রক্তদানের উপকারিতা - নিয়মিত রক্তদানের উপকারিতা

রক্তদান একটি মহৎ বড় গুণ। আপনি যদি স্বেচ্ছায় আপনার নিজের শরীর থেকে রক্ত দেন তাহলে সেটি হচ্ছে রক্তদান। নিয়মিত রক্তদানের উপকারিতা, রক্তদানের উপকারিতা, রক্তদানের ১০টি উপকারিতা সবকিছুই নিচে বর্ণনা করা হয়েছে। আমরা মনে করি রক্তদান করলে হয়তো আমাদের শরীর দুর্বল হয়ে পড়বে তাহলে সম্পূর্ণ ভুল। সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ুন তাহলে আপনার মন থেকে এ ধারণাটি একদম দূর হয়ে যাবে।

রক্তদানের উপকারিতা - নিয়মিত রক্তদানের উপকারিতা

রক্তদানের উপকারিতা - নিয়মিত রক্তদানের উপকারিতা

সূচনা: পারস্পরিক সম্প্রীতি আর ভালোবাসায় গড়ে উঠেছে আজকের পৃথিবী। এক মানুষ অন্যের প্রয়োজনে সাহায্য-সহযোগিতা করবে এটাই স্বাভাবিক। তাই তো আজ শাশ্বত বাণী হয়ে উঠেছে 'মানুষ মানুষের জন্য'। এরূপ প্রেক্ষাপটে রক্তদান একটি মহত্তম এবং পাশাপাশি মানবিক দায়িত্বও বটে। মৃত্যু পথযাত্রী কোনো মানুষকে রক্ত দেওয়ার মধ্য দিয়ে পৃথিবীতে বাঁচিয়ে রাখার মতো বড়ো কাজ আর কী হতে পারে?

রক্তদানে জীবন পাওয়া: মুমূর্ষু রোগী শুধু রক্তের বদৌলতে ফিরে পেতে পারে সুস্থ-স্বাভাবিক জীবন। চলৎ শক্তিহীন মানুষ খুঁজে পায় জীবন চলার অপার আনন্দ। তাই দান হিসেবে রক্তদান এক মহৎকর্ম। রক্তদানের মধ্য দিয়ে মানবদেহে জন্মে এক সঞ্জীবনী শক্তি যা তার প্রবহমান জীবনধারাকে অব্যাহত রাখতে সহায়তা করে। তাই রক্ত প্রাণশক্তির দ্যোতক।

রক্তের প্রয়োজনীয়তা: মানবদেহে রক্ত একটি অত্যাবশ্যকীয় উপাদান। মানুষের শিরা-উপশিরা আর ধমনিতে রক্ত প্রবাহ দেহকে সুস্থ এবং সতেজ রাখে। রক্তের প্রবহমান ধারা-হৃৎপিণ্ডে প্রবেশ করে বিশেষ প্রক্রিয়ায় অক্সিজেনের সরবরাহ করে যা শ্বাস-প্রশ্বাসকে সচল রাখে। এছাড়াও রক্তের মধ্যে থাকে মানবদেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী নানা উপাদান। মানবদেহে স্বাভাবিক পরিমাণের কম রক্ত থাকলে ঘটতে পারে নানা ধরনের বিপত্তি। 

এছাড়াও রোগ বা দুর্ঘটনায় রক্তক্ষরণ হলে তা পূরণ করা অত্যন্ত জরুরি। চিকিৎসাবিজ্ঞানে এ মহামূল্যবান রক্তকে চারটি ভাগে ভাগ করেছে। যথা: A, B, AB, O। সাধারণত রক্তের গ্রুপের সঙ্গে মিল রেখেই অন্য মানুষের দেহে রক্ত সঞ্চারিত করা হয়। একজন সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষ রক্তদানের মাধ্যমে বাঁচাতে পারে অনেক মানুষের জীবন।

রক্তদান প্রক্রিয়া: বর্তমানে চিকিৎসাবিজ্ঞানের অসাধারণ অগ্রগতির ফলে যেকোনো সুস্থ মানুষের দেহ থেকে ২৫০ মিলি রক্ত সংগ্রহ করা যায়। এবং সাত দিনের মধ্যেই ওই ঘাটতি পূরণ হয়। আবার সংগৃহীত রক্তে কোনো সুই মানুষের দেহ থেকে হারে সংরক্ষিত হতে পারে। সাধারণত ৬ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় ফ্রিজে কমপক্ষে ১৯ দিন থেকে ৩ মাস পর্যন্ত এ রক্ত সংরক্ষণ করা যেতে পারে এবং প্রয়োজনমতো তা অন্য মানুষের দেহে প্রবেশ করানো যেতে পারে।

রক্তদানের প্রয়োজনীয়তা: রক্তদান তথা জীবনদান। একজনের দানে অন্যজন ফিরে পায় সুস্থ-স্বাভাবিক জীবন। তাই রক্তদানের মতো মহৎ কর্ম সত্যিই বিরল। রক্তদানে আমাদের সচেতন হওয়া প্রয়োজন। বেতার, টেলিভিশনসহ সকল গণমাধ্যমে রক্তদানের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরতে হবে। এজন্য সরকারি এবং বেসরকারি পর্যায়ে পর্যাপ্ত প্রচার-প্রচারণা প্রয়োজন।

রক্তদান ক্যাম্প: জনকল্যাণমুখী নানা প্রতিষ্ঠান বছরের বিভিন্ন সময়ে রক্তদান ক্যাম্প বা শিবির খুলে রক্ত সংগ্রহ করে। এছাড়াও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরাও মানুষকে রক্তদানে অনুপ্রাণিত করে এবং নানা উৎসব-আয়োজনে রক্ত সংগ্রহ করে। আমাদের দেশে সন্ধানী, রেডক্রস বা রেড ক্রিসেন্ট এবং কোয়ান্টাম মেথড নামের বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও রক্ত সংগ্রহের মতো মহৎ কাজটি করে যাচ্ছে।

রক্তদান মহৎকর্ম: রক্তদান মানবসেবায় এক অনন্য দৃষ্টান্ত। রক্তদানের মধ্য দিয়ে একজন মানুষের জীবন বেঁচে যায়। রক্তগ্রহীতা মানুষটি পৃথিবীর রূপ, আলো, বাতাস প্রাণভরে গ্রহণ করতে পারে। রক্তের কোনো ভেদ নেই, সমস্ত জাত, ধর্ম, বর্ণ। গোত্রের সবার রক্ত লাল। তাই রক্তদানের মধ্য দিয়ে নির্মিত হয় ভ্রাতৃত্ব; গড়ে ওঠে মানবিক ঐক্য। তাই রক্তদানের মতো মহান ব্রতকে মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে।

উপসংহার: মানুষ অন্য মানুষের সহযোগিতা ছাড়া বেঁচে থাকতে পারে না। রক্তদানের মধ্যে এ সত্যের উপলব্ধি হয় যথার্থভাবে আজকের পৃথিবীতে যে অশান্তির অশনি সংকেত পাওয়া যায় তা নিবারণে রক্তদানের মতো মহৎ কর্মটিই হতে পারে অনন্য দৃষ্টান্ত।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

SM TECHY এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url