মাতা পিতার প্রতি কর্তব্য রচনা - ক্লাস ৩,৪,৫,৬,৭,৮,৯,১০

মাতা পিতার প্রতি কর্তব্য রচনা, সকল ক্লাসের কথা বিবেচনা করে নিচে দুইটি রচনা বর্ণনা করা হয়েছে।এই দুটি রচনা মাধ্যমে সকল ক্লাসের ছাত্র-ছাত্রীরা উপকৃত হবে। নিচে যে দুইটি রচনা বর্ণনা করা হয়েছে তার মধ্যে একটি হচ্ছে ছোট রচনা আরেকটি হচ্ছে বড় রচনা। তুমি যদি ছোট ক্লাসের হয়ে থাকো তাহলে তোমার জন্য, আর যদি তুমি বড় ক্লাসের হয়ে থাকো তাহলে বড়টি তোমার জন্য। 

মাতা পিতার প্রতি কর্তব্য রচনা - ক্লাস ৩,৪,৫,৬,৭,৮,৯,১০


মাতা পিতার প্রতি কর্তব্য রচনা - ক্লাস ৩,৪,৫,৬,৭,৮,৯,১০

মাতাপিতার সাধনার ফল হিসেবে আমরা সুন্দর পৃথিবীর মুখ দেখতে পেয়েছি। জন্মের পর থেকে মাতাপিতা আমাদের লালনপালন করার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম ও ত্যাগ স্বীকার করেন। দশ মাস গর্ভে ধারণ করে মাতা কী আত্মত্যাগই না আমাদের জন্য করে থাকেনন তা আমরা কোনোদিনও শোধ করতে পারব না। 

আমাদের মুখে দুমুঠো অন্ন দেওয়ার জন্য আমাদের পিতামাতা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে দিনরাত পরিশ্রম করেন। আমাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য মাতাপিতা সর্বাত্মক পরিশ্রম ও সাধনা করেন। শুধু সন্তানের সুখ ছাড়া তাদের কিছুই চাওয়ার নেই। মাতাপিতার আত্মত্যাগের ঋণ আমরা কোনোদিন শোধ করতে পারব না। তবে তাদের জন্য আমাদের অনেক দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে। 

মাতাপিতা আমাদের লালনপালন করতে করতে জীবনের পড়ন্ত বেলায় অর্থোপার্জনে অক্ষম হয়ে গড়ে। তখন তাদের দেখাশোনার দায়িত্ব আমাদের নিতে হবে। মাতাপিতার সকল কথা মান্য করতে হবে। মাতাপিতা যা নির্দেশ করবেন তা মান্য করা আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। ধর্মগ্রন্থগুলোতে মাতাপিতার প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করার নির্দেশ রয়েছে। 

ইসলাম ধর্মে আছে, মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত। প্রত্যেকেরই মাতাপিতার প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করা উচিত। কিন্তু বর্তমানে কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় মাতাপিতা বৃদ্ধ হলে তাদের বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসা হয়। যে মাতাপিতা আমাদের পৃথিবীতে এনেছেন তাদের প্রতি এমন আচরণ সত্যিই ধিক্কারজনক। তাই প্রত্যেকেরই মাতাপিতাকে সম্মান করা উচিত।

মাতা পিতার প্রতি কর্তব্য রচনা

ভূমিকা: মাতাপিতা সন্তানের জন্মের উৎস ও জীবনের পথপ্রদর্শক। তাঁদের জন্য সন্তানেরা পৃথিবীতে আলো দেখতে পেয়েছে। মা তাঁর দেহের বিন্দু বিন্দু রক্ত দিয়ে গর্ভস্থ শিশুকে বড়ো করে তোলেন। ভূমিষ্ঠ হবার পর থেকে মা আপন স্তন পান করিয়ে সন্তানদের বড়ো করে তোলেন। তাঁরা আমাদের শিক্ষিত করে গড়ে তোলার জন্য সবরকম চেষ্টা করে থাকেন। 

অর্থাৎ সন্তান যাতে পৃথিবীতে একজন আদর্শ নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করতে পারে সেজন্য পিতামাতা সর্বপ্রকার চেষ্টা করে থাকেন। তাই পিতামাতার প্রতি সন্তানের কর্তব্য অসীম। মাতাপিতার সন্তুষ্টি বিধান করা সন্তানদের অপরিহার্য কর্তব‍্য।

মাতাপিতার ভালোবাসা: সন্তানের প্রতি পিতামাতার ভালোবাসা ও স্নেহ অসীম। তাঁরা সবসময় সন্তানদের মঙ্গল কামনা করেন। সন্তান অসুস্থ হয়ে পড়লে মাতাপিতাও চিন্তায় খাওয়াদাওয়া ভুলে যান। সারা রাতদিন জেগে সন্তানের শিয়রে বসে থাকেন। সন্তানকে অতি তাড়াতাড়ি সুস্থ করার জন্য সর্বপ্রকার চেষ্টা করে থাকেন। সন্তান ভূমিষ্ঠ হবার পর তারা যাতে কোনো প্রকার কষ্ট না পায় সেদিকে সর্বদা সচেতন থাকেন। তাঁরা না খেয়ে সন্তানদের মুখে অন্ন জোগান দেন। মাতাপিতার মতো শুভাকাঙ্ক্ষী পৃথিবীতে দ্বিতীয় আর কেউ নেই। -তাই মাতাপিতার আদেশ পালন করা এবং তাদের সন্তুষ্টি বিধান করা আমাদের প্রধান কর্তব্য।

মাতাপিতার প্রতি কর্তব্য: মাতাপিতার প্রতি সন্তানদের প্রথম এবং প্রধান কর্তব্য হলো তাঁদের আদেশ-নিষেধ মেনে চলা। তাঁরা সন্তানদের যেসমস্ত কাজ করতে বলবেন সেগুলো সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে হবে এবং তাঁরা যেসমস্ত কাজ করতে নিষেধ করবেন তা থেকে বিরত থাকতে হবে। সন্তানদের কথাটি অবশ্যই স্মরণ রাখতে হবে যে, মাতাপিতা সবসময় তার শুভকামনা করেন। 

সন্তানদের জীবন হোক দুঃখ-দুর্দশাময় তা তাদের কখনো কাম্য নয়। তাই মাতাপিতা সন্তানদের যেসমস্ত আদেশ-উপদেশ দেন সেসমস্ত সন্তানদের সঠিকভাবে পালন করতে হবে এবং এর মধ্যে নিহিত রয়েছে সন্তানদের ভবিষ্যৎ সাফল্য। মাতাপিতার সেবা করা সন্তানদের অবশ্য কর্তব্য। তাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়লে সঙ্গে সঙ্গে তাদের চিকিৎসার সুব্যবস্থা করতে হবে। তাদের অতি তাড়াতাড়ি আরোগ্য লাভের জন্য সব রকম চেষ্টা করতে হবে। এতে মাতাপিতা সন্তানের প্রতি অধিক সন্তুষ্ট হন। 

সন্তানদের আচার-আচরণে মাতাপিতার মনে কষ্ট হলে তারা কোনোদিন জীবনে উন্নতি করতে সক্ষম হবে না। একমাত্র মাতাপিতার সন্তুষ্টি বিধান এবং তাদের মন জয় করার মধ্যে সন্তানদের সাফল্য নির্ভর করে। আর এর জ্বলন্ত প্রমাণ বায়েজিদ বোস্তামি (র)। মাতাপিতার প্রতি অত্যধিক শ্রদ্ধা ও ভক্তি থাকায় তিনি পৃথিবীতে অমরত্ব লাভ করতে পেরেছেন। 

পিতামাতা যখন বৃদ্ধ ও অকর্মণ্য হয়ে পড়েন তখন সযত্নে সেবা করা সন্তানদের কর্তব্য। এসময় পিতামাতা সন্তানদের প্রতি অধিক নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। পিতামাতা বাল্যকালে সন্তানদের যেভাবে লালন-পালন করেন, শীত সহ্য করেও সন্তানদের গরম কাপড় প্রদান করেন, নিজে না খেয়ে সন্তানদের অন্ন জোগান দেন তেমনই মাতাপিতার বৃদ্ধ বয়সে তাঁদের সেভাবে লালন-পালন করতে হবে। 

এতে মাতাপিতা সন্তানদের প্রতি অধিক সন্তুষ্ট থাকেন। আর মাতাপিতার সন্তুষ্টিতেই আল্লাহ সন্তুষ্ট হন। পবিত্র কোরআনে উল্লেখ আছে, 'মায়ের পদতলে সন্তানের বেহেশত'। আর সেই পরম পাওয়াকে পেতে হলে অবশ্যই সন্তানদের মাতাপিতার মন জয় করে চলতে হবে।

মাতাপিতার প্রতি অবহেলার পরিণতি: অধুনা কিছু কিছু ক্ষেত্রে সন্তানেরা পিতামাতার প্রতি চরম অবহেলা করে। অনেক শিক্ষিত সন্তানও মাতাপিতার সঙ্গে রূঢ় আচরণ করে। অনেকে আবার শিক্ষা-সংস্কৃতি কিংবা তথাকথিত আধুনিক স্রোতে গা ভাসিয়ে মাতাপিতার প্রতি সামান্য দায়িত্বটুকুও পালন করে না। এ ধরনের সন্তানের মাতাপিতার শেষ পর্যন্ত বৃদ্ধাশ্রমে ঠাঁই নিতে বাধ্য হয়। 

যা সতি দুর্ভাগ্যজনক। হাদিসে বলা হয়েছে, 'যে ব্যক্তি মাতাপিতাকে সন্তুষ্ট করেনি সে জগতের মধ্যে সর্বাপেক্ষা হতভাগ্য।' মাতাপিতার অবাধ্য সন্তানের পতন অবশ্যম্ভাবী। এরূপ দৃষ্টান্ত জগতে অনেক আছে। পক্ষান্তরে যে সন্তান পিতামাতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল সে জীবনের প্রতি ক্ষেতে সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হবে।

উপসংহার: মানবসন্তানের কাছে সৃষ্টিকর্তার পরেই মাতাপিতার স্থান। আল্লাহ তালার আনুগত্য স্বীকারের পরেই মাতাপিতার প্রতি যাবর্তী কর্তব্য পালন করা সকল ধর্মেই গুরুত্ব সহকারে বলা আছে। কাজেই সন্তানদের উচিত মাতাপিতার আনুগত্য ও বশ্যতা স্বীকারসহ তাঁদে প্রতি যাবতীয় কর্তব্য পালনে ব্রতী হওয়া। তাহলে তাঁদের ইহলৌকিক ও পরলৌকিক শান্তি অর্জনের পথ সুগম হবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

SM TECHY এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url