাকা পেঁপে খেলে শারীরিক উপকার পাওয়া যায়। তাই সবার খালি পেটে পেঁপে খাওয়ার উপকারিতা জেনে রাখা ভাল।

খালি পেটে পাকা পেঁপে খেলে ওজন কমাতে সাহায্য করে। এতে ক্যালোরির পরিমাণ খুবই কম, আর ফাইবার থাকে প্রচুর পরিমাণে। যার ফলে দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা থাকে। ঘন ঘন ক্ষুধা পায় না।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ পাকা পেঁপে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। যার ফলে বিভিন্ন সংক্রমণ এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়।

শুধু তাই নয়, প্রতিদিন সকালে খালি পেঁপে খেলে শরীর থেকে টক্সিন বেরিয়ে যায়। চুল পড়াও কমে। পেঁপের ফাইবার খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।

এছাড়াও সকালে খালি পেটে পেঁপে খেলে আপনি যে আরো বিশেষ উপকার গুলো পাবেন তা নিচে বর্ণনা করা হলো-

  • ক্যান্সারে ঝুকি দূর করে
  • ক্ষতিকারক কোলেস্টেরল কমায়
  • হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
  • চোখের দৃষ্টি শক্তি ঠিক রাখে
  • হার্ট ভালো রাখে
  • ত্বক সুন্দর করে
  • চুল মজবুত করে
  • রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে
  • হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়

এসব কিছুই পেঁপের মধ্যে থেকে পাওয়া যায়। তাছাড়া আপনি তো পেঁপের উপকারিতা সম্পর্কে উপরে ইতিমধ্যে জেনে গেছেন। সব শেষে বলা যায় ডাক্তারের পরামর্শ এবং পেঁপের বেনিফিটে দেখা গেছে পেঁপে একটি উপকারী ফল। এজন্য আপনি আপনার খাদ্য তালিকায় পেঁপে রাখতে পারেন।

গর্ভাবস্থায় কাঁচা পেঁপে খেলে কি হয়

পেঁপে তো অত্যন্ত সুস্বাদু এবং উপকারী একটি ফল। কিন্তু গর্ভাবস্থায় কি পেঁপে খাওয়া যাবে। এমন প্রশ্ন অনেকের মনে জাগে। পরীকে জিজ্ঞাসা করেন গর্ব অবস্থায় কি পেঁপে খাওয়া উচিত হবে। আমরা অনেকেই মনে করি গর্ব অবস্থায় পেঁপে খাওয়া উপকারী এইজন্য গর্ব অবস্থায় অনেকেই পেঁপে খাই।

বাড়িতে বয়স্ক লোকজন থাকলে তারা গর্ভবতী নারীকে পেঁপে খেতে নিষেধ করেন। বিশেষ করে গর্ভাবস্থার প্রথমদিকে একেবারেই খেতে বারণ করেন। এর কারণ হলো পেঁপের মধ্যে থেকে বের হওয়া সাদা দুধের মতো তরল। এই তরলের মধ্যে থাকা এনজাইমগুলো গর্ভপাতের কারণ হতে পারে।

এনজাইমগুলো পোস্টগ্র্যান্ডিনের নিঃসরণকে বাড়িয়ে জরায়ুর সংকোচন ঘটাতে পারে। এ কারণে গর্ভপাতের আশঙ্কা বেড়ে যায়।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, গর্ভবতী নারীর জন্য স্বাস্থ্যকর একটি ফল হলো পেঁপে। কাঁচা বা পাকা- কোনো ধরনের পেঁপেই পিরিয়ডের চক্রে পরিবর্তন আনে না।

তবে কাঁচা পেঁপেতে থাকা পেপেইন নামক প্রোটিওলাইটিক এনজাইম গর্ভবতীর প্রথম ত্রৈমাসিকের মধ্যে নারীর জরায়ুর সংকোচন এবং হজমের জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। তাই প্রথম তিনমাস হবু মাকে কাঁচা পেঁপে সম্পূর্ণ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়।

গর্ভাবস্থার প্রথম তিনমাস পেঁপে বা পেপাভেরিন ক্যারোটিন ভাস্কুলার চাপ বাড়াতে পারে, যা প্লাসেন্টার ভেতরে অভ্যন্তরীণ রক্তপাত ঘটাতে পারে। এ কারণেই গর্ভবতীকে গর্ভাবস্থায় পেঁপে এড়িয়ে চলতে বলা হয়।

এছাড়া আরও বিশ্বাস কয়েকটি সমস্যা হয় চলুন সেগুলো সম্পর্কে জেনে নিই-

  • পেঁপেতে উপস্থিত পেপসিন এবং পাপাইন ভ্রূণের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। পেঁপে খেলে ভ্রূণ নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও থাকে।
  • পেঁপেতে থাকে দু’টি এনজাইম। সে দু’টির প্রভাবে ভ্রূণের বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
  • কাঁচা পেঁপেতে ল্যাটেক্সযুক্ত পদার্থ রয়েছে। তা গর্ভাশয় সঙ্কোচনের কারণ হতে পারে। গর্ভাবস্থায় কাঁচা বা আংশিক ভাবে পাকা পেঁপে খেলেও তাই সমস্যা হতে পারে।
  • পাপাইনের প্রভাবে প্লাসেন্টায় রক্তক্ষরণ হওয়ার আশঙ্কাও থাকে।

এ সব কারণেই অন্তঃসত্ত্বাদের কয়েক মাস পেঁপে না খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। সুতরাং বোঝা যায় যে গর্ভবতী নারীদের জন্য পেঁপে অতটাও সুবিধার নয়। এজন্য গর্ভ অবস্থায় পেপে খাওয়া থেকে বিরত থাকাই উত্তম।

পেঁপে সিদ্ধ উপকারিতা

একটি পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ভরপুর ফল। এদিকে সবজিও বলা যায়। কাঁচা অবস্থায় এটিকে আমরা রান্না করে বিভিন্নভাবে খাই। অনেকের মনে এখন জানার ইচ্ছা যে পেঁপে সিদ্ধ করে খেলে কি উপকার পাওয়া যায়। পেঁপে সিদ্ধ করে খেলেও পেঁপের কিছু উপকারিতা পাওয়া যায় তা নিচে বর্ণনা করা হলো-

  • পেঁপে ভিটামিনের খুব ভাল উৎস। এর মধ্যে থাকে ফাইবার, কপার, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়ামের মত খনিজ উপাদান। যে কারণে পেঁপে শরীর সুস্থ রাখতেও কাজে আসে।
  • পেঁপের মধ্যে থাকে ভিটামিন এ, ই এবং সি। যা হার্ট ভাল রাখতে সাহায্য করে। কোলেস্টেরলের মাত্রা কম থাকলে হার্টও ভাল থাকে। সেই সঙ্গে রক্ত চলাচল সহজ হয়।
  • পেঁপের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। তাই রোজ ডালে পেঁপে দিয়ে খেতে পারেন।
  • পেঁপে নিয়মিত খেতে পারলে শরীরে রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়ে। কারণ পেঁপের মধ্যে থাকে ভিটামিন সি। যে কারণে ভাইরাল যে কোনও সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে পেঁপে।
  • আর্থ্রাইটিসের ঝুঁকি কমাতেও কিন্তু কার্যকরী হল পেঁপে। পেঁপেতে থাকা প্যাপাইন এর জন্য দায়ী। তাই রোজ নিয়ম করে পেঁপে অবশ্যই খান।
  • পেঁপে কিন্তু ওজন কমাতেও সাহায্য করে। কারণ পেঁপের মধ্যে কোনও ক্যালোরি নেই। তাই নিয়ম করে কাঁচা পেঁপে খেলে অনেক রকম সুবিধে পাওয়া যায়য।

সবশেষে বলা যায় যে, পেঁপে একটি অত্যন্ত উপকারী ফল এবং সেই সাথে সবজিও। আপনারা অবশ্যই আপনাদের খাদ্য তালিকায় পেঁপে যোগ করতে পারেন। তবে গর্ভবতী অবস্থায় একটু পেঁপে এড়িয়ে চলবেন। আর কম বয়সী বাচ্চাদেরকে পেঁপে একটু কম খাওয়াবেন। আর আপনি পেঁপের উপকারিতা বা ক্ষতিকারকদের সবকিছু তো সম্পর্কে ইতিমধ্যে জেনেই গেছেন। ফল খান সুস্থ থাকুন। 


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

SM TECHY এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url