বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১ - বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১ এর মেয়াদকাল

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১ এর মেয়াদকাল, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১ এর কাজ কি, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১ উৎক্ষেপণ, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১ এর সুবিধা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১ এর ইতিহাস এই সকল বিষয় গুলো নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। সকল বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পোস্টটি সম্পন্ন মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১ - বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১ এর মেয়াদকাল


বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১

ভূমিকা: স্বপ্নের স্যাটেলাইট বজাবন্ধু-১' সবশেষে উড়াল দিল মহাকাশের পথে। মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে বিশ্বকে বিস্মিত করে বাংলাদেশ প্রবেশ করলো অভিজাত এক ক্লাবে। সমস্ত অনিশ্চয়তাকে পেছনে ফেলে মহাকাশের গৌরবময় অংশীদারিত্ব পেল বাংলাদেশ। এই উৎক্ষেপণের মধ্য দিয়ে শেষ হলো দীর্ঘ প্রতীক্ষার। নিশ্চিতভাবে বলা যায়, বলাবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের মাধ্যমে বাঙালি জাতি মহাকাশবিজ্ঞানের জগতে প্রবেশ করেছে। এর মাধ্যমে বিজ্ঞানের চর্চা ও প্রয়োগের ক্ষেত্রে এক নতুন যুগের সূচনা হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট: দেশের প্রথম স্যাটেলাইটটির ওজন ৩.৭ মেট্রিক টন। বক্তাবন্ধু-১ স্যাটেলাইটে মোট ৪০টি ট্রান্সপন্ডার থাকবে। এর মধ্যে ২৬টি কেইউ-ব্যান্ড ও ১৪টি সি-ব্যান্ডের। এটি মহাকাশে অবস্থান করবে ১৫ বছর। সর্বমোট নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল ২ হাজার ৯৬৭ কোটি টাকা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রকল্পটি বাস্তবায়নে খরচ হয়েছে ২ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা। মোট খরচে সরকারি অর্থ ১ হাজার ৩১৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা এবং বিদেশি অর্থায়ন রয়েছে ১ হাজার ৬৫২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা।

বাংলাদেশকে এই ঋণ দিয়েছে বহুজাতিক ব্যাংক এইচএসবিসি। স্যাটেলাইটটি নিজয় কক্ষপথ ১১৯.১ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে স্থাপন করা হবে। স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণের পর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনতে সময় লাগবে প্রায় ২০ দিন। এই স্যাটেলাইটে লেখা থাকবে বিবি-১ (বক্তাবন্ধু-১) এবং সেই সাথে একটি সরকারি লোগো। স্যাটেলাইট তৈরির পুরো কাজটি বাস্তবায়িত হয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) তত্ত্বাবধানে। তিনটি ধাপে এই কাজ হয়েছে। এগুলো হলো- স্যাটেলাইটের মূল। 

কাঠামো তৈরি, স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ ও ভূমি থেকে নিয়ন্ত্রণের জন্য গ্রাউন্ড স্টেশন তৈরি। বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের মূল অবকাঠামো তৈরি করেছে ফ্রান্সের মহাকাশ সংস্থা থ্যালেস অ্যালেনিয়া স্পেস। স্যাটেলাইট তৈরির কাজ শেষে গত ৩০ মার্চ এটি উৎক্ষেপণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় পাঠানো হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি মহাকাশ অনুসন্ধান ও প্রযুক্তি কোম্পানি 'স্পেসএক্স'- এর ফ্যালকন-৯ রকেট ফ্লোরিডার কেইল কেনাভেরালের লঞ্চিং প্যাড থেকে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটকে নিয়ে মহাকাশের পথে উড়াল দেয়। স্যাটেলাইট তৈরি এবং ওড়ানোর কাজটি বিদেশে হলেও এটি নিয়ন্ত্রণ করা হবে বাংলাদেশ থেকেই। এ জন্য গাজীপুরের জয়দেবপুরে অবস্থিত গ্রাউন্ড কন্ট্রোল স্টেশন (ভূমি থেকে নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা) স্যাটেলাইটটি নিয়ন্ত্রণের মূল কেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে। আর বিকল্প হিসেবে ব্যবহূত হবে রাঙামাটির বেতবুনিয়া গ্রাউন্ড স্টেশন।

স্যাটেলাইট কমিউনিকেশন: স্যাটেলাইট কমিউনিকেশন বলতে সহজ ভাষায় বলা যায়, স্যাটেলাইটের মাধ্যমে তথ্যের আদান- প্রদান। এই ব্যবস্থায় শূন্যে উৎক্ষেপিত বিভিন্ন ধরনের স্যাটেলাইট ভূপৃষ্ঠ থেকে বিভিন্ন উচ্চতায় অবস্থান করে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করতে থাকে। তথ্যের আদান-প্রদান হয় স্যাটেলাইটের সঙ্গে পৃথিবীতে স্থাপিত কোনো আর্থ স্টেশনের। কোনো ডিভাইস অথবা একটি স্যাটেলাইটের সঙ্গে অন্য আরেকটি স্যাটেলাইটের যোগাযোগ হয়। 

অর্থাৎ সাধারণভাবে যোগাযোগ বলতে আমরা প্রেরক এবং প্রাপকের মধ্যে তথ্যের আদান-প্রদানকে বুঝি। প্রতিটি স্যাটেলাইটের জন্য একটি নির্দিষ্ট সীমানা নির্ধারিত থাকে। এই সীমানার মধ্যেই স্যাটেলাইটটি ফোকাস করা এবং তার কার্যকরী ক্ষমতাও এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। এই সীমানাকে বলা হয় ফুটপ্রিন্ট। আবার কিছু স্যাটেলাইট তার সিগন্যালের দিক পরিবর্তন করে কাভারেজ অঞ্চল পরিবর্তনও করতে পারে। মহাকাশে নানারকম। স্যাটেলাইটের অবস্থান রয়েছে। 

এর মধ্যে জিইও স্যাটেলাইট একটি নির্দিষ্ট গতিতে পৃথিবীর চারপাশে ঘুরতে থাকে। এটি ভূপৃষ্ঠ থেকে ৩৬০০০ কিলোমিটার উপরে থাকে। জিইও স্যাটেলাইটের গড় আয়ু ধরা হয় ১৫ বছর। স্যাটেলাইট প্রযুক্তি ব্যবহূত হয় টিভি ও রেডিও ব্রডকাস্টিং সেই সাথে আবহাওয়ার খবরা-খবর জানতে এবং পৃথিবীর টেলিফোন ব্যবস্থার মূল কেন্দ্রবিন্দু হিসেবেও এটাকে ধরে নেওয়া হয়। জাতিসংঘের মহাকাশবিষয়ক সংস্থা ইউনাইটেড নেশনস অফিস ফর আউটার স্পেস অ্যাফেয়ার্সের (ইউএনওওএসএ) হিসাবে, ২০১৭ সাল পর্যন্ত মহাকাশে স্যাটেলাইটের সংখ্যা ছিল ৪ হাজার ৬৩৫। প্রতিবছরই স্যাটেলাইটের এ সংখ্যা ৮ থেকে ১০ শতাংশ হারে বাড়ছে।

ইতিহাস: বাংলাদেশে প্রথম স্যাটেলাইট নিয়ে কাজ শুরু হয় ২০০৭ সালে। সে সময় মহাকাশের ১০২ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশে কক্ষপথ বরাদ্দ চেয়ে জাতিসংঘের অধীনস্ত সংস্থা 'আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়নে' (আইটিইউ) আবেদন করে বাংলাদেশ। কিন্তু বাংলাদেশের ওই আবেদনের ওপর ২০টি দেশ আপত্তি জানায়। এই আপত্তির বিষয়ে এখনো সমাধান হয়নি। এরপর ২০১৩ সালে রাশিয়ার ইন্টারস্পুটনিকের কাছ থেকে বক্তাবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের বর্তমান কক্ষপথটি কেনা হয়। বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটটি বিভিন্ন ধরনের মহাকাশ যোগাযোগের কাজে ব্যবহার করা হবে। এ ধরনের স্যাটেলাইটকে বলা হয় 2 'জিওস্টেশনারি কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট'। পৃথিবীর ঘূর্ণনের সঙ্গে সঙ্গে এ স্যাটেলাইট মহাকাশে ঘুরতে থাকে।

সফলতার পথে অগ্রযাত্রা: ২০১৮ সালের মে মাসের ১১ তারিখ দিবাগত রাতে যুক্তরাষ্ট্রেরের বেসরকারি মহাকাশযান উৎক্ষেপক প্রতিষ্ঠান 'স্পেসএক্সে'র মাধ্যমে ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট বক্তাবন্ধ-১ মহাকাশে নির্দিষ্ট কক্ষপথের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। এর মাধ্যমে ৫৭তম দেশ হিসেবে স্যাটেলাইটের অভিজাত ক্লাবে যুক্ত হলো বাংলাদেশের নাম। 

স্পেসএক্স হলো মহাকাশযান ও রকেট প্রশ্নককারক এবং উৎক্ষেপণকারী মার্কিন প্রতিষ্ঠান। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় ২০০২ সালে এটি প্রতিষ্ঠা করেন ইলোন মাস্ক। প্রতিষ্ঠানটির মহাকাশযান সিরিজের নাম ড্রাগন এবং রকেট সিরিজের নাম ফ্যালকন। ফ্যালকন সিরিজের সর্বশেষ প্রযুক্তির ভার্সন-৫ রকেটে করে মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হয় বক্তাবন্ধু-১ স্যাটেলাইট।

বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের প্রক্রিয়াটি দুভাবে সম্পন্ন হয়। প্রথম প্রক্রিয়াটি হলো উৎক্ষেপণ ও দ্বিতীয় প্রক্রিয়াটি হলো- নির্দিষ্ট কক্ষপথে যাওয়ার পর্যায় পেরোনো। এই প্রক্রিয়ার জন্য সময় লাগবে ১০ দিন, যার সময় গণনা শুরু হয় ২০১৮ সালের ১১ - মে থেকে। দ্বিতীয় ধাপে কক্ষপথের নির্দিষ্ট স্থানে জায়গা করে নেবে স্যাটেলাইটটি।'

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১ নিয়ে রওনা হওয়ার প্রথম দুই ঘণ্টার মধ্যে ফ্যালকন-৯ তিনশ' কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে। প্রথম ১০ ছেসেজীব ওয়াজেদ করে ৩৫ হাজার কিলোমিটাটার মধ্যে ওয়াজেদ ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র' থেকে সেটির অবস্থান দেখা যায়। মিট অআিম কারের প্রপার বঙ্গবন্ধুপ্ত সোধোলাইর উপকক্ষপথে পৌছাতে সময় নেয় আট বৎদেখা যায় দিন। তবে এটি পুরোপুরি কক্ষপথে স্থাপিত হয়ে কার্যকরভাবে হতে সময় লাগে অন্তত দুই মাস।

বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট বহনকারী ফ্যালক অ্যাডাপ্টর। অ্যাডাপ্টরের নিচের ফ্যালকন-৯ রকেটের চারটি অংশ রয়েছে। প্রথম অংশে থাকবে স্যাটেলাইট এবং এরপর অংশটিকে বলা হয় স্টেজ-২ শেষের অংশকে বলা হয় স্টেজ-১। দূরত্বে যাওয়ার পর রকেটের স্টেজ-১ মূল অংশ হতে আলাদা হকেকেটের তো পৃথিবীর দিকে ফিরে আসবে। এরপর রকেটের স্টেজ-২ স্যাটেলাইটটিকে কক্ষপথের দিকে নিয়ে যাবে। 

একটি নির্দিষ্ট স্যাটেলাইটটি কার্যকর হওয়ার পর প্রাথমিকভাবে এর নিয়ন্ত্রণ স্টেশন। এই তিনটি স্টেশনের মাধ্যমে স্যাটেলাইটটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠার মাপেই অমিলেনিয়াম। যুক্তরাষ্ট্র, ও কোরিয়ায় অবস্থিত তিনটি গ্রাউন্ড এরপর থ্যালেস তিন বছর বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে স্যাটেলাইটাটানর কেকেবের কালনিয়া বেশ উল্লেখ্য যে, গ্রাউন্ড স্টেশনে এটি পর্যবেক্ষণ করবে। কাজ করার জন্য ১৮ জন বাংলাদেশি তরুণকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে থ্যালেস। আর হয়ে গেলে এর দেখাশোনার দায়িত্ব বাংলাদেশের ওপরই ছেড়ে দেবে ফরাসি প্রতিষ্ঠানটি।

মহাকাশবিজ্ঞানে সক্রিয় হওয়া ও বাংলাদেশ থেকে স্যাটেলাইটটি নিয়ন্ত্রণের জন্য দুটি গ্রাউন্ড স্টেশন (ভূমি থেকে নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা) তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে জয়দেবপুরের 'সজীব ওয়াজেদ ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র' স্টেশনটিই স্যাটেলাইট নিয়ন্ত্রণের মূল কেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে। আর বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা হবে রাঙামাটির বেতবুনিয়া গ্রাউন্ড স্টেশন। জয়দেবপুরের 'সজীব ওয়াজেদ ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র' গ্রাউন্ড স্টেশনে স্যাটেলাইটের সংকেত আদান-প্রদান ১০ টন ওজনের দুটি অ্যানটেনা স্থাপন করা হয়েছে। 

অসীম সম্ভাবনার প্রতীক: বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের মধ্য দিয়ে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইন্টারনেট ও টেলিযোগাযোগ সেবা সম্প্রসারণ করা সম্ভব হবে। দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবেলা ও ব্যবস্থাপনায় নতুন মাত্রা যোগ হবে। স্যাটেলাইটভিত্তিক টেলিভিশন সেবা ডিটিএইচ (ডিরেক্ট টু হোম) ও জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কাজেও এ স্যাটেলাইটকে কাজে লাগানো যাবে। এ ছাড়া এই স্যাটেলাইট স্থাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশের যেমন অন্য দেশের স্যাটেলাইট ব্যবস্থার উপর ওপর নির্ভরতা কমবে, তেমনি দেশের অভ্যন্তরীণ টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থায়ও আমূল পরিবর্তন আসবে।

বর্তমানে দেশের সরটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল, ইন্টারনেট সেবাকার্তন আসতেষ্ঠান, ডি-স্যাট প্রভৃতি সংস্থা বিদেশি স্যাটেলাইট ব্যবহার ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এ খাতে ব্যয় করছে বছরে শুধু করায় এই বিপুল অর্থ দেশেই থেকে যাবে। এ ছাড়া করছে ম্যাটেলাইট থাকায় বৈশ্বিক টেলিযোগাযোগের ক্ষেত্রে পরনির্ভরশীলতার অবসান হবে। টেলিমেডিসিন, ই-লার্নিং, রাখবে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট। মিলিয়ন ডলার। বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট যাত্রা ই-গবেষণা, ভিডিও কনফারেন্স, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ক্ষেত্রেও ভূমিকা রাখবে বঙ্গবন্ধু ১ স্যাটেলাইট। 

বাংলাদেশের নিজস্ব স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সম্প্রচার কার্যক্রম পরিচালিত হলে দেশের বেসরকারি টেলিভিশনগুলোর স্যাটেলাইট ভাড়া বাবদ ব্যয়ও কমে আসবে, যার পরিমাণ বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১৭ কোটি। বঙ্গবন্ধু ১ স্যাটেলাইটে রয়েছে ৪০ টি ট্রান্সপন্ডার। এর মধ্যে ২০টি ভাড়া দেওয়ার জন্য রাখা হবে বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যে ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনে এ স্যাটেলাইটের ট্রান্সপন্ডার বিক্রির জন্য কাজ চলছে। ফলে বৈদেশিক আয়েরাও নতুন উৎস তৈরি হবে। 

এ ছাড়া স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া যাবে উচ্চগতির ইন্টারনেট ব্যান্ডউইডথ। ফলে ব্যাডউইডথের বিকল্প উৎসও পাওয়া যাবে। এই ব্যান্ডউইডথ ব্যবহার করে দেশের দুর্গম চরাঞ্চল, হাওর এবং পাহাড়ি অঞ্চল- যেখানে ফাইবার ক্যাবল পৌছানো সম্ভব হয়নি, সেখানেও স্যাটেলাইট প্রযুক্তিতে নিরবচ্ছিন্ন টেলিযোগাযোগ সেবা চালু সম্ভব হবে। ফলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের গবেষণার। প্রয়োজনে নানা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহেও ব্যবহার করা যাবে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট। 

উৎক্ষেপণ জটিলতা: ১০ মে ২০১৮ সালে মহাকাশে যাত্রা করার একেবারে খুব কাছে এসে শেষ মুহূর্তে পিছিয়ে যায় বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের উৎক্ষেপণ। কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত ৩টা ৪৭ মিনিটে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপিত হওয়ার সময় নির্ধারিত ছিল। কিন্তু ৪২ সেকেন্ড আগে থেমে যায় এই আয়োজন। প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সের পক্ষ থেকে এক টুইট বার্তায় জানানো হয়, বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট। 

উল্লেখ্য, এর আগেও পেছানো হয়েছিল স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের সময়। গত অক্টোবর, ২০১৭ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের নির্মাণ কাজ শেষ হয়। ঐ বছরের ১৬ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের কথা থাকলেও ফ্লেরিডা উপকূলে 'ইরমা' ঝড় এবং প্রতিকূল আবহাওয়াজনিত কারণে নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয় ২০১৮ সালের ৭ মে। ঐ দিনও প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে উৎক্ষেপণ সময় পিছিয়ে গিয়ে ১০ মে স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণের পরবর্তী সময় ধার্য করা হয়। কিন্তু এই দিনও কারিগরি জটিলতার আশঙ্কা থাকায় পরবর্তী সফলভাবে উৎক্ষেপিত হয় বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট। দিন অর্থাৎ ১১ মে বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত ২টা ১৪ মিনিটে সফলভাবে উৎক্ষেপিত হয় বঙ্গবন্ধু ১ স্যাটেলাইট।

উপসংহার: বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নতুন যুগে প্রবেশ করেছে। ৫৭তম রাষ্ট্র হিসেবে মহাকাশে স্থান করে নিতে পেরে পুরো জাতি আজ গর্বিত এবং সেই সাথে বাঙালি জাতি বিশ্বের বুকে শক্ত অবস্থান করে নিয়েছে। যা একটি সমৃদ্ধ দেশ গঠনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। স্বাধীনতা অর্জনের পরে এটা বাংলাদেশের জন্য আরো এক বিশেষ বিজয়। মহাকাশবিজ্ঞানে আমাদের এ অগ্রযাত্রা বাঙালীর উন্নত শিরকে আরও উন্নত করবে। সেই সাথে আমাদের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে সহায়তা করা ছাড়াও সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভিত্তিকে আরও সু-সংহত করবে। মহাকাশবিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিশ্বে নতুন করে ডানা মেলবে বঙ্গবন্ধুর 'সোনার বাংলা'।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

SM TECHY এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url